• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

পরিবেশ স্বচ্ছ রাখার মত আ.লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটি

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৬ জুন ২০২০  

করোনাভাইরাসের মহামারিসহ সকল ধরনের রোগ-বালাই থেকে মুক্ত থাকতে পরিবেশ স্বচ্ছ রাখার মত এসেছে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আলোচনা থেকে।

শুক্রবার রাতে ‘সময় এখন প্রকৃতির: বৈশ্বিক মহামারি এবং দুর্যোগের সহনশীলতা বৃদ্ধির উপযোগিতা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে পরিবেশ স্বচ্ছ রাখার পাশাপাশি মহামারিতে মেডিক্যাল বর্জসহ সকল ধরনের বর্জ সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনারও মত আসে।

আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটি সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আ ফ ম রুহুল হক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার‌্য মীজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার‌্য নাসরিন আহমেদ, অনুজীব বিজ্ঞানী সমীর কুমার সাহা, অধ্যাপক শিবলী রুবাইতুল ইসলাম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের(স্বাচিপ) মহাসচিব এম এ আজিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আফতাব আলী শেখ অংশ নেন।

করোনাভাইরাসের এই মহামারিতে মেডিক্যাল বর্জ সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা না হলে পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে দাবি করেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব এম এ আজিজ।

তিনি বলেন, “পরিবেশের জন্য মেডিক্যাল বর্জ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এই বর্জ ব্যবস্থাপনার জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা আশা করবে যাতে কারও মেডিক্যাল বর্জ কোনোভাবেই পরিবেশের ক্ষতির কারণ হয়ে না দাঁড়ায়। কারণ, করোনাভাইরাসের এই মহামারিতে মেডিক্যাল বর্জসহ সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা না হলে পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

এই মহামারিতে পরিবেশ কতটুকু বিপর্যয়ে পড়তে পারে এমন এক প্রশ্নের জবাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, “অনেকেই বলছে বণ্য প্রাণীদের কাছ থেকে এই ধরনের ভাইরাস আসছে। বাস্তবতা হলো বন্য প্রাণীদের বসবাসের জায়গা আমরা দখল করে নিয়েছি। যদি তাই হয়ে থাকে তবে ভবিষ্যতে এই ধরনের ভাইরাস আরও আসবে। সে জন্য প্রথমেই আমাদেরকে এই পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ করে আমাদের বনজ পরিবেশ, প্রাণী বৈচিত্র, জীববৈচিত্র যদি আমরা সংরক্ষণ করতে না পারি তাহলে আমাদের আরও হুমকির মুখে পড়তে হবে।

“দূষণ আমরা কেন করি, কারণ দূষণ করলে কম খরচে আমরা উৎপাদন করতে পারি। যদি দূষণ না করে কোন কিছু উৎপাদন করি তাহলে পণ্যের দাম বেশি পড়বে এবং আমরা যারা ক্রেতা তারা অতিরিক্ত দাম দিতে চাইব না। এ জন্য আমাদেরকেও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা যদি পরিবেশকে বাঁচাতে চাই তাহলে আমাদের জীববৈচিত্র রক্ষা করতে হবে এবং আমাদেরকে বন্যপশু পাখির সাথে সংঘাতে যাওয়া যাবে না।”

করোনাভাইরাসের মহামারিতে টিকে থাকতে হলে প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মানুষের পরিবারিক পরিবেশও স্বচ্ছ রাখতে হবে বলে দাবি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম।

তিনি বলেন, “পরিবার ও পরিবারের বাইরে, সমাজেও পরিবেশ রয়েছে, প্রকৃতি নিয়েওে পরিবেশ রয়েছে। এই অবস্থাতে আমরা সামগ্রিকভাবে পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা দেখছি। তখনই কিন্তু আমরা মানসিক এবং শারীরিকভাবে কেউ ভালো থাকতে পারছি না। এবং সেটার প্রভাব সার্বিকভাবে সবার উপরে পড়ছে। “

আমরা পরিবেশকে ধরে রাখতে পারিনি, আমরা প্রকৃতিকে ধরে রাখতে পারিনি, আমরা মনের ভেতরের পরিবেশকে ধরে রাখতে পারিনি। যার জন্যই এত অসচেতনতা। পরিবেশ যত ভালো হবে জাতি তত সুন্দর ভাবে এগিয়ে যাবে। মহামারিতে টিকে থাকতে হলে প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মানুষের পরিবারিক পরিবেশও স্বচ্ছ রাখতে হবে।”

মেডিক্যাল বর্জ ও শিল্পবর্জ ব্যবস্থাপনায় জোর দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আফতাব আলী শেখ বলেন, “ট্যানারী স্থানান্তর করে সাভারে নিয়েছে ঠিক আছে, সেখানের ব্যবস্থাপনাটাও কত দূর। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাসপাতালের ও শিল্পবর্জ ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে হবে। টেক্সটাইলের হিউজ পরিমাণের বর্জ্য, ক্ষতিকারক গ্যাস ঠিক করতে হবে। অন্যথায় পরিবেশ দূষণ রোধ করতে পারবে না। ফার্মাসিউটিক্যাল বর্জ্য, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ নানাভাবে দূষিত করছে।”

করোনাভাইরাসের মহামারিসহ সকল ধরনের রোগ-বালাই থেকে মুক্ত থাকতে পরিবেশ স্বচ্ছ রাখার দিক জন্য সবাইকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, “শুধু করোনাভাইরাস নয়, সকল ধরণের রোগবালাই থেকে বাঁচতে হলে আমাদের পরিবেশ ঠিক করতে হবে, আমাদেরকে স্বচ্ছ পরিবেশ তৈরি করতে হবে।“

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা