• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের খুলনা

নানা সমস্যায় জর্জরিত বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০১৯  

বাঁশখালীর প্রায় ৬ লক্ষাধিক লোকের একমাত্র চিকিৎসার আশ্রয়স্থল বাশঁখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নানা কারণে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একদিকে ডাক্তার স্বল্পতা অন্যদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে বহিরাগতদের উৎপাত সব মিলিয়ে এক অরাজক পরিস্থিতি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথমে ৩১ শয্যার থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা ৫১ শয্যায় রুপান্তর করা হলেও পর্যাপ্ত জনবল ও সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হয়নি বলে অভিযোগে প্রকাশ।

একদিকে বাঁশখালীর প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার আশায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় করলেও সেখানে দেখা যায় ডাক্তার স্বল্পতা ঔষধ স্বল্পতার কারণে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা পায় না রোগীরা। ডাক্তার স্বল্পতার পাশাপাশি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিতে রয়েছে পরিছন্নতা কর্মী স্বল্পতা। যার ফলে চার পাশে অসংখ্য ময়লা আবর্জনায় ভরে আছে চারপাশ। বাঁশখালীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫১ শয্যায় রূপান্তর করা হয়। রোগীর শয্যা সংখ্যার পাশাপশি অভ্যন্তরে সিট বৃদ্ধি করা হলেও সেখানে পর্যাপ্ত লাইট ফ্যান না থাকায় রোগীদের নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চার পাশের ময়লা আবর্জনার কারণে মনে হয় ভুতুড়ে পরিবেশ। তবে জনবল সংকটের কারণে এসব হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানান।

তারা বলেন, এখানে পরিছন্ন কর্মী থাকার কথা ৯ জন। আমাদের আছে মাত্র ৩ জন। তার মধ্যে একজন বয়স্ক ও অবসরে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। পৌরসভা থেকে তিনজন পরিছন্ন কর্মী দেওয়া হয়েছে তারা পর্যায়ক্রমে একজন করে দায়িত্ব পালন করে। যার ফলে প্রায় সময় চার পাশে ময়লা আবর্জনা দেখা যায়। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে থাকা দীর্ঘদিনের পুরানো এ্যাম্বুলেন্সটিও পরিবেশের ক্ষতি করছে। এক সময় চাকার জন্য পড়ে থাকা এ্যাম্বুলেন্সটি নতুন এ্যাম্বুলেন্স আসার পর একেবারেই অকেজো হয়ে যায়। নলকূপে পর্যাপ্ত পানি না উঠায় রোগীদের পানীয় জলের সমস্যায় পড়তে হয়। তাছাড়া রুমের ভিতরে অবস্থিত বাথরুমগুলো অনেকটা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

অধিকাংশ লাইট ফ্যান অকেজো থাকায় এবং বিদ্যুৎ না থাকলে জেনারেটর চালু না করায় অনেক সময় ভুতুড়ে পরিবেশ মনে হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চার পাশে নিরাপত্তা দেওয়াল না থাকার কারণে অনায়াসে যাতায়াত করে সাধারণ জনগণ। বিগত দিনে বেশ কয়েকবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চুরির ঘটনা ঘটায় অনেক ডাক্তার নিরাপত্তার অভাবে এখানে রাত যাপন করে না। তাছাড়া প্রায় সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চার পাশের লোকজন অভ্যন্তরে চলাচল করার ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে ডাক্তারসহ কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তারা।

যথানিয়মে ডাক্তারের উপস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে ডিজিটাল উপস্থিতির মাধ্যমে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হলেও বাস্তবে উপস্থিতি ভিন্ন। স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ডাক্তারের উপস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে জানতে চাইলে আরএমও ডা: তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, বহিরাগত কিছু যুবক প্রায় সময় অকারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে যাতায়াত সহ ঘুরাঘুরি করে থাকে। যার ফলে এখানে কর্মরতরা আতঙ্কগ্রস্ত থাকে সারাক্ষণ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে অবস্থিত পুকুর পাড়ে সারাক্ষণ বসে আড্ডা দেয় বহিরাগতরা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা: কামরুল আযাদ বলেন, হাসপাতালের চারপাশে বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় বহিরাগতরা এখানে এসে আড্ডা দেয় যা আমাদের নানাভাবে সমস্যা সৃষ্টি করে। পুকুরের মাছ মেরে নিয়ে যায়। এছাড়া আমাদের ডাক্তার ও পরিছন্নতা কর্মী রয়েছে কম। এসব সমস্যা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা রাখি অচিরেই তার যথাযথ সমাধান হবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা