• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

সৌদিতে আরো এক কিশোরীকে আটকে রেখে নির্যাতন

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০১৯  

সংসারে স্বচ্ছতা ফেরাতে ও বাবা-মা, ভাই-বোনের মুখে হাসি ফোঁটাতে দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে গিয়েছিল কিশোরী ফারহানা। চোখে ছিল বড় হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু আরব দেশে পৌঁছাতেই ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে থাকে তা। একটা সময় চোখের ঘুম হারাম হয়, ভেঙেও যায় কিশোরীর সেই স্বপ্ন।
তাকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। দেশে ফিরতে চাইলেও নিয়োগকর্তা তা হতে দিচ্ছেন না। সৌদি থেকে দালালের কাছে পাঠানো ফারহানার একটি ছবিতে তাকে নির্যাতনের অভিযোগ স্পষ্ট। শনিবার ছবিটি আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে।

মেয়েকে ফিরে পেতে দেশে আহাজারি করছেন মা রাজিয়া। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর এলাকায়। ফাহানার মা রাজিয়া গত শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনায় জগন্নাথপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনা জানার পর প্রথমে থানায় গিয়ে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা হয়। জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নব গোপাল দাস জানান, তারা অভিযোগ পেয়েছেন। যেহেতু বর্হিবিশ্বের ঘটনা, তদন্ত হবে। সে মোতাবেক কাজ করবেন তারা।

পরে ওসি নব গোপাল দায়ের করা অভিযোগের কপি দেখান এই প্রতিনিধিকে। অভিযোগে বলা হয়েছে, জগন্নাথপুর পৌরসভার আওতাধীন বাড়ি জগন্নাথপুর এলাকার বাসিন্দা জগলু মিয়ার কিশোরী মেয়ে ফারহানা বেগমকে (১৫) একই এলাকার স্থানীয় দালাল লিলু মিয়ার প্ররোচনায় চলতি বছরের মার্চে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। দেশটির রাজধানী রিয়াদে রিয়ান সেমি ফাদগাজী আবুপাদা এলাকায় ফারহানাকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছে নিয়োগকর্তা।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ফারহানাকে পরিবারের সঙ্গে যোগযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি ফারহানা সৌদির একটি মোবাইল নাম্বার থেকে দেশে ফোন করে। রাজিয়া ফোন রিসিভ করলে তার মেয়ে জানায়, লুকিয়ে সে ফোন করেছে। খুবই বিপদের মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে তাকে। কোনো ধরণের বেতন ভাতা তাকে দেওয়া হচ্ছে না। ফারহানা বলে, তাকে শীঘ্রই কোনো না কোনো মাধ্যমে দেশে ফেরাতে। কান্নারত অবস্থায় মায়ের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার পর ফোনটি কেটে যায়।

পরে ফারহানাদের বাড়ি গিয়ে তার মা রাজিয়ার সঙ্গে কথা হয় আমাদের এ প্রতিনিধির। রাজিয়া জানান, গত রোববার (২ ডিসেম্বর) তারিফ উল্লার ছেলে লিলুকে (দালাল) বিষয়টি জানান তিনি। মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলেন রাজিয়া। কিন্তু লিলু তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।
আহাজারি করে রাজিয়া জানান, লিলু তাকে বলেছেন, ‘তোমরার ফুরিরে বিদেশত পাডাইতে আমরার ২৫ হাজার টাকা খরচা হইসে। এই টেখা না দিলে তারারে ফাইতায় নায়। তারারে বৈদেশত আরও মারিব।’

ফারহানাকে সৌদি পাঠাতে লিলুর ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ টাকা তাকে ফেরত না দিলে ফারহানাকে ফিরে পাওয়া যাবে না। তাকে সৌদিতে আরও নির্যাতন করা হবে। নির্লিপ্ত অবস্থায় সেখান থেকে ফিরে আসেন রাজিয়া।
ফারহানার মা বলেন, ‘আমরার ফুরির চিন্তায় চোকত গুম নাই। তারারে ফিরিয়া ফাইতে আমি আমরার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাহাইয্য চাই।
অর্থাৎ, মেয়ের চিন্তায় তার চোখে ঘুম নেই। মেয়েকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তিনি সাহায্য কামনা করছেন রাজিয়া।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা