বিয়ের আগে যৌন মিলন, বেত্রাঘাতে জ্ঞান হারানোর পরেও পূর্ণাঙ্গ সাজা

বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় বেত্রাঘাতে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছেন ইন্দোনেশীয় এক যুবক। পরে একটু বিরতি দিয়ে সামান্য চিকিৎসা শেষে আবারও বেত্রাঘাতের পূর্ণাঙ্গ সাজা কার্যকর করা হয় তার। বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে।

দেশটির সুমাত্রা দ্বীপের রক্ষণশীল আচেহ প্রদেশে কট্টর ইসলামি আইন চালু রয়েছে। এই আইনে জুয়া খেলা, মদ্যপান, সমকামিতা কিংবা বিয়ের আগে যৌন মিলনে লিপ্ত হলে অভিযুক্তদের জনসম্মুখে এনে বেত্রাঘাতের সাজা দেয়া হয়।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সমালোচনা সত্ত্বেও এই আইনের কঠোর প্রয়োগ রয়েছে দেশটিতে। তবে আচেহ প্রদেশই বিশ্বের শীর্ষ এই মুসলিম দেশের একমাত্র অঞ্চল; যেখানে শতভাগ চালু রয়েছে ইসলামি আইন।

বৃহস্পতিবার ২২ বছর বয়সী এক যুবককে বিয়ের আগে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার দায়ে ১০০ বেত্রাঘাতের সাজা দেন দেশটির শরীয়া কর্মকর্তারা। নির্দেশ অনুযায়ী, ওই যুবককে জনসম্মুখে এনে বেত্রাঘাত শুরু করেন এক শরীয়া কর্মকর্তা।

এ সময় বেত্রাঘাতের কারণে অভিযুক্ত যুবক অবচেতন হয়ে পড়লে কিছু সময়ের জন্য সাজা স্থগিত রাখা হয়। পরে হালকা চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ্য করে তোলার পর আবারও বেত্রাঘাত করা হয়। সাজা শেষে চিকিৎসার জন্য পাশের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই যুবককে।

ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, এক নারীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার দায়ে ওই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আচেহ প্রদেশের তিমুর জেলার একটি মসজিদের বাইরে অভিযুক্ত নারীকেও একই সঙ্গে ১০০ বেত্রাঘাত করা হয়। তবে এই যুবক ছাড়াও অন্য এক পুরুষের সঙ্গে ওই নারীর অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে।

বেত্রাঘাতের এই সাজা কার্যকরের দৃশ্য দেখার জন্য সেখানে পাঁচ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় অনেকে আরও কঠোর সাজার দাবি জানিয়ে চিৎকার করেন। প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, আইন লঙ্গণ করলে তাদেরও একই ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

এর আগে, গত জুলাইয়ে বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার দায়ে তিন ব্যক্তির প্রত্যেকজনকে ১০০টি করে বেত্রাঘাতের সাজা দেয় দেশটির শরীয়া দফতর। এই তিন অভিযুক্তের মধ্যে দুজনকে অপ্রাপ্তবয়স্ক এক মেয়ে শিশুর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত অবস্থায় ধরে ফেলেন দেশটির কর্মকর্তারা।