• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

২শ বছরের পুরনো গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘পলো বাওয়া’ উৎসব

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২০  

বিশ্বনাথে এবারও হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দ-উৎসবে উদযাপিত হলো ২শ বছরের পুরনো গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘পলো বাওয়া’ উৎসব। শিকড়ের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের টানে প্রতি বছরই আয়োজন করা হয় এই উৎসবের। বুধবার দুপুর ১২টায় উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরী গ্রামের (দক্ষিণের বিল) বড় বিলে এই মৎস্য আহরণ শুরু হয়। এতে প্রায় চারশতাধিক সৌখিন মৎস্য শিকারি অংশগ্রহণ করেন। সরেজমিন বিলে গিয়ে দেখা যায়, কনকনে শীত উপেক্ষা করে সাতসকালেই বিলের ধারে জড়ো হয়েছেন শিকারিরা। এতে দলভুক্ত হয়েছে শিশু-কিশোরও। মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম পাশে নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত সময়ের প্রহর গুনছেন সকলেই। সময় হলেই একযোগে ‘আনন্দ চিৎকার’ দিয়ে বিলে নামার অপেক্ষায় সবাই। এ দিকে এই উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে বিলের ধারে ভিড় জমিয়েছেন উৎসুক জনতা। দুপুর ১২টা হলেই ভূ-দৌড়ে পলো নিয়ে বিলে ঝাঁপ দেন শিকারি দল। দীর্ঘসময় হিম শীতল জলে মাছ শিকারে মেতে উঠেন তারা। এসময় ধরা পড়ে বোয়াল, রুই, কাতলা, শোল, গজার ও বাউশ মাছ।

গ্রামবাসী বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্তানুযায়ী ভাদ্র মাস থেকে বিলে সকল প্রকার মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এতে বিলে জড়ো হয় বিভিন্ন জাতের প্রচুর মাছ। এই পাঁচ মাসে মাছগুলো সুযোগ পায় বড়ো হওয়ার। ২শ বছরের পুরনো ‘পলো উৎসবের’ এক সপ্তাহ পূর্বে পঞ্চায়েতের সভা ডেকে শৃংঙ্খলা রক্ষায় নেয়া হয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। সভার পরপরই উৎসবের মত গ্রামের ঘরে ঘরে পলো তৈরী, মেরামত ও সংগ্রহের কাজ চলে। এরপর মাঘ মাসের পহেলা দিনেই আনুষ্ঠানিকভাবে একযোগে আমরা মাছ ধরতে বিলে নামি এবং অধিকাংশ শিকারিই মাছ হাতে বাড়ি ফিরি।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী রহমত আলী, সমছুল ইসলাম, মনোহর আলী বলেন, বিদেশ থেকে আসার একমাত্র উদ্দেশ্য পলো বাওয়া উৎসবে অংশ গ্রহণ করা। আমরা আনন্দ পাই। আমাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতি বছর এ আয়োজন করেন গ্রামবাসী। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, আমাদের উপজেলায় এটিই সবচেয়ে বড় ‘পলো বাওয়া উৎসব’। যুগযুগ ধরে এ ঐতিহ্য চলমান। আমরা গ্রামবাসী মিলেমিশে প্রতিবছর এ বিল থেকে উৎসবের মতো দেশীয় প্রজাতির সু-স্বাদু আহরণ করে থাকি।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা