বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সেই ভাষণ যেভাবে সংরক্ষণ করেন আমজাদ আলী
আজকের খুলনা
প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২০
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকেই যখন নিজের জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত, তখন বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ জীবন বাজি রেখে রক্ষা করেছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ফিল্ম ডিভিশনের সহকারী ক্যামেরা পারসন আমজাদ আলী খন্দকার। কালজয়ী সেই ভাষণ যারা রেকর্ড করেছিলেন, তিনি তাদের অন্যতম। ৭ মার্চ উপলক্ষে গণমাধ্যমের সাথে বলেছেন ৭৭ বছর বয়সী আমজাদ আলী খন্দকার। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রেকর্ড এবং রক্ষার সেই অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন তিনি। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ রেকর্ড করার প্রসঙ্গে আমজাদ আলী খন্দকার বলেন, ৬ মার্চ আমাদের পরিচালক আবুল খায়ের মহিবুর রহমান আমাদের ডেকে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রেকর্ড করতে বলেন। আমরা মোট সাত জন ৭ মার্চের ভাষণ রেকর্ড করেছিলাম। যার মধ্যে আমি আর মমিন সাহেব দুজনে একটি ক্যামেরা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রেকর্ড করি। রউফ সাহেব এবং তৌহিদ আরেকটি ক্যামেরা দিয়ে রেসকোর্স ময়দানের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে উপস্থিত জনতার ভিডিও করেন। একজন সহকারী ক্যামেরাম্যান অডিও রেকর্ড করেন। আমাদের সঙ্গে দুই লাইটম্যানও ছিল।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ রেকর্ড শেষে রাতে আমরা অফিসে আসি। ভাষণের রেকর্ড করা ফিল্ম অফিসে রাখি। আমাদের অফিসে লোক ছিল না। এফডিসি থেকে ফিল্ম প্রিন্ট করে আনতে হতো। তখন বঙ্গবন্ধুর নামে কোনো কিছু, কোথাও লেখা যেত না। তাই আমরা কৌশল করে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ভিডিও সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, নির্বাচন, অথবা অন্য কোনো ডকুমেন্টারির নাম দিয়ে গোপনে এফডিসি থেকে ভিডিও প্রিন্ট করে আনতাম এবং চিহ্ন দিয়ে রাখতাম কোনটাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভিডিও আছে।
বঙ্গবন্ধুর ভাষণের রেকর্ড সচিবালয় থেকে যেভাবে ভারতে নিয়ে যাওয়া হলো, সেই স্মৃতি হাতড়ে আমজাদ আলী খন্দকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর অনেক ঘটনা ঘটে গেল। বঙ্গবন্ধুকে আটক করা হলো। ২৫ মার্চের পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঙালির ওপর আক্রমণ করলো। সবাই যে যার মত পালাতে লাগল। ১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল খায়ের সাহেব আমাকে ডেকে বলেন, আমজাদ তোমাকে এখনই একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ঢাকার বাইরে যেতে হবে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ছবি নিয়ে। তিনি আমাকে একটি ট্রাংক কেনার জন্য টাকা দিলেন। আমি সদরঘাট থেকে কালো রঙের ৪২ ইঞ্চি একটা ট্রাঙ্ক কিনে আনলাম। ট্রাংকের ভেতর বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ছবি এবং ৭ মার্চের ভাষণ ভর্তি করলেন। তখন আমি বাসায় গিয়ে বাবাকে বলে এলাম, ঢাকার বাইরে যাচ্ছি অফিসের কাজে। কয়েক দিন দেরি হবে যেন চিন্তা না করে।
বাবাকে বলে আসার পর খায়ের সাহেব আমাকে তার রুমে নিয়ে গেলেন। এরপর তিনি আমার হাত ধরে ঝাঁকি দিয়ে বললেন, আমজাদ! আল্লাহাফেজ। খায়ের সাহেবের চোখগুলো তখন অনেক বড় বড় মনে হচ্ছিল। তিনি ভেবেছিলেন আমি হয়তো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে মারা যেতে পারি।
তখন সচিবালয়ের প্রতিটা গেটে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পাহারায় ছিল। শুধু সেকেন্ড গেটে সার্জেন্ট ফরিদ নামে একজন বাঙালি অফিসার ছিলেন। সেকেন্ড গেট দিয়ে সে সময় গাড়ি সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকতে পারত, কিন্তু বের হতে পারত না। সার্জেন্ট ফরিদকে তখন বলা হলো আমরা এই কাজ করবো, আমাকে একটু বের করে দিয়েন। তখন উনি বলেন, আপনি আমাকে ইঙ্গিত দিলে আমি আপনাকে বের হওয়ার ব্যবস্থা করে দেব। আমি তখন পরিচিত কয়েকজনকে বললাম, আমাকে একটু এগিয়ে দিয়ে আসতে। কিন্তু তারা শুধু ট্রাংকটা বেবিট্যাক্সিতে উঠিয়ে দিল, কেউ আমার সঙ্গে গেট পর্যন্তওেএলো না। আমি সার্জেন্ট ফরিদকে ইশারা দিতেই তিনি পল্টনের দিক থেকে যে গাড়িগুলো আসে, সেগুলোকে হাতের ইশারায় বন্ধ করে দিয়ে আমার বেবিট্যাক্সিকে সিগন্যাল দিয়ে সচিবালয় থেকে বের করে দিলেন।
প্রেসক্লাবের উল্টো পাশে আমেরিকান সেন্টারের কাছে এসে দেখি ট্রাকের ওপরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ফিতা লাগানো মেশিনগান তাক করে বসে রয়েছে। আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে সেনাবাহিনীর সামনে দিয়েই পার হলাম। কার্জন হলের পাশ দিয়ে চকবাজার হয়ে সোয়ারীঘাটে পৌছালাম। সোয়ারি ঘাটে একজন কুলিকে দিয়ে ট্রাংক নৌকায় তুললাম। এরপর জিনজিরা বাসস্ট্যান্ডে যাই। সেখানে দেখি মানুষ জান বাঁচাতে এদিক সেদিক পালাচ্ছে। রাস্তায় দেখলাম অনেক মানুষকে মেরে ফেলে রাখা হয়েছে বিভিন্ন স্থানে।
জিনজিরা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছাতেই দেখি একটি বাস ছেড়ে যাচ্ছে। আমি তখন বাসের পিছনে হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে থাপ্পড় দিলাম। ড্রাইভার তখন আমাকে দেখে বাসটি থামায়। ড্রাইভার আমাকে হাতের ইশারায় বাসের ছাদে উঠতে বলল। আমার ভিতর তখন ভয় কাজ করছে যে, আমার পিছনে কেউ রয়েছে কিনা। ভয়ে ভয়ে বক্সগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে নামলাম। এরপর যাব কিসে? দেখি রাস্তায় কোনো যানবাহন নেই। তখন এক ঘোড়াওয়ালাকে দেখে বললাম, বাবা আমাকে একটু নিয়ে যেতে পারবা। এরপর ঘোড়ার পিঠে ট্রাংক রেখে আমরা দুইজন দুই পাশ থেকে ট্রাংক ধরে হাঁটতে লাগলাম। এভাবে প্রায় ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার গেলাম। নিরাপত্তার ভয়ে নৌকায় যাইনি।
দোহার থানার জয়পাড়া গ্রামের মজিদ দারোগার বাড়িতে ট্রাংক রাখি। মজিদ দারোগাকে খায়ের সাহেব আগে থেকেই বলে রেখেছিলেন। সেদিন আমি আমার নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভাবিনি। নিজের পরিবার-পরিজন বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানদের কথাও ভাবিনি। শুধু দেশ এবং বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি এ কাজটি করেছিলাম। খায়ের সাহেব আমাকে খুঁজতে খুঁজতে দোহারে এসে পৌঁছান।
এরপর আবার যখন দোহার থানায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পৌঁছে যায়, তখন খায়ের সাহেব নিরাপত্তার জন্য দোহার থেকে আরও ভিতরে চরকোষা গ্রামের অমেদ খাঁ এবং দানেশ খাঁ নামের দুই ভাইয়ের বাড়িতে ধানের গোলার ভেতরে ট্রাংকটি লুকিয়ে রাখেন। এরপরের দিন খায়ের সাহেব ভারতে চলে যান।
ভারতে গিয়ে খায়ের সাহেব ইন্ডিয়ান হাই কমিশন এবং মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন, ধানের গোলা থেকে ট্রাংকটি মুক্তিবাহিনীর মাধ্যমে ভারতে নিয়ে যান। মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ভাষণের ভিডিও ক্যাসেট ভারতেই ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর খায়ের সাহেব দেশে ফিরে আসার সময় বঙ্গবন্ধুর সেই ৭ মার্চের ভাষণও সঙ্গে নিয়ে আসেন।
এভাবেই আমজাদ আলী খন্দকার, আবুল খায়ের মুহিবুর রহমানসহ অনেকের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রক্ষা পেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর সেই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। যে ভাষণের মাধ্যমে তিনি বাঙালিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রেরণা জুগিয়েছিলেন। যে ভাষণ আজ শুধু বাঙালি জাতির নয়, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ।
- মধ্যরাত থেকে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা
- ১১ বছর পর আরেক বাংলাদেশির এভারেস্ট জয়
- দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন: মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে প্রচারণা
- এসএমই মেলা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
- দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- প্রধানমন্ত্রীর থেকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার নিলেন ৭জন
- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সাধ্যমত চেষ্টা করছে: প্রধানমন্ত্রী
- সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই: পাটমন্ত্রী
- মেট্রোরেলের ভাড়ার উপর ভ্যাট আরোপ অযৌক্তিক: ওবায়দুল কাদের
- কোনো দল নয়, বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশবাসী: ভোট কুশলী প্রশান্ত
- তেরখাদায় চেয়ারম্যানপ্রার্থী আবুল হাসান মুসাল্লীর নির্বাচনী জনসভা
- আশা জাগাচ্ছে বায়ুবিদ্যুৎ
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর ৮৫ ভাগ কাজ শেষ
- মূল্যস্ফীতি হ্রাসে ব্যাংক থেকে ঋণ কমাতে চায় সরকার
- সাত জেলায় ৩০০ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন হচ্ছে ফ্রিপ প্রকল্প
- বাংলাদেশে নতুন জলবায়ু স্মার্ট প্রাণিসম্পদ প্রকল্প চালু যুক্তরাষ্ট
- তথ্য দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩ জন মুখপাত্র নিয়োগ দেওয়া হয়েছে
- অস্বস্তি কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মোড়
- এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা উঠে যাচ্ছে
- ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা দূর ৫০০ একর খাসজমি বরাদ্দ
- আজ জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
- কর আদায়ে বহুতল ভবন নির্মাণে আগ্রহী এনবিআর
- যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
- কেএনএফ নারী শাখার প্রশিক্ষক গ্রেপ্তার
- বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভনে নারী খেলোয়াড়দের ধর্ষণ করতেন নিউটন
- স্মার্ট দেশ গড়ার মাধ্যমে এসডিজির অভীষ্ট অর্জন
- সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হলেই সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার: নির্বাচন কমিশনার
- মূল্যস্ফীতি হ্রাসই লক্ষ্য
- আম নিতে চায় রাশিয়া-চীন
- সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসক শেখ হাসিনা :কাদের
- বগুড়ায় সিনেমা হলে টিকিটের সঙ্গে বিরিয়ানি ফ্রি
- স্কুলছাত্রের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে গর্ভবতী শিক্ষিকা
- ইসরায়েলের ড্রোনগুলো ‘বাচ্চাদের খেলনার মতো’: ইরান
- খুলনায় বাসে তল্লাশি, ১২ স্বর্ণের বারসহ যুবক আটক
- তাপদাহ নিয়ে যা জানালেন হিট অফিসার
- ট্রেনে ঢাকা থেকে মাত্র তিন ঘণ্টায় খুলনা, ভাড়া ৫৫০ টাকা
- ভোট দিতে একসঙ্গে ঢালিউডের ‘তিন কন্যা’, জানালেন প্রত্যাশা
- কয়রায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নীরব প্রশাসন
- বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
- স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর আত্মহত্যা
- জাতীয় শিক্ষাসপ্তাহে প্রফেসর আলতাফ হোসেন শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত
- আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারপতি
- কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা
- তেরখাদায় আবুল হাসান মুসাল্লির নির্বাচনী উঠান বৈঠক ও গণ সংযোগ
- প্রচণ্ড গরমে লাইভ সংবাদে জ্ঞান হারালেন পাঠক
- খুলনায় ওয়ান শুটার গানসহ আটক ১
- গণতন্ত্রে না ফিরলে বিলুপ্ত হবে বিএনপি: কাদের
- সারাদেশে ইন্টারনেটে ধীরগতি, ঠিক হতে লাগবে ১ মাস
- যে গ্রামে প্রবেশ করা যায় কিন্তু কিছু ছোঁয়া যায় না
- বাগেরহাটে ভ্যানচালকের ছুরিকাঘাতে অটোচালক নিহত