মেঘনায় জাহাজডুবি : দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার মেঘনায় ডুবে যাওয়া নিখোঁজ বাল্কহেড (বালুর জাহাজ) এমভি নাদিয়ার খোঁজ মিলেছে। আজ সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে নয়ানগরে এর খোঁজ মিলে। দুপুর সাড়ে ৩টায় বাল্কহেডটির ভিতর থেকে মো. আসলাম (২৪) ও বিকেল পোনে ৫টার দিকে আব্দুল মান্নান (৬০) নামে নিখোঁজ ২ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে ডুবরিরা। তবে এখনও ইমদাদ (৪০) নিখোঁজ রয়েছেন।

এদের সকলের বাড়ি বরগুনা জেলায়। বাল্কহেডটির ভিতররে আর কোনো লাশ আছে কিনা তার সন্ধান চালাবে ডুবরিরা। সোমবার সকাল থেকে গজারিয়া কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও পাগলা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এ উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। কোস্টগার্ডের স্টেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট এম এম আসিফ জানান, গজারিয়া ঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মাঝ নদীতে নিখোঁজ বাল্কহেডের খোঁজ পাওয়া যায়। বাল্কহেডের ভেতরে আরো কোনো মরদেহ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাল্কহেডের ভেতর থেকে ব্যবহৃত মশারি পাওয়া গেছে। প্রায় ১০০ ফুট পানির নিচে বাল্কহেডটি পাওয়া যায়। ডুবুরিদের সন্ধান অব্যাহত থাকবে। নিখোঁজ ৩ জনের মধ্যে ২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ দুটি নৌ-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান আজকের মতো শেষ করা হয়েছে। কাল মঙ্গলবার আবার উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হবে।

বিআইডব্লিউটিএর সদরঘাটের যুগ্ম পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, আগে নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধান করা হচ্ছে। তারপর বাল্কহেডটি তোলা হবে। ডুবরিরা বাল্কহেডের ভিতর থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করেছে। রবিবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। কাল মঙ্গলবার বাকী একজনের সন্ধানে আবারো উদ্ধার অভিযান চলবে। গজারিয়া নৌ পুলিশের ইনচার্জ পরিদর্শক আব্দুল রাজ্জাক জানিয়েছেন, লাশ দুটি ময়না তদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হবে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে চাইলে মামলা করতে পারে। মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন, নিহতদের পরিবারকে লাশ বহন ও আনুসঙ্গিক খরচ বাবদ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গতকাল রবিবার ভোর সোয়া ৫টার বরিশাল থেকে ঢাকার সদরঘাটগামী লঞ্চ এমভি কীর্তনখোলা-২ লঞ্চের ধাক্কায় ঘুমন্ত তিন শ্রমিকসহ গজারিয়া ঘাটের কাছে নোঙ্গর করা এমভি নাদিয়া নামে একটি বাল্কহেড মেঘনায় ডুবে যায়। পরে সকালে ঢাকার সদর ঘাট থেকে লঞ্চটির চালক মো. শহিদুল ইসলাম এবং দুই মাস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন ও ইউনুচ ব্যাপারীকে আটক করে সদরঘাট বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কাছে সাক্ষীসহ হস্তান্তর করা হয়। এ দুর্ঘটনায় ঘুমন্ত তিন শ্রমিক মেঘনায় ডুবে নিখোঁজ হয়।