• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

দূর্গা উৎসবে প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে ভাষ্করা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০২৩  

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। উপজেলা জুড়ে চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দূর্গা উৎসব উৎযাপনের প্রস্তুতি। এ উপজেলায় ৬০টি মন্দিরে দূর্গা পূজা উদযাপিত হতে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর নজরদারির পাশাপাশি প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, সারাদেশের ন্যায়  দিঘলিয়া উপজেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পূজা আর মাত্র কয়েক দিন পর শুরু হতে যাচ্ছে। আর এ উৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন সাজে সাজানো হচ্ছে উপজেলার ৬০ টি মন্দির ও আশপাশের এলাকা। মন্দিরে মন্দিরে দূর্গা উৎসব উপলক্ষে প্রতিমা তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভাষ্করা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও দিঘলিয়া উপজেলায় প্রতিটি মন্দিরে চলছে খড়কুটো আর কাদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরীর কাজ। প্রতিমা কতটা সুন্দর করা যায় এ নিয়ে মন্দিরে মন্দিরে প্রতিযোগিতা চলছে।

মন্দিরের পাশাপাশি উপজেলার ফরমাইশখানায় বাড়িতে বসেও চলছে মৃৎশিল্পীদের প্রতিমা তৈরির কাজ। এ সকল প্রতিমা তৈরির পর নৌকা বা ট্রলারে করে নিয়ে যায় খুলনার বিভিন্ন এলাকায়। শুধু প্রতিমা নয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই মহামিলনকে ঘিরে তৈরি করছে নানা ধরনের মৃৎশিল্প। খুলনাঞ্চলে ফরমাইশখানার মৃৎশিল্পীদের তৈরি এ মৃৎশিল্পের যেন জুড়ি নেই। তাইতো দেশের প্রত্যন্তাঞ্চল থেকে নৌকা বা ট্রলারে করে নিয়ে যায় মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস। খুলনা, দৌলতপুর, মহেশ্বরপাশা, ফুলতলা, রূপসা, তেরোখাদা, যশোর, নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাটির তৈরি রঙ্গীন খেলনার জুড়ি নেই। এ কারণে ফরমাইশখানার মৃৎশিল্পের কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে।

প্রতিমা তৈরীর কাজে লিপ্ত শিল্পীরা বলেন, আর মাত্র কয়েক দিন পরেই এই ধরাধামে দুর্গা মায়ের আবির্ভাব ঘটবে এরই মধ্যে শেষ করতে হবে এই প্রতিমা তৈরির কাজ।

এখন খড়কুটো আর কাদামাটি দিয়ে প্রতিমার অবকাঠামো তৈরি করছি। এরপর চোখ, নাক, মুখ, হাত-পাসহ বিভিন্ন অঙ্গ তৈরি করে পূর্ণাঙ্গ রূপে আনতে হবে এবং রঙের আবরণে সাজসজ্জা দিয়ে পূর্ণাঙ্গরূপে সাজিয়ে তুলতে হবে প্রতিমাকে। তারপরই পূজারী পূজার আয়োজন করবেন এবং শুরু হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের উৎসবের ঘনঘটা। মন্দিরে মন্দিরে বেজে উঠবে শারদীয় দূর্গা উৎসবের ডামাডোল। শুরু হবে পূজার নানা দিনের নানা আয়োজন। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠুন কুমার দাস  বলেন, সরকারী সহযোগিতা ও প্রশাসনের সহয়তা পেলে তাদের ধর্মীয় উৎসব বেশ ধুমধামের সাথে পালন করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।

দিঘলিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সৌমিত্র দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে জানান, ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এবার শারদীয় দূর্গা উৎসব সকলের সহযোগিতায় সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হবে।

দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি শিববাড়ি মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রমেশ দাস, সহ-সভাপতি প্রদীপ দে, সাধারণ সম্পাদক শিপুল দাস ও কোষাধ্যক্ষ উৎপল রায় এ প্রতিবেদককে জানান, প্রতি বছর আমরা সরকারি সাহায্য পেয়ে থাকি এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না। আমাদের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী  ও সেনহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমান আমাদের মন্দিরে সাহায্য দিয়েছেন । প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর ভূমিকায় থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এবার পূজা শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে নির্বিঘ্নে  তাদের দূর্গা পূজার উৎসব উৎযাপন করতে পারে এবং কোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে জন্য পুলিশ, আনসার ও গ্ৰাম পুলিশের সমন্বয় তিন স্তর  বিশিষ্ট নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে । প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়াও নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক  ননস্টপ সার্ভিস চালু রাখা হয়েছে । 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা