• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

৮ ডিসেম্বর ১৯৭১, হানাদারমুক্ত হয় ৭ জেলা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০১৯  

আজ ৮ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় মৌলভীবাজার, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, বরিশাল, পটুয়াখালী ও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা। সেদিন ওই সব স্থানগুলোতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে বিজয়ের উল্লাসে মেতে ওঠেন মুক্তিযোদ্ধারা।

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও শহীদদের গণকবরসহ স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো রয়েছে অরক্ষিত।আর বিজয়ের মাস উপলক্ষে শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে মুক্তিযুদ্ধের এসব স্থাপনা যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধারা।

মৌলভীবাজার: ৮ ডিসেম্বর। একাত্তর সালের এই দিনে মৌলভীবাজার পুরোপুরি হানাদারমুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ হামলা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ৫ ডিসেম্বর থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রতিরক্ষা ভেঙে পড়তে শুরু করে। পাক সেনারা তখন সিলেটের দিকে পালাতে শুরু করে। পালানোর সময় তাদের এলোপাথাড়ি গুলিতে অনেক নিরীহ মানুষ শহীদ হন। সিলেটে যাওয়ার পথে পাক বাহিনী শেরপুরে অবস্থান নিলে সেখান থেকেও তাদের বিতাড়িত করা হয়। এতে ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার পুরোপুরি হানাদারমুক্ত হয় এবং আকাশে ওড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা। 

চাঁদপুর: ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকহানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্তি পেয়েছিল চাঁদপুর জেলা। লাকসাম ও মুদাফ্ফরগঞ্জ মুক্ত হবার পর তৎকালীন চাঁদপুর মহকুমা জেলায় সর্বশেষ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ৭ ডিসেম্বর। মিত্রবাহিনী এবং মুক্তিযোদ্ধারা সড়কপথে  হাজীগঞ্জ দিয়ে ৬ ডিসেম্বর চাঁদপুর আসতে থাকলে হানাদার বাহিনী প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। ভারতের মাউন্টেন ব্রিগেড ও ইস্টার্ন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা যৌথ আক্রমণ চালান। যুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তান ৩৯ অস্থায়ী ডিভিশনের কমান্ডিং অফিসার মেজর জেনারেল রহিম খান পাকসেনাদের নিয়ে চাঁদপুর থেকে পলায়ন করেন। হাজীগঞ্জে ৩৬ ঘণ্টার এবং বড় স্টেশন এলাকায় তীব্র লড়াইয়ের পর ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পূর্বাঞ্চল আখাউড়া মুক্ত করার পর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে অগ্রসর হয়। আখাউড়া থেকে রেল লাইন ও উজানী শহর অতিক্রম করে কোন ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই যৌথবাহিনী পৌঁছে যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে। পরে ৮ ডিসেম্বর সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

কুমিল্লা: ১৯৭১ সালের এদিনে কুমিল্লা পাক হানাদার বাহিনীর রাহুর গ্রাস থেকে মুক্ত হয়। দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধ আর নির্যাতনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীসহ সর্বস্তরের জনগণের উল্লাস ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে কমিল্লা। মুক্ত হয় কুমিল্লা। 

১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে তিনদিকে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী কুমিল্লা বিমান বন্দরে পাক বাহিনীর ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের ঘাঁটিতে আক্রমণ শুরু করে। পাক বাহিনীর অবস্থানের উপর মুক্তিসেনারা মর্টার আর্টিলারি আক্রমণ চালিয়ে শেষ রাতের দিকে তাদের আত্মসমর্পণ করাতে সক্ষম হয়। সারা রাত ব্যাপী পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। 

বরিশাল: ৮ ডিসেম্বর বরিশাল মুক্ত দিবস। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শেষদিকে ১৯৭১ সালের এই দিনে শত্রুমুক্ত হয় বরিশাল অঞ্চল। এদিন বরিশালকে পাক হানাদারমুক্ত করে বিজয়ের পতাকা ওড়ান অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধারা।

পটুয়াখালী: একাত্তরের ২৬ এপ্রিল, পটুয়াখালীর কালিকাপুর এলাকায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে পাক হানাদার বাহিনী হত্যা করে ১৮ জনকে। একই দিন গলাচিপার পানপট্টি এলাকায় হামলা চালিয়ে হানাদার বাহিনী নির্বিচারে হত্যা করে ৫০ থেকে ৬০ জন মুক্তিকামী মানুষকে।

মাদারীপুর: ১৯৭১ সালে এই দিনে সম্মুখযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে মাদারীপুরকে স্বাধীন করেছিলো মুক্তিযোদ্ধারা।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা