• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের খুলনা

তাসকিনের আগুন ঝরা বোলিং, রংপুরের টানা দ্বিতীয় জয়

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯  

গত রোববারই বলছিলেন, সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা উজাড় করে দেবেন। এমন আত্মপ্রত্যয়ী মন্তব্যের পরেও অবশ্য সোমবার সিলেট থান্ডারের বিপক্ষে একাদশে সুযোগ মেলেনি রংপুর রেঞ্জার্সের ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদের। তবে সুযোগ পেয়েছেন আজ (মঙ্গলবার), নিজের আত্মবিশ্বাস অনুযায়ী প্রমাণও করেছেন সামর্থ্য।

মূলত তাসকিনের আগুনঝরা বোলিংয়েই টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে রংপুর রেঞ্জার্স। শক্তিশালী রাজশাহী রয়্যালসকে ৪৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে তাসকিনের রংপুর। এটি রাজশাহীর টানা দ্বিতীয় পরাজয়।

তবে এ ম্যাচের পরেও পয়েন্ট টেবিলে কোনো রদবদল আসেনি। আট ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে টেবিলের চার নম্বরেই রয়ে গেছে রাজশাহী। সমান ম্যাচে তৃতীয় জয় তুলে নিয়েও ছয় নম্বরের ওপরে উঠতে পারেনি রংপুর। তবে শেষ চারে খেলার আশা ঠিকই বাঁচিয়ে রেখেছে শেন ওয়াটসনের দল।

নিজের স্পেলের ৪ ওভারের মধ্যে একটিতে ১৫ রান খরচ করলেও, তাসকিন বাকি ৩টিতে ছিলেন মিতব্যয়ী। একইসঙ্গে তুলে নিয়েছেন ৪টি উইকেটও। অথচ টুর্নামেন্টে এর আগে খেলা তিন ম্যাচে ৬ ওভার বোলিং করে ৭৬ রান খরচ করলেও উইকেটের দেখা পাননি তাসকিন। ফেরার ম্যাচটিকে স্মরণীয় করেই দলকে জেতালেন তিনি।

নাইম শেখের ফিফটির সঙ্গে ক্যামেরন ডেলপোর্ট, লুইস গ্রেগরি, জহুরুল ইসলাম ও আলআমিন জুনিয়রদের ঝড়ো ক্যামিওতে ১৮২ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল রংপুর। জবাবে তাসকিন-গ্রেগরিদের বোলিং তোপে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানের বেশি করতে পারেনি রাজশাহী।

রান তাড়া করতে নেমে রাজশাহীর শুরুটাই ছিলো গোলমেলে। দুই মারকুটে ওপেনার লিটন দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুব ছিলেন পুরোপুরি খোলসবন্দী। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ১১ বলে ৭ রান করে আউট হন আফিফ। তাসকিন আহমেদের নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই আউট হন তিনি, মিডঅফে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরেন গ্রেগরি।

তাসকিন আঘাত হানেন নিজের পরের ওভারেও। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৯ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন লিটন ও অলক কাপালি। নবম ওভারে ফের আক্রমণে এসে তাসকিন প্রথম বলে সাজঘরে ফেরান লিটনকে। ঠিক পরের বলেই দারুণ এক ইনসুইঙ্গারের সরাসরি বোল্ড করে দেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শোয়েব মালিককে।

সে ওভারের জোড়া আঘাতেই মূলত ভেঙে পড়ে রাজশাহীর ব্যাটিং লাইনআপ। যা আর পারেনি পাল্টা জবাব দিতে। তবু খানিক লড়েছিলেন রবি বোপারা ও আন্দ্রে রাসেল। তাসকিনের তৃতীয় ওভারে ১টি করে চার-ছয়ের মারে ১৫ রান তুলে নেন বোপারা। আর রাসেল জোড়া ছক্কা হাঁকান গ্রেগরিকে।

তবে দুজনের কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। গ্রেগরির বলে আরাফাত সানির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১৯ বলে ২৮ রান করেন বোপারা। রাসেল আউট হন নাইম শেখের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে। বাউন্ডারি লাইন থেকে সরাসরি থ্রোতে রাসেলকে রানআউট করেন ব্যাট হাতে ফিফটি করা নাইম। রাজশাহীর অধিনায়ক এক চার ও দুই ছয়ের মারে মাত্র ৭ বলে করেছিলেন ১৭ রান।

নিজের শেষ ওভার করতে এসে আবারও প্রথম বলে উইকেট নেন তাসকিন। এবার তিনি ফেরান ২ বলে ০ রান করা ফরহাদ রেজাকে। এরপর তাইজুল ইসলাম ১১ বলে ৪ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি ৯ বলে ৫ রান করে কোনোমতে অলআউট হওয়া ঠেকান।

শেষপর্যন্ত তাসকিনের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৪ ওভারে ২৯ রান খরচায় ৪ উইকেট। লুইস গ্রেগরি ৪ ওভারে ২৮ রানে নেন ২টি উইকেট। কোনো উইকেট না পেলেও দুর্দান্ত বোলিং করে ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করেন মোস্তাফিজ। একটি মেইডেনও নেন তিনি।

এর আগে টস জিতে শেন ওয়াটসনের দলকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাজশাহী অধিনায়ক রাসেল। সোমবারের মতো আজকের ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পরিচয় দেন রংপুর অধিনায়ক ওয়াটসন। আউট হন ১ ছক্কার মারে ৭ বলে ৭ রান করে।

তবে আরেক ওপেনার নাইম শেখ ঠিকই ঝড়ো সূচনা করেন। ইনিংসের প্রথম ওভারে একটি করে চার ও ছয়, দ্বিতীয় ওভারে তিনটি চার এবং পরের ওভারে একটি ছয় মেরে ১৩ বলে ২৮ রানের পৌঁছে যান নাইম। কিন্তু এরপর ক্রমেই ধীর হতে থাকে তার ব্যাট।

যার ফলে আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি করতে নাইমের খেলতে হয় মোট ৪০টি বল। নাইম ফিফটি করার ঠিক পরের ওভারেই ঝড় তোলেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট। আফিফ হোসেন ধ্রুবকে পরপর তিন বলে হাঁকান ৬, ৪ ও ৬। তবে সেই ওভারের শেষ বলে ফিরতি ক্যাচে ডেলপোর্টকে আউট করে বদলা নিয়ে নেন আফিফ।

সাজঘরে ফেরার আগে ১৭ বলে ৩১ রান করেন রংপুরের আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক ডেলপোর্ট। তার খানিক পরেই ফিরে যান নাইমও। কামরুল ইসলাম রাব্বিকে ফিরতি ক্যাচ দেয়ার আগে খেলেন ৪৭ বলে ৫৫ রানের ইনিংস।

এরপর মিনি ঝড় তোলেন লুইস গ্রেগরি ও মোহাম্মদ নবী। দুজন মিলে ৩ ওভারে গড়েন ৩৬ রানের জুটি। নবী ১২ বলে ১৬ ও গ্রেগরি ১৭ বলে ২৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন।

ইনিংসের বাকি কাজটুকু সারেন আলআমিন ও জহুরুল। মাঝে অবশ্য ৩ বলে শূন্য রান করে আউট হন ফজলে মাহমুদ। অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেটে মাত্র ১৫ বলে ৩৪ রান যোগ করেন জহুরুল ও আলআমিন।

শেষ ওভারে একাই চারটি চার মারেন জহুরুল। তিনি অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ১৯ রান করে। আলআমিনের ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ১৫ রান।

রাজশাহীর পক্ষে বল হাতে ২টি করে উইকেট নেন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মোহাম্মদ ইরফান।

 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা