• বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

ডুমুরিয়ায় নিষিদ্ধ গাইড বই বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ চরমে !

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

চলতি শিক্ষা বর্ষের শুরুতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সরকার নিষিদ্ধ ঘোষিত নোট- গাইড ও সহায়ক পাঠ্য পুস্তক কেনা-বেচা নিয়ে পুস্তক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সাথে স্থানীয় খুচরা পুস্তক ব্যবসায়ীদের দ্বন্দ্ব এখন চরমে। ওই সকল বইয়ের প্রকাশকরা তাদের বই বিক্রি করতে নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করে আসলেও আইন অমান্য করে অবৈধ বই বিক্রি করবেন না বলে পুস্তক ব্যবসাী সমিতির বুধবারে অনুষ্ঠিত জরুরী সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

জানা গেছে, সরকার ১৯৮০ সালে নোট বই নিষিদ্ধ করণ আইন দ্বারা দ্বিতীয় শ্রেনী হতে অষ্টম শ্রেনি পর্যন্ত সকল পাঠ্য পুস্তকের নোট-গাইড, সহায়ক বই ছাপা,ক্রয়- বিক্রয়,মজুদ অবৈধ ও বে-আইনী ঘোষনা করেছে। কিন্ত দেশের এক শ্রেনির অসাধু পুস্তক ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ ঘোষিত বই প্রকাশ করে অসাধু শিক্ষক নেতা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা দপ্তরের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকা ঘুষ, বিভিন্ন উপঢৌকন দিয়ে ম্যানেজ করার বিনিময়ে অস্বাভাবিক মুল্যের নিম্ম মানের অবৈধ নোট- গাইড, সহায়ক বই সমুহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের কিনতে বাধ্য করে থাকে।

চলতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত বই সমুহ কিনতে বাধ্য না করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করে পরিপত্র জারি করে। গত ২০শে জানুয়ারী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত পত্র দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌছানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া সম্প্রতি সরকারের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি এম,পি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ নোট- গাইড প্রকাশ ও ক্রয়-বিক্রয় বন্ধে কড়া হুশিয়ারী দিয়েছেন।

তবুও থেমে নেই অসাধু শিক্ষক, পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতাদের কর্ম তৎপরতা। পাঞ্জেরী পাবিলেকশ, লেকচার পাবলিকেশন, জুপিটর পাবলিকেশন, অনুপম প্রকাশনী, ক্যাপ্টেন পাবলিকেশনসহ অন্তত অর্ধশত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ ম্যানেজ করে শিক্ষার্থী/ অভিভাবকদের বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিগত বছরগুলির ন্যায় চলতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ৬৫টি নিম্ম মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ডুমুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে ৬ষ্ঠ হতে নবম শ্রেনি পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত সহায়ক পুস্তক (বাংলা ব্যাকরণ ও রচনা, ইংরেজি গ্রামার নোট-গাইড বই) মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে পাঠ্য তালিকা ভুক্ত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ বই ক্রয় করতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরন করেছে। পাঞ্জেরী পাবলিকেশন, লেকচার প্রকাশনী, অনুপম প্রকাশনীসহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত বই সমুহ ডুমুরিয়া উপজেলায় পাঠ্য তালিকা ভুক্ত করা হলেও স্থানীয় খুচরা পুস্তক ব্যবসায়ীরা নিষিদ্ধ ঘোষিত ওই সকল বই ক্রয়-বিক্রয় বর্জন করার ঘোষনায় বিপাকে পড়েছে বই প্রকাশক ও শিক্ষক নেতারা। শিক্ষার্থীরা বইয়ের তালিকা নিয়ে বইয়ের দোকান গুলোতে বই কিনতে গেলেও তা খুঁজে পাচ্ছে না। উপজেলার বইয়ের দোকান সমুহের মালিকদের কয়েক জনের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।

নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক কয়েক জন বই দোকানি জানান, চলতি বছর প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপের কারনে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার বেশ কিছু বইয়ের দোকানে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ব্যবসায়ীদের জেল- জরিমানা এবং বই জব্দ করার কারনে এবং সরকারি নির্দেশনা মান্য করতে তারা ওই সকল বই বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অন্য একটি সূত্র জানায়, স্হানীয় বই ব্যবসায়ীদের সংগঠন পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্দ ওই সকল বইয়ের প্রকাশক ও তাদের বিক্রয় প্রতিনিধিরা। তাঁরা তাদের প্রকাশিত নিষিদ্ধ ঘোষিত বই সমুহ ডুমুরিয়া উপজেলার স্কুল সমুহের শিক্ষার্থীদের কাঁধে চাপিয়ে দিতে ব্যবসায়ীদের নানা ভাবে চাপ অব্যাহত রেখেছেন। এদিকে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের অব্যহত চাপে করণীয় ঠিক করতে বুধবার বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির ডুমুরিয়া উপজেলা শাখা কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমিতির উপজেলা শাখার সভাপতি জয়ন্ত কুমার মিত্র’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন বই কোন সদস্য প্রতিষ্ঠান ক্রয়-বিক্রয় করবে না বলে সিদ্ধান্ত পুনব্যক্ত করা হয়। যদি কোন ব্যবসায়ী সমিতির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বই ক্রয়- বিক্রয় করে আইনের আওতায় পড়েন তার দায় সমিতি বহন করবে না বলে জানানো হয়। সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্যদেন সমিতির সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম, সদস্য দেলোয়ার হোসেন কবির,বিষ্নু পদ হালদার, নবদীপ দাস, জাকির হোসেন প্রমুখ।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা