• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

দাকোপে মাছ ধরতে গিয়ে টেনে নিয়েছিল কুমির, দু’দিন পর মিললো লাশ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২৩  

সুন্দরবন সংলগ্ন সুতারখালী নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কুমিরের টেনে নিয়ে যাওয়া একজন মৎস্যজীবীর লাশ পাওয়া গেছে। ঘটনার প্রায় ৩৪ ঘণ্টা পর গত ২৯ জুন ভোরের দিকে নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২৭ জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে পশ্চিম সুন্দরবনের কালাবগী ফরেস্ট স্টেশন এলাকার সুতারখালী নদীতে মাছ ধরার সময় খায়রুল ইসলাম মোড়ল (২৩) নামের ওই ব্যক্তিকে কুমির টেনে নিয়ে যায়। খায়রুল দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী ঝুলন্তপাড়া ফকিরকোনা এলাকার আরশাদ মোড়লের ছেলে।

স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুতারখালী ইউনিয়নের দক্ষিণে শেষ জনপদ কালাবগীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপগ্রাম ফকিরকোনা। গ্রামটির পাশে সুতারখালী, ভদ্রা ও শিবসা নদী আর ওপারে সুন্দরবন। সুন্দরবন সংলগ্ন সবচেয়ে কাছের জনবসতিগুলোর একটি এই ফকিরকোনা। বছর তিনেক আগে ফকিরকোনা মূল কালাবগী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ফকিরকোনায় নদীর চরের ওপরেই গাদাগাদি করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য টং ঘর। সেখানে নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা, পৌঁছায়নি বিদ্যুৎ। গ্রামের মানুষ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। বনে যাওয়া বন্ধের সময়টাতে নদীতে মাছ ধরে কোনোমতে সংসার চালান তাঁরা।

স্থানীয় মানুষ আরও বলেন, খায়রুল ২৭ জুন সন্ধ্যায় তাঁর এক ফুফুকে নিয়ে সুতারখালী নদীর তীরে খেপলা জাল দিয়ে খাওয়ার জন্য মাছ ধরছিলেন। খায়রুল জাল ফেলছিলেন। জালে পড়া মাছ পাত্রে রাখছিলেন তাঁর ফুফু বুলবুলি। হঠাৎ একটি কুমির খায়রুলকে ধরে পানির মধ্যে টেনে নিয়ে যায়। তাঁর সঙ্গে থাকা বুলবুলির ডাকচিৎকারে এলাকার লোকজন এসে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এমন সময় খায়রুলকে মুখে নিয়ে কুমিরটি নদীর চরে ওঠে। তখন কুমিরের মুখ থেকে খায়রুলকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে কুমিরটি আবারও পানিতে ডুব দেয়। কিছুক্ষণ পর আবার কুমিরটি ভেসে ওঠে। তখন আর খায়রুলকে দেখা যায়নি।

ওই এলাকার ইউপি সদস্য নিমাই মন্ডল জানান, ঘটনার পর আমরা এলাকার কম করে হলেও শ’ দুয়েক লোক নৌকা ও ট্রলার নিয়ে খোঁজাখুঁজি করেছি। এতো মানুষ আর ট্রলার-নৌকা দেখে কুমির পানির ওপর ভীষণ দাপিয়ে বেড়িয়েছে। একটা সময় কুমিরের গায়ে নোঙর লাগলে কুমিরটি পানির ওপর মুখ উঁচু করে দেয়। তখন কুমিরের মুখে খায়রুলকে দেখা যায়নি। এরপরও এলাকার মানুষ পাহারায় ছিল। ২৯ জুন ভোরের দিকে লাশ নদীতে পাওয়া যায়। কোমর ও উরুর কাছে কুমির যেখানটায় কামড়ে ধরেছিল, শুধু সেই ক্ষতই শরীরে আছে। শরীরের কোনো অংশই কুমির খেয়ে ফেলেনি। শরীরে অন্য কোনো ক্ষত নেই।
ইউপি সদস্য নিমাই মন্ডল আরও বলেন, ঘটনার বিষয়ে নৌ-পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তারা আসলে দাফন সম্পন্ন হয়। ফকিরকোনায় লাশ দাফন করার মতো তেমন জায়গা না থাকায় খায়রুলের লাশ দাফন করা হয় তাঁদের পুরোনো বাড়ি কালাবগী নদবাক্স এলাকায়।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা