• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের খুলনা

বিদ্যুতের সাশ্রয়ে সিলিকন সার্কিট

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০১৯  

পৃথিবীতে সর্বাধিক প্রাপ্ত মৌলগুলোর মধ্যে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে সিলিকন। এটি প্রকৃতিতে খুব কম পরিমাণে বিশুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। মূলত বালুর মধ্যে লুকিয়ে থাকে এই সিলিকন। আর গ্রহসমূহে থাকে সিলিকনের অক্সাইড বা সিলিকেট আকারে। পৃথিবীর ভূত্বকের প্রায় ৯০ শতাংশ সিলিকেট যৌগে গঠিত। ১৭৮৭ সালে বিজ্ঞানী অ্যান্টনি ল্যাভয়েশিয়ে প্রথম সিলিকন শনাক্ত করেন। ১৮২৪ সালে বিজ্ঞানী বার্জেলিয়াস মৌল হিসেবে সিলিকন আবিষ্কারের কৃতিত্ব অর্জন করেন। আর এবার ভারতীয় বিজ্ঞানী বিদ্যুতের সাশ্রয়ে সিলিকনের সার্কিট তৈরির দিশা দেখাচ্ছেন। অয়ন কর্মকার নামের এই বাঙালি বিজ্ঞানীর মতে, উচ্চমাত্রার রেডিও-তরঙ্গের সার্কিট তৈরির কাজে সিলিকন ব্যবহার করা গেলে বিদ্যুতের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। তার গবেষণা ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণা-সংক্রান্ত সাময়িকীতে।

গবেষকদের মতে, এখন সবাই খুদে সার্কিট চাইছেন। কারণ সার্কিট ছোটো হলে যন্ত্রের আকারও ছোটো হবে। যন্ত্র চালানোর ক্ষেত্রে শক্তিও কম খরচ হবে। এর ফলে সাশ্রয় হবে বিদ্যুতের। অয়ন কর্মকার ২০০৬ সালে যোগ দেন ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন বা ইসরোয়। বর্তমানে চণ্ডীগড়ের ‘সেমি-কন্ডাক্টর ল্যাবরেটরি’র অ্যাডভান্স মাইক্রো অ্যান্ড ন্যানো সিস্টেমস ডিভিশনে কর্মরত। কেন্দ্রীয় মহাকাশ দপ্তর, তথা ইসরোর অধীন এই গবেষণাগারে মাইক্রো-ইলেকট্রনিকস-সংক্রান্ত গবেষণা হয়।

অয়ন জানিয়েছেন, এখন যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ছোটো ধরনের ‘সার্কিট’ ব্যবহূত হয়। ‘ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন’ এবং ‘আলট্রা লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন’ প্রযুক্তির সার্কিটে সিলিকনের ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বা মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগে সিলিকনের তৈরি সার্কিট ব্যবহার করা যায় কি না, তা নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।

অয়ন কর্মকারও সেই চিপ তৈরির রাস্তা খুঁজছেন। তিনি জানান, উচ্চ কম্পাঙ্কের যোগাযোগের ক্ষেত্রে সার্কিট তৈরিতে এবার সিলিকন ব্যবহার করা যেতে পারে। এত দিন পর্যন্ত সিলিকন উচ্চ কম্পাঙ্কের সার্কিটে ব্যবহারের অনুপযোগী ছিল। কিন্তু গবেষণায় প্রমাণিত, ওই পদার্থের রেজিস্টিভিটি বা রোধক্ষমতা বদল করে তাকে মাইক্রোওয়েভ বা মিলিমিটার ওয়েভে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা গিয়েছে। এই প্রযুক্তিকে বলা হয় ‘সি-আরএফ’ (এসআই-আরএফ)।

অয়ন কর্মকার জানালেন, বাড়ির আলো, পাখা, এসির স্বয়ংক্রিয় ব্যবহার, নিরাপত্তা, চিকিত্সা পরিষেবাসহ নানান ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ইন্টারনেট প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, যাকে ‘ইন্টারনেট অব থিংস’ গোত্রে ফেলা হয়। ৫-জি নেট পরিষেবা, টেরাহার্জ প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর সার্কিটের প্রয়োজন, যা সিলিকনের মাধ্যমেই প্রস্তুত করা সম্ভব। আর সেটি করা গেলে বিদ্যুতের ব্যবহার অনেকাংশেই কমে আসবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা