• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

জুমার দিন উত্তম পোশাক পরার ফজিলত

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২৪  

সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন বলা হয় জুমার দিনকে। এ দিনের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল ও আদবের মধ্যে গোসল করাও অন্তর্ভুক্ত। এ দিন জুমার নামাজের প্রস্তুতি হিসেবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জামা পরিধান করা সুন্নত।

এদিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি উত্তম পোশাক পরা এবং দ্রুত জুমার নামাজে উপস্থিত হওয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর ফজিলত বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করে, সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করে, জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়, নির্ধারিত নামাজ আদায় করে, ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে তার এই আমল আগের জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব ছোট পাপ মোচন হবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৩)

জুমা ছাড়াও যেকোনো নামাজে পূত-পবিত্র হয়ে, সতেজ ও প্রফুল্ল মনে নামাজে দাঁড়ানো উচিত। কারণ নামাজ হলো বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সাক্ষাৎস্বরূপ। তাই মহান প্রভুকে হাজিরা দিতে পরিপাটি হয়ে, উত্তম পোশাক পরা উচিত। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান! প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা (সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ) গ্রহণ করো।’ (সুরা আরাফ: ৩১)

সুতরাং সামর্থ্য অনুযায়ী যত ভালো কাপড় পাওয়া যায়, তা পরিধান করা উত্তম। তবে পুরোনো কাপড় পরাতেও দোষ নেই। তা যেন পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন হয় সেদিকে খেয়াল রাখা ভালো। অহংকার আসে এমন কাপড় পরিধান করা বাঞ্ছনীয় নয়। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৩৩)

আবার উত্তম পোশাক মানেই অহংকার নয়।। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এক লোক বলল, কোনো লোক চায় তার পোশাক উত্তম হোক, তার জুতা সুন্দর হোক। রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, অবশ্যই আল্লাহ সুন্দর, সুন্দরকে ভালোবাসেন। অহংকার হলো- সত্যকে না মানা, মানুষকে অবজ্ঞা করা।’ (সহিহ মুসলিম: ১৪৭)

তবে, টাখনুর নিচে কাপড় পরা অহংকারের আলামত। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহংকার বশে তার লুঙ্গি মাটির সাথে টেনে নিয়ে বেড়াবে, কেয়ামত দিবসে আল্লাহ তায়ালা তার দিকে তাকাবেন না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৬৬৫)

টাইট প্যান্ট নয়, পায়জামা পরিধান করাই উত্তম। এটি সতর ঢাকার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাসুল (স.) একবার একটি পায়জামা ক্রয় করেন। কিন্তু সেটি তিনি পরিধান করেছেন কি না এ ব্যাপারে মতানৈক্য আছে। তবে সাহাবায়ে কেরাম হুজুর (স.)-এর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে পায়জামা পরিধান করতেন। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৩৩)

এমন টুপি ব্যবহার করা সুন্নত, যা মাথার সঙ্গে লেগে থাকে। টুপির রং সাদা হওয়াও সুন্নত। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৩০) পাগড়ি বাঁধাও সুন্নত। সব সময় পাগড়ি বেঁধে রাখতে পারলে ভালো। আবার শুধু নামাজের সময়ও বাঁধা যায়। পাগড়ি সাদা বা কালো রঙের হওয়া উত্তম। (মুসলিম: ১/৪৩৯) পাগড়ি তিন হাত, সাত হাত, ১২ হাত পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। (ফয়জুল বারি: ৪/৩৭৫)

সব পোশাক ঢিলেঢালা হওয়া উচিত। যেসব পোশাকে সতরের কাঠামো দৃষ্টিগোচর হয়, তা দিয়ে পোশাকের সুন্নত আদায় হয় না। (আপকে মাসায়েল: ৭/১৬৫)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাসাধ্য সুন্দর পোশাক পরে জুমার নামাজে শরিক হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা