• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে খুবির কেন্দ্রীয় মসজিদ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৪  

চোখ জুড়ানো স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য স্থাপনা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। যা কিনা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য-শোভাকে বাড়িয়ে সূচনা করেছে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের।

ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরাও মসজিদটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। প্রতিদিন ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকেও এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন মুসল্লিরা। বিশেষ করে জুমার দিন ও তারাবির নামাজে মুসল্লিদের বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

বর্তমানে মসজিদের উত্তর পাশে হাজারো সূর্যমুখী ফুল ফুটেছে। বাতাসে দোল খেয়ে ফুলগুলো যেন মুসল্লিদের মসজিদে  আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। এখানে এলে এ ফুলের  হলদে আভায় যে কেউ অনায়াসে মুগ্ধ হবেই!

খুবি সূত্রে জানা যায়, নান্দনিকতায় অনন্য খুবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ১৪ হাজার ৫শ বর্গফুট আয়তনের একতলার এক গম্বুজ বিশিষ্ট। এ গম্বুজটি খুলনাঞ্চলের সর্ববৃহৎ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আবদুল কাদির ভূঁইয়া ২০০৩ সালে এ মসজিদটির নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের তৎকালীন শিক্ষক মুহাম্মদ আলী নকী মসজিদটির প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন করেন।

পরবর্তীতে একই ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মো. মারুফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম মসজিদের পূর্ণাঙ্গ নকশার কাজ চূড়ান্ত করে।

২০১৪ সালে  মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়।

২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর জুমার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মসজিদের কার্যক্রম শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কটকা স্মৃতিসৌধের অদূরে প্রায় এক একর জায়গাজুড়ে এ মসজিদটির অবস্থান। এর অদূরেই রয়েছে ছাত্রদের তিনটি হল, যথাক্রমে: খানজাহান আলী হল, খানবাহাদুর আহছানউল্লা হল এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল। অপরদিকে মসজিদটির উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে ড. সত্যেন্দ্র নাথ বসু একাডেমিক ভবন, আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন, কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবন এবং কাজী নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। ফলে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে এ মসজিদে নামাজ আদায়ে সুবিধা হচ্ছে।

পুরুষের পাশাপাশি মসজিদটিতে নারীদেরও নামাজ পড়ার জায়গা রয়েছে। সেখানে আলাদা ওজুখানা রয়েছে। যাওয়া আসার আলাদা রাস্তা রয়েছে। ক্লাস করতে করতে নামাজের সময় হলে ছাত্রীরা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকেলে ঘুরতে আসা অন্যান্যরা সেখানে গিয়ে নামাজ আদায় করতে পারেন।

খুবির সমাজ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের মো. ফারুক হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ নির্মাণশৈলী ও নান্দনিকতায় অনন্য। মসজিদের সৌন্দর্য দেখে প্রতীয়মান হয় যে প্রকৃতি ও মানবশিল্পের সুন্দরতা একসাথে যোগ হয়েছে। মসজিদটির সৌন্দর্য দেখে মানুষের মন মুগ্ধতায় ভরে যায়। বিশেষ করে মসজিদের উত্তর পাশের  সূর্যমুখী ফুলের মনোমুগ্ধকর  দৃশ্য মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়েছে।

খুবির কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের এক গম্বুজ মসজিদের আদলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। এক ফ্লোরে একসঙ্গে নামাজ আদায় করার বৈশিষ্ট্যে এই মসজিদ তৈরি করা হয়েছে।  গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ ঠান্ডা থাকে। মহানবী (স.)- এর স্মৃতি বিজড়িত মক্কা মদিনার মসজিদগুলোতেও গম্বুজগুলো বড় বড় দেখা যায়। ওপরে গম্বুজ থাকার কারণে এসি ছাড়াও প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও মসজিদের মধ্যে স্বস্তিতে নামাজ আদায় করা যায় ।

১৪ হাজার ৫শ স্কয়ার ফুট দৈর্ঘ্য মসজিদটিতে তিন হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। জুমার দিন সবচেয়ে বেশি মুসল্লি হয় এখানে। দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা