• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

প্রকৌশলীকে মারপিট, বুলডোজারের কাচ ভাঙল র‌্যাব

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

যশোরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে একজন প্রকৌশলী ও বুলডোজার চালককে আটক করে মারপিট করেছে র‌্যাব সদস্যরা। একইসঙ্গে উচ্ছেদ অভিযান নেতৃত্বকারী ম্যাজিস্ট্রেটকেও লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে যশোর শহরের বকচর এলাকায় র‌্যাব ক্যাম্পের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে র‌্যাব বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দাবি করেছেন।
 
যশোরের পালবাড়ির মোড় থেকে মুড়লি মোড় পর্যন্ত বিদ্যমান আঞ্চলিক মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে আজ সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের খুলনা জোনের স্টেট অফিসার সিনিয়র সহকারী সচিব অনিন্দিতা রায় এ কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। উচ্ছেদের একপর্যায়ে দুপুর আড়াইটার দিকে উচ্ছেদকারী দলটি শহরের বকচর এলাকায় র‌্যাবের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে আসে।

এ কার্যালয়ের প্রাচীরটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় নির্মিত হওয়ায় উচ্ছেদকারী দল র‌্যাব সদস্যদের তাদের গাড়ি সরিয়ে নিতে বলেন। গাড়ি সরিয়ে নেয়ার পর প্রাচীরটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়া হয়। এরপর উচ্ছেদকারী দল দুপুরের খাবারের বিরতিতে যায়। 

এসময় কিছু র‌্যাব সদস্যরা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে এসে বুলডেজার চালক প্রতাপ কুমার ও উপ সহকারী প্রকৌশলী তরুন কুমার দত্তকে মারপিট করে এবং বুলডোজারের সামনের কাচ ভেঙে দেয়। এরপর তাদের ধরে ক্যাম্পের ভিতর নিয়ে যায়। অভিযানে নেতৃত্ব দানকারী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগ করেন, র‌্যাব কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই উচ্ছেদের বিষয় জানে। তাদের সাথে সড়কের কর্মকর্তাদের কথাও হয়েছে। র‌্যাব সদস্যরা যা করেছে তা গ্রহণযোগ্য না।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী বুলডোজারের এক চালক জানান, প্রাচীর ভাঙ্গার আগেই ম্যাজিস্ট্রেট ম্যাডাম র‌্যাব সদস্যদের গাড়ি সরাতে বলেছেন। গাড়ি সরানোর পরই প্রাচীর ভাঙ্গা হয়েছে। এরপর আমি দেখলাম র‌্যাবের ১০ থেকে ১৫ জন ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে এসে চালক প্রতাপ কুমার ও ইঞ্জিনিয়ার স্যারকে ধরে মারপিট শুরু করেছে। ভয়ে আমরা পালিয়ে যাই। 

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, র‌্যাব সদস্যরা হকিস্টিক দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেছে। বুট দিয়ে লাথি দিয়ে রক্তাক্ত করে উচ্ছেদে আসা দুইজনকে। এরপর তাদের ধরে নিয়ে র‌্যাবের অফিসের ভিতর বেধে রেখেছে যা মানা যায় না। সাধারণ জনগণ যদি সরকারি সম্পদ ভেঙে দিতো তাহলে লাঠি চার্জ করতো তাহলে মানা যেত। যেটা হয়েছে এটা কাম্য নয়।

অবশ্য র‌্যাব সদস্যরা দাবি করেছেন, ম্যাজিস্ট্রেট ম্যাডাম কোনো কথা শুনতে রাজি হননি। গাড়ি সরানোর সময় পর্যন্ত দেয়নি। র‌্যাব অফিস একটি নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকা। অস্ত্রসহ সরকারি সম্পদ নিয়ে সরে যাওয়ার আগেই ভাঙচুর শুরু করা হয়। ক্যাম্প কমান্ডারের সাথে মোবাইলে কথা বলিয়ে দিতে চাইলেও তিনি কথা বলেননি। এভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রাচীর ভাঙ্গা যুক্তিযুক্ত হয়নি বলে দাবি করেন তারা।

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান যশোরের জেলা প্রশাসক মো. শফিউল আরিফ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন। তারা আটক দুইজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। তবে তারা কেউ মিডিয়ার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।

তবে র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার এএসপি সোহেল পারভেজ মোবাইলে ফোনে ঘটনাটিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি জরুরি কাজে বাইরে যাচ্ছেন বলে কথা বলতে রাজি হননি।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা