• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

বশেমুরবিপ্রবিতে ডিনকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০১৯  

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) আইন বিভাগের ডিন মো. আব্দুল কুদ্দুস মিয়া তাকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। এ নির্যাতনের বিশদ বিবরণ দিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিকার চেয়ে ছুটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন তিনি।

আবদুল কুদ্দুস মিয়া জানিয়েছেন, গত ২৯ অক্টোবর বিকেল ৩টায় তার কক্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী মানসিক নির্যাতন চালিয়ে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে পদত্যাগ করতে চাপ প্রয়োগ করে।
 
অভিযোগে তিনি জানান, গত ২৯ অক্টোবর বিকেল ৩টার সময় আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র হাসান আলী, মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ নাইম, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ কাফি, মোহাম্মদ সোলায়মান রাব্বিসহ ৭-৮ জন ছাত্র ডিনের ২০৮ নং রুমে প্রবেশ করে দরজা-জানালা বন্ধ করে জিম্মি করে তাকে পদত্যাগের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তার নিয়োগ অবৈধ বলে পদত্যাগ করতেও বলেন। বিষয়টি তিনি মোবাইল ফোনে ভাইন্স চ্যান্সেলরকে (ভারপ্রাপ্ত) জানান। তখন ভাইন্স চ্যান্সেলর ছাত্রদের তার রুমে নিয়ে গিয়ে কথা বলতে বলেন। কিন্তু ছাত্ররা তার রুমে না গিয়ে তাকে তীব্র চাপ সৃষ্টি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। 

ছাত্রদের মানসিক নির্যাতনে তিনি অসুস্থ অনুভব করেন। কথা বলার শক্তিও হারিয়ে ফেলতে থাকেন। তখন (বুয়েটের শিক্ষার্থী) আবরারের কথা মনে হয় যে ছাত্ররা শারীরিক নির্যাতন করে তার মৃত্যু ঘটিয়েছে। আর মানসিক নির্যাতনে তার মৃত্যু ঘটানো হলে আইনগত প্রতিকার থাকবে না বলে আশঙ্কা হয় আবদুল কুদ্দুস মিয়ার।

এরপরই তিনি নিরাপত্তার বিষয় চিন্তা করে ১০ দিনের নৈমিত্তিক ছুটির দরখাস্ত দাখিল করে অফিস ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, তিনি ছুটিতে আছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে সভা ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। কারণ তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলেওতো এখনো শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তার মতো একজন মানুষের সঙ্গে এমন আচরণ করা সঠিক হয়নি।

যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, অস্থিতিশীলতা যেন কাটছেই না। প্রতিদিনই কোনো না কোনো অঘটন ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন পদত্যাগের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের কারণে এসব ঘটনা ঘটছে।  

বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম. এ. সাত্তারকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে রেজিস্ট্রার বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান বলেন, আমরা একটা অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে তৎক্ষণিকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট  দিতে বলা হয়েছে।

বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর ১২ দিন শিক্ষার্থীদের লাগাতার অান্দোলনের মুখে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। এরপর প্রফেসর ড. মো. শাহজাহানকে ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা