• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে একে অপরকে দুষছেন বিএনপি নেতারা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯  


জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির আগে বিএনপির সিনিয়র নেতারা আলোচনা সভা, সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধনে আন্দোলনের বিষয়ে অনেক কথাই বলেছেন। এমনকি খালেদা জিয়ার জামিন না হলে এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিল দলটি। কিন্তু বিক্ষোভ সমাবেশ এবং মিছিল কর্মসূচির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা যাচ্ছে দলটিকে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির একদিন পরেই আন্দোলনের বিষয়ে দলটির সিনিয়র নেতাদের সুর পাল্টেছে। আন্দোলনের বিষয়ে তাদের মুখে এখন ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে। তারা বলছেন, আন্দোলনের বিষয়ে তারা কোন মন্তব্য করতে পারবেন না। এ বিষয়ে শুধু মাত্র কথা বলবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এদিকে আন্দোলনের ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, তৃণমূল অথবা অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মনে করে সিনিয়র নেতারা রাজপথে নামলে তারাও নামবে। এটা কোনো কথা হতে পারে না। কারণ আমরা যারা সিনিয়র নেতা, তাদের বয়স ৭০ বছরের উর্ধ্বে। রাজপথের আন্দোলন তো সব সময় তরুনরাই করে। অঙ্গ সংগঠনগুলো সাহস করে না নামলে আমরা কি করতে পারি। সিনিয়র নেতাদের ধারণা ছিল, অঙ্গ সংগঠনগুলো অন্তত খালেদা জিয়ার জন্য শক্ত বাধা অতিক্রম করে হলেও রাজপথে নামবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবদলের এক  কেন্দ্রিয় নেতা বলেছেন, ঝুঁকি নিয়ে আমরা রজপথে নামবো আর সকল সুবিধা ভোগ করবেন দলের বড় নেতারা। তারা আগে রজপথে নেমে পথ দেখালেই তবে আমরা নামবো। 

বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের এমন বক্তব্যে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপি অনেকটা নেতৃত্বশূণ্য হয়ে পড়েছে। যে কারনে আন্দোলন কিংবা যে কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন। এছাড়া দলটি নেতৃত্বের দ্ব›েদ্ব অনেকটা প্রেস রিলিজ নির্ভর হয়ে পড়েছে। 
শুক্রবার আন্দোলনের বিষয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এটা দলের বিষয়। তাই এ বিষয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কথা বলবেন।আন্দোলনের বিষয়ে শুক্রবার আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে একই কথা বলেছেন। 

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে বিএনপি।
এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। আমরা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি-বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা মহানগরে প্রতি থানায় থানায় বেলা দুইটার পর থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। পরের কর্মসূচি এর পরে ঘোষণা করবো। 

 

অপরদিকে বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার জামিন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হলেও রাজপথে কাঙ্খিত কোনো কর্মসূচিতে দেখাতে পারিনি বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কোন কোন অঙ্গ সংগঠনকে রাজপথে ঝটিকা মিছিল করে কর্মসূচি করলেও মুক্তিযোদ্ধা দল, কৃষক দল, তাঁতীদল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দলের কোনো নেতাকর্মীকেই দেখা যায়নি। এছাড়া দলের বেশিরভাগ সিনিয়র নেতাই ছিলেন নিষ্ক্রিয়।

বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র নেতারা কি করছেন? ঢাকায় যেসব সিনিয়র নেতা আছেন, তারা নিজেরা যদি প্রত্যেকে একশ করে কর্মী নিয়ে রাস্তায় নামে তাহলেই তো রাজপথ দখল হয়ে যাবে। কিন্তু তারা সেটা করবেন না। কারণ তারা নিজেদের রক্ষার্থে সরকারের সাথে সমঝোতা করছেন।
এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের বয়স হয়েছে এবং আমরা বৃদ্ধ হয়েছি। এখন তরুণদের সময়। তরুণেরাই সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা