• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

শরণখোলায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে ভাসছে সহস্রাধিক মানুষ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০১৯  

শরণখোলায় বগী গ্রামে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তিন দিন ধরে জোয়ারের পানিতে ভাসছে পাঁচ শতাধিক পরিবারের সহস্রাধিক মানুষ। অনেক পরিবারের রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার রাতে পুর্ণিমার ভরা জোয়ারের প্রবল স্রোতে বলেশ্বর নদীর প্রায় ১০০ মিটার ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে যায়।

এ ঘটনায় চরম দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। বর্তমানে ওই এলাকায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বেড়িবাঁধ নির্মানের কাজ চলছে।

সরেজমিনে ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাঁধ ভেঙ্গে নদীর জোয়ারের পানি প্রবল বেগে লোকালয়ে ঢুকে পুরো গ্রাম সয়লাব হয়ে গেছে। বসতঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্ম ও রান্নাবান্না করতে পারছে না। গবাদি পশু নিয়েও তারা পড়েছেন বিপাকে।

বগী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রিয়াদুল পঞ্চায়েত বলেন, ‘মানুষ জোয়ারের পানিতে ভাসছে। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বাড়িঘরে পানি ওঠায় শতাধিক পরিবারের রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে। জোয়ারের সময় লোকালয় পানিতে ডুবে এবং ভাটার সময় পানি থাকে না। চায়নার সিএইচডাব্লিউই নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ভাঙনপ্রবণ বগী এলাকায় বেড়িবাঁধের কাজ না করে কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করছে। ফলে বগী এলাকার কয়েক হাজার মানুষ তাদের সহায় সম্বল নিয়ে দিন দিন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।’

বগী গ্রামের রতন হাওলাদার, এমদাদুল হক, মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম হাওলাদার (৭০), শায়সের আলী (৬০), আ. জলিল হাওলাদার (৬৫), সুফিয়া বেগমসহ দুর্ভোগের শিকার বগী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ শুক্রবার রাত ১২টার দিকে তারা ঘরের মধ্যে পানি দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সারারাত ঘুমোতে পারেননি তারা। গবাদি পশুগুলো আশপাশের উঁচু জায়গায় নিয়ে রেখেছেন। রান্নাবান্না করতে না পারায় বাজার থেকে শুকনা খাবার কিনে খেতে হচ্ছে তাদের।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘বগী এলাকা বারবার ভাঙছে। কিন্তু, ঠিকাদারদের সেদিকে কোনো গুরুত্ব নেই। এর আগেও বেশ কয়েকবার এখানকার বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা নামমাত্র রিং বাঁধ দিয়ে তাদের দায় সারেন।’

তিনি বলেন, ‘বাঁধ নির্মানের আগে এখানে নদী শাসন করা দরকার। ভাঙন রোধ হলে পরবর্তীতে বাঁধ তৈরি করলে সেটি টেকসই হবে। অন্যথায়, বাঁধ নির্মাণ করলে তা কোনো কাজে আসবে না।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিইআইপি প্রকল্পের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম মুঠোফোনে বলেন, ‘শিগগিরই ওই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। এখানে রিং বাঁধ দিলে তা কোনো কাজে আসবে না। এ ছাড়া প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় নতুন করে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।’

 

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিংকন বিশ্বাস বলেন, ‘বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা