শিশুকন্যাকে বাঁচিয়ে না ফেরার দেশে ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এক সড়কে প্রাণ হারালেন বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন রানা (৪০)। এ সময় তার সঙ্গে থাকা আহত স্ত্রী রেহানা বেগম (৩০) গুরুতর আহত হন।

তবে শিশুকন্যা ঐতীকে (৫) দুর্ঘটনার সময় ছুঁড়ে ফেলায় সে অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়।

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মুখে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নাসির উদ্দিন রানা বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি ইউরো ফার্মার কুলাউড়ার এরিয়া ম্যানেজার। তার বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে নাসির উদ্দিন রানা তার স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে সিএনজি অটোরিকশাযোগে মৌলভীবাজার থেকে কুলাউড়ায় আসছিলেন। নবীন চন্দ্র মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের চৌমুহনী মোড়ে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা বিপরীতমুখী একটি ট্রাকের সঙ্গে তাদের বহনকারী অটোরিকশার ধাক্কা লাগে।

এতে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া অটোরিকশায় থাকা রানার মাথায় প্রচণ্ড আঘাত লাগে এবং স্ত্রী গুরুতর আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার সময় রানা তার মেয়ে ঐতীকে বাঁচাতে অটোরিকশা থেকে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেন। এতে মেয়েটি কিছুটা আহত হলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়।

এদিকে রানা ও তার স্ত্রীকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুলাউড়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ বেলায়েত হোসেনসহ একটি দল উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নাসির উদ্দিন রানা মারা যান।

নাসির উদ্দিনের স্ত্রী হাসপাতালের আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। মেয়ে ঐতী বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত থাকলেও পিতাকে হারিয়ে সে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।

কুলাউড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাকির হোসেন জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

কুলাউড়া থানার ওসি মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, থানায় এ ব্যাপারে কোনো মামলা হয়নি। তবে ঘাতক ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশাটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।