• বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

  • || ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের খুলনা

গৌরনদীর প্রধান ২টি সড়কের বেহাল দশা, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০১৯  

দীর্ঘ দিনেও মেরামত বা সংস্কার না করার কারণে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার প্রধান ২টি সড়কের বিভিন্ন স্থানের পিচ-খোয়া উঠে, খানাখন্দ হয়ে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ২টি হচ্ছে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড থেকে গৌরনদী বন্দর হয়ে সরিকল পর্যন্ত বিস্তৃত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা সড়ক ও বাটাজোর-সরিকল বন্দর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক।

 

সড়ক দুইটি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দুইটির বেহাল দশার কারণে প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা। এ কারণে এ সব সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন বিভিন্ন গাড়ির চালক ও যাত্রীরা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদীসহ পার্শ্ববর্তী কালকিনি, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার ৪ লক্ষাধিক বাসিন্দার যাতায়াতের মাধ্যম হচ্ছে এ সড়ক দুটি। গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড-সরিকল বন্দর সড়কটি গত ৭ বছর পূর্বে সংস্কার করা হয়েছিলো। বর্তমানে এ সড়কটির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।

অপরদিকে বাটাজোর-সরিকল বন্দর সড়কটি ৩ বছর আগে মেরামত করা হয়েছিল। এরপর সড়ক দুটি মেরামত করা হয়নি। বর্তমানে উভয় সড়কের বিভিন্ন অংশের পিচ-খোয়া উঠে গিয়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে ওইসব গর্তে পানি জমে যানবাহন চলাচল দূরের কথা জনসাধারণের পায়ে হেঁটে চলাচলও সম্ভব হয় না।

 

গৌরনদীর প্রধান ২টি সড়কের বেহাল দশা, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

খরায় ধুলাবালিতে সড়ক দুটি একাকার হয়ে যায়। সড়কের বেহাল দশার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী,মহিলা যাত্রী,বৃদ্ধ ও শিশুরা। সবচেয়ে বেশী সমস্যায় পড়েন গর্ভবতী মহিলারা। কবে নাগাদ এ দুটি সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে তার নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না কেউ। দীর্ঘদিন থেকে শুধু রাজনৈতিক নেতাদের আশ্বাষের বাণী শুনেই যাচ্ছেন এলাকাবাসী। সামনে বর্ষা মৌসুম এসে গেছে এ কারণে এলাকার জনসাধারণের মাঝে হতাশা বেড়েছে।

গৌরনদীর দিয়াসুর গ্রামের ইজিবাইক চালক আইউব আলী জানান, গৌরনদীর ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় অটো চালানো মুুুশকিল। পিংগলাকাঠি গেলে স’মিলের সামনে যাত্রী নামিয়ে খালি গাড়ি টানতে হয়।

সাকোকাঠি গ্রামের অটোবাইক চালক খোকন সরদার বলেন, ‘বাটাজোর-সরিকলের রাস্তায় অটো চালাতে গিয়ে মোর অটোর অবস্থা বারোটা বাইজা গেছে। দৈনিক যে পয়সা আয় করি তা অটো সারাইতেই চইল্লা যায়।’

চরদিয়াসুর গ্রামের অটোরিক্সা চালক ফারুক সন্যমাত বলেন, ‘রাস্তা খারাপ দেইখা অহন কেউ রিক্সায় ওঠতে চায় না। আয় রোজগার কমিয়া গেছে।’ এমন অভিযোগ অনেক চালকের।

কয়েকজন প্রবীণ যাত্রী জানান, ‘গৌরনদীর রাস্তার অবস্থা এমনি হয়েছে যে গাড়িতে উঠলে মাজা-কোমর ব্যাথা হইয়া যায়। ব্যাথার ওষুধ খাওয়া লাগে।’

খবর নিয়ে জানা গেছে, গৌরনদীর অভ্যন্তরীন প্রায় সব কাঁচা সড়কগুলো কার্পেটিং ও মেরামত করা হলেও রহস্যজনক কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ প্রধান ২টি সড়ক সংস্কারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট এলজিইডি বিভাগ। ফলে গৌরনদীর প্রধান ২টি সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াতকারী কয়েক হাজার যাত্রী এবং রোগীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

বর্তমানে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড-সরিকল বন্দর সড়কটির এমন বেহাল দশা হয়েছে যে মোটরসাইকেল নিয়েও সড়ক দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে ভূক্তভোগীরা স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর (মন্ত্রী) কাছে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দুইটি দ্রুত সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি করেছেন।

এ ব্যাপারে গৌরনদীর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন্নাহার মেরির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সড়ক ২টির বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে জানান, শুনেছি গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড-সরিকল বন্দর সড়কটির টেন্ডার প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়েছে। কিন্তু কাজ কেন শুরু হচ্ছে না তা তিনি জানেন না বলে জানান।

 

সড়কের সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে গৌরনদী উপজেলা এলজিইডি বিভাগের গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড-সরিকল বন্দর সড়কটি সংস্কারের জন্য কয়েক মাস পূর্বে প্রাক্কলন প্রস্তুত করে বরিশাল নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী সড়কটি টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান। তবে সড়কের কাজ কবে নাগাদ শুরু হবে তার নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না তিনি। অপরদিকে বাটাজোর - সরিকল বন্দর সড়কটির শেষের অংশের টেন্ডার হয়েছে বলে তিনি জানান।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা