• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

আদিবাসী প্রবীণের মাথা গোঁজার ঠাঁই গুঁড়িয়ে দিল বন কর্মচারিরা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১০ মার্চ ২০১৯  

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গান্ধিগাঁও গ্রামের শেফালী রাণী (৯০) এক অসহায় আদিবাসী বিধবা প্রবীণ। তার মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু গুড়িয়ে দিয়েছে বন বিভাগের কর্মচারিরা। ফলে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাকে।

 

জানা গেছে, অভাবের তাড়নায় অতি কষ্টে দিনানিপাত করে আসছিলেন শেফালী রাণী। ৩ মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। স্বামী মারা যায় এক যুগ আগে। মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে মৃণাল কোচকে নিয়ে অভাব অনটন আর দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে চলছে তার সংসার। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন শেফালী রাণী। কিন্তু জীবিকার তাগিদে তাকে করতে হচ্ছে জীবন যুদ্ধ।

পরের গরু পালন করে কোন রকমে চলে তার সংসার। মাথা গোঁজার ব্যবস্থা না থাকায় এক উন্নয়ন সংস্থা তাকে একটি টিনের দোচালা ঘর করে দেয়। বন বিভাগের ৫ শতাংশ জমির ওপর ঘরটি নির্মান করা হয়েছিলো। ওই ঘরেই গরু পালনের পাশাপাশি বসবাস করে আসছিলেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, ‘শত শত একর জমি জবর দখলে থাকলেও সেদিকে দৃষ্টি নেই বন কর্মচারিদের। ওই বাড়িটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য তাগিদ দেয় তারা। এক পর্যায়ে গজনী বিটের বন প্রহরী মুস্তাফিজুর রহমান তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। নিরুপায় হয়ে একটি গরু বিক্রি করে ২৫ হাজার টাকা দেয় মুস্তাফিজুরকে। তারপরও শেষ রক্ষা হলো না ঘরটির। ১৩ ফেব্রুয়ারি বুধবার বন কর্মচারীরা শেফালীর ঘরটি গুড়িয়ে দেয়। ঘরের টিনগুলো নিয়ে যাওয়া হয় গজনী বিট অফিসে!’

শেফালী রাণী তার অবর্ণনীয় দুঃখ, দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিলেন না! হাত দিয়ে ইশারা করে খোলা আকাশের নিচে বসবাসের দৃশ্য দেখান তিনি। আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘সারা জীবন নৌকায় ভোট দিয়েছি। নৌকায় ভোট দেওয়ায় কি আমাদের অপরাধ? আমরা যাবো কোথায়?’

শেফালী রাণী জীবনের শেষ প্রান্তে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এ ব্যাপারে মোস্তাফিজুরের সঙ্গে কথা হলে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

 

গজনী বিট কর্মকর্তা শাহ আলম ঘরটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘরটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।’

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা