• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

সুন্দরবনের কোলঘেঁষে বিশ্বমানের ওয়ান্ডারফুল কিংডম

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯  

সুন্দরবনের সারি সারি গরান, সেগুন,গজারি। পশুরের বুক চিড়ে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন দেখতে আসা পর্যটকবাহী জাহাজের লাইন। তারই কোলঘেঁষে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বরণপাড়া এলাকায় সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে ১০ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে বিশ্বমানের রানা রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। সংক্ষিপ্ত নাম দেয়া হয়েছে ‘ওয়ান্ডারফুল কিংডম’। রিসোর্টটিতে একবার যে আসবে, তার প্রিয় স্থানের তালিকায় জায়গা পাবে এটি। সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প সম্প্রসারণে পার্কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেছেন অনেকে। উদ্বোধনের পর থেকে পার্কটি দেখতে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে বিনোদনপ্রেমীদের।

বিনোদনপ্রেমীরা জানান, খুলনা ও পাশের এলাকায় বিনোদনের তেমন কোনো জায়গা নেই। শিশুদের নামে কয়েকটি পার্ক থাকলেও সেখানে নেই খেলাধুলার কোনো উপকরণ। কেডিএর উদ্যোগে নগরীর মুজগুন্নীতে একটি আধুনিক পার্ক নির্মাণ করা হলেও দেড় বছর ধরে তা বন্ধ। শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে বটিয়াঘাটায় অবস্থিত নতুন এই পার্কটি খুলনার মানুষের বিনোদনের খোরাক জোগাবে।

২০ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে পার্কের উদ্বোধন শেষে ওয়েস্টার্ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পার্কের মালিক এ এস এম আলাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, পদ্মার এপারে এটিই সবচেয়ে বড় পার্ক। আমার একমাত্র অকাল প্রয়াত ছেলে রানার স্মৃতিকে স্মরণীয় রাখতে পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি নির্মাণের উদ্দেশ্য হলো ছেলের স্মৃতিকে জড়িয়ে এ অঞ্চলের কর্মসংস্থান ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা। এ প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ৯৫ ভাগই স্থানীয় লোকজন। এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক কটেজ, আধুনিক ও জনপ্রিয় রাইড-সংবলিত অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও ওয়াটার কিংডম, পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন ভ্রমণ (রিভারক্রুজ)। এই পার্কে বিশেষ আকর্ষণ সুনামিপুল যা বাংলাদেশে প্রথম, যেখানে কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট সাগরের উত্তাল ঢেউ এবং ওয়াটার স্লাইড ও ডিজে মিউজিক এবং বিভিন্ন আকর্ষণীয় রাইড ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকছে। তিনি আরো বলেন, অ্যামিউজমেন্ট পার্কটিতে রয়েছে ক্যারোসেল, অক্টোপাস রাইড, নাগরদোলা, বাম্পার কার, সেল্ফ কন্ট্রোল্ড প্লেন, ট্রেন, ফ্লাইং কার, জাম্পিং ফ্রগ, লেডি বাগ, মোটর রাইড, ক্যাবল কার, সুনামি পুল, ওয়াটার স্লাইড রাইন্ড। পার্কটির মধ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে পাঁচ তারকা মানের হোটেল। জাঁকজমকপূর্ণ এই হোটেলটি পরিবেশবান্ধবভাবে নির্মিত হবে। এ হোটেলে সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন অত্যাধুনিক ব্যবস্থা, এতে পরিবার নিয়ে নিশ্চিন্তে বিশ্রাম ও রাত্রি যাপন করা যাবে। পর্যটকদের জন্য থাকবে রিভারক্রুজ জাহাজ। যাতে এক দিনের মধ্যে কটকা, দুবলার চর ও হিরণপয়েন্ট ঘুরে আসা যায়। এর মাধ্যমে সুন্দরবনে বৃদ্ধি পাবে পর্যটক। সরকারের বাড়বে রাজস্ব। রিসোর্টের প্রবেশমূল্য ধরা হয়েছে ৩০০ টাকা।

পার্ক দেখতে আসা ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, উদ্বোধনের দিন পরিবার নিয়ে এসেছি। ভাবছিলাম আজকের জন্য ফ্রি থাকবে; কিন্তু তা দেয়া হয়নি। তারপরও পর্যটনকে ঘিরে সুন্দরবনকেন্দ্রিক কোনো বিশ্বমানের পার্ক খুলনাতে ছিল না। আমরা আশা করছি, সুন্দরবনের কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা এই রিসোর্টটির মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনে প্রকৃতির সাথে একাকার হয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ তৈরি হবে। এটিকে ঘিরে রাস্তাঘাট তথা যোগাযোগব্যবস্থারও উন্নয়ন ঘটবে। সেই সাথে তিনি প্রবেশমূল্য কমানোরও দাবি জানান।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা