বাংলাদেশে ‘মানবাধিকার’ বিষয়ে জাতিসংঘের চোখ কি ট্যারা?
আজকের খুলনা
প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২২

সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেটের বাংলাদেশ সফরের পর ‘মানবাধিকার‘ নিয়ে পত্র-পত্রিকায়, টকশোতে বেশ হৈচৈ পড়ে গেছে। ১৯৭৫ সালে যখন জাতির পিতাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো তখন কোথায় ছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার? জাতির পিতার হত্যার বিচার বন্ধ করে যখন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হলো তখন কোথায় ছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার?
২০০১ সাল জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী সময়কার সংবাদপত্র সমূহে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নির্যাতনের যৎসামান্য প্রকাশিত হয়েছে। সেই সব প্রকাশিত তথ্যসমূহ থেকে তান্ডবের কিছুটা আঁচ করা গেলেও, বাস্তবতা ছিল আরো ভয়াবহ। সেই সময়ে দৈনিক পত্রিকা সমূহে নিত্যনতুন নির্যাতনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হতো। একটি নির্যাতনের রেশ শেষ হতে না হতেই আরেকটি নির্যাতনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হতো। কোথাও নিহত, কোথাও আহত, সংবাদ প্রকাশের অপরাধে সাংবাদিকের হাত থেতলে দেওয়া, নির্যাতন করা, যুবতি মেয়েদের ধর্ষণ করে হত্যা, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সম্পদ লুটতরাজ, আওয়ামীলীগ এর নেতাদের জ্বালাও-পোড়াও, ভাংচুর, ক্ষেতের ফসল কেটে নেওয়া, পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলা, কলাবাগানের কলাগাছ কেটে ফেলা, ইত্যাদি প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছিল। একজনের মৃতদেহ সৎকারের কাজ শেষ করতে না করতে আরেকজন খুন হতো।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা আক্ষেপের সাথে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘আমি আর কত লাশের সৎকারের ব্যবস্থা করবো’? কিন্তু তখন জাতিসংঘ থেকে কোন প্রতিনিধি ‘মানবাধিকার‘ রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সন্ত্রাসীদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন বিএনপিকে আরো কিছুদিন সময় দিতে হবে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম বারের মত (১৫ জুলাই ২০০১) শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের লতিফ-ইশতিয়াক-মুয়িদ চক্র বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে পরাজিত করানোর জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারচুপি করার জন্য পূর্বে থেকেই হোমওয়ার্ক করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন নির্লজ্জ ভাবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটকে বিজয়ী ঘোষণা করলো। হারিয়ে দেওয়ার পর বস্তুত ১ অক্টোবর রাত থেকেই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন ধরনের অমানবিক নির্যাতন শুরু করেছিল। বিএনপির সন্ত্রাসীরা খুন, ধর্ষণ, দখল-সন্ত্রাসের উৎসবে নেমে পড়েছিল। সেই সময়ে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সারাদেশ চষে বেড়িয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মাননীয় নেত্রীর সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে আমিও সফরসঙ্গী হিসেবে ঐ সকল নির্যাতনের চিত্র স্বচক্ষে দেখেছি।
বিএনপির সন্ত্রাসীরা নেত্রকোনা জেলা যুবলীগের সভাপতি স্বপন জোয়ার্দারকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে। নেত্রকোনা কলেজ ছাত্রসংসদের নির্বাচিত ভিপি ছাত্রলীগ নেতা শামসুর রহমান লিটন (ভিপি লিটন) কে হত্যার উদ্দেশ্যে দুই পায়ের রগ (টেন্ডন) কেটে দিয়ে পুকুরের কাদার মধ্যে পূতে রেখেছিল। এলাকাবাসী টের পেয়ে সেই কাঁদার মধ্য থেকে লিটনকে তুলে এনে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল। প্রানে বেঁচে থাকলেও দুই পায়ের রগ কাটার কারনে দুটি ক্র্যাচে ভর করে চলাফেরা করতে হতো। ঢাকায় এসেছিল চিকিৎসার জন্য। একদিন সকালে সুধাসদনে যাওয়ার পথে লেকের পাড়ে ডগবগে যুবক পঙ্গু ছেলেটিকে দেখে এই দুরবস্থার কারণ জানার চেষ্টা করি। ঘটনার বিবরণ শুনে ভিপি লিটনকে মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করাই, মাননীয় নেত্রী বিস্তারিত শুনে সদয় হয়ে লিটনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
বিএনপির সন্ত্রাসীরা নাটোরের যুবলীগ নেতা সাধীনের মাথার খুলি চুরমার করে দিয়েছিল। মাননীয় নেত্রীর সহযোগিতা নিয়ে সাধীনের চিকিৎসা করা হয়েছিল। প্রানে বেঁচে থাকলেও তার সমস্ত শরীর প্যারালাইজড ছিল। আশা ছিল আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা নিয়ে বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হবে, সে আবার সচল হবে, সাধারণ মানুষের মত চলাফেরা করতে পারবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা সরকার গঠনের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী বাসভবন যমুনায় দেখা করেছিল, সুচিকিৎসার আশ্বাসও পেয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগেই সাধীনের জীবন প্রদীপ নিভে গেছে।
বিএনপির সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য বগুড়ায় মসজিদের ভিতরে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতরত অবস্থায় মসজিদের মুয়াজ্জিনকে নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিহত মোয়াজ্জিনের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানানোর জন্য বগুড়ায় মুয়াজ্জিনের বাড়ীতে গিয়েছিলেন। নেত্রীর গাড়িবহর সকালে ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে পথিমধ্যে বিভিন্ন পথসভা ও অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মসূচি সম্পন্ন করে দুপুর দুইটা নাগাদ নিহত মুয়াজ্জিনের বাসায় পৌঁছেছিলাম। বিএনপির সন্ত্রাসীদের ত্রাসের কারনে মোয়াজ্জিন সাহেবের স্মরণে স্থানীয় আওয়ামীলীগ আয়োজিত শোকসভা যথাযথভাবে সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি কোথাও বসে দুপুরের খাবারও খেতে পারেননি তৎকালীন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা। এমনকি, খাবারের জন্য মরহুম আব্দুল মান্নান ভাই আগেই অর্ডার দিয়ে থাকলেও, বঙ্গবন্ধু সেতু অতিক্রম করার আগে সেখানকার কোন রেষ্টুরেন্ট বা খাবারের দোকান থেকে খাবার সংগ্রহ করা যায়নি। মাননীয় নেত্রীর গাড়ীবহর খাবারের জন্য প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষা করেছিল, কিন্তু সন্ত্রাসীদের ভয়ে স্থানীয় কোন রেষ্টুরেন্ট খাবার সরবরাহ করেনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বহরের সকলেই যমুনা নদী পার হয়ে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা এসে রাস্তার পাশের খাবারের দোকান থেকে খাবার গ্রহণ করেছিল।
২০০১ এর নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর দেশজুড়ে চলমান সহিংসতায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ বেশী হামলার শিকার হয়েছে। নির্বাচনোত্তর সহিংসতার নির্ভুল প্রতিবেদন প্রণয়নের জন্য সাবেক ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে দেশব্যাপী টীম পাঠানো হয়েছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ডঃ মোঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ ভাই ও আমি দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় বিএনপির সন্ত্রাসীদের নির্যাতন সরেজমিনে পরিদর্শন করেছিলাম এবং সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরি করেছিলাম। নিখিল চন্দ্র সরকার (১১০), বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাকাই গ্রামের বাসিন্দা। ৩ অক্টোবর ২০০১ বিকেলে বিএনপির সন্ত্রাসীরা নিখিল চন্দ্রের বাড়ীঘর ভাংচুর করে, এবং নিখিল চন্দ্রকে হত্যা করে তার কলেজ পড়ুয়া দুই মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। মেয়ে দু‘জনের আর কোন খবর পাওয়া যায়নি।
একই জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের শেফালী সরকার, ১ অক্টোবর ২০০১ রাতে নিকটস্থ স্কুলের টেলিভিশনে জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলের শুনে অনেক হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরার পথে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী তাকে প্রচন্ড মারধর করে। যতক্ষণ হুশ ছিল ততক্ষণ সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়েছে। বিএনপির সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে তার একমাত্র কন্যাকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল ইউনিয়নে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
উল্লেখ্য বরিশালের আগৈলঝাড়া, গৌরনদী উপজেলা ও আশপাশের এলাকায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৫০০০ মানুষ কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল ইউনিয়নে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল। বিএনপির সন্ত্রাসীদের ভয়ে রামশীল ইউনিয়নে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত আগৈলঝাড়া কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম মতিউর রহমানের ভাষ্যমতে সন্ত্রাসীরা তার বাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করেছে। রাইসমিল, করাতকল, অফিসে পেট্রোল স্প্রে করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তিনি প্রান বাঁচাতে পালিয়ে এসে রামশীলে আশ্রয় নিয়েছেন। ঐ এলাকায় এমনি অসংখ্য নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল, অসংখ্য সংবাদ ও প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘ থেকে কোন প্রতিনিধি ‘মানবাধিকার‘ রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।
জাতীয় নির্বাচনের ৭ দিন পরে, বিএনপির সন্ত্রাসীরা, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার পূর্ব দেলুয়া গ্রামের অধিবাসী অনিল কুমার ও তার স্ত্রী বাসনা রানী শীলকে প্রচন্ডভাবে মারধর করলে উনারা অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপর সন্ত্রাসীরা তাদের দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে পূর্নিমা রানী শীলকে অপহরণ করে নিয়ে যায়, পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। পূর্নিমার মত মহিমা, ফাহিমা, রুজুফা, সীমা, এমনি কত মেয়ে বিদায় নিয়েছে পৃথিবী ছেড়ে বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের মুখে। তখনতো জাতিসংঘ থেকে কোন প্রতিনিধি ‘মানবাধিকার‘ রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।
চট্টগ্রাম নগরীর নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী। তিনি তার কলেজে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। এই অপরাধে ২০০১ সালের ১লা নভেম্বর চট্টগ্রামের জামাল খান রোডে তাঁর বাড়ির ভিতরে সকাল বেলা সংবাদপত্র পড়ার সময় একাধিক বন্দুকধারী গুলি করে হত্যা করে তাকে। সোফায় বসা অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীর বিভৎস ছবি সারা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পরেছিল। তখনতো জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের বিবেক নাড়া দেয়নি। তার পরিবার ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলো। আসামিদের মধ্যে আটজন ছিলো ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য।
২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর গ্রামের শীলপাড়ায় বাইরে থেকে ঘরে তালা লাগিয়ে গানপাউডার ছড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মৃত্যুবরণ করেছেন তেজেন্দ্র লাল শীল (৭০), তার স্ত্রী বকুল শীল (৬০), ছেলে অনিল শীল (৪০), অনিলের স্ত্রী স্মৃতি শীল (৩২), অনিলের তিন সন্তান রুমি শীল (১২), সোনিয়া শীল (৭) ও চার দিন বয়সী কার্তিক শীল, তেজেন্দ্র শীলের ভাইয়ের মেয়ে বাবুটি শীল (২৫), প্রসাদি শীল (১৭), অ্যানি শীল (৭) এবং কক্সবাজার থেকে বেড়াতে আসা আত্মীয় দেবেন্দ্র শীল (৭২)।
২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাবের অদূরে দৈনিক সংবাদ ও নিউ এজের সিনিয়র রিপোর্টার এবং বিবিসি বাংলার প্রতিনিধি মানিক সাহা বোমা হামলায় খুন হন। মানিক সাহার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানানোর জন্য খুলনায় মানিক সাহার বাড়িতে গিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা। খুলনা সার্কিট হাউসে জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মাননীয় নেত্রীর সাথে সাক্ষাৎ শেষে একুশে পদকপ্রাপ্ত (মরোণত্তর) সাংবাদিক হুমায়ুন কবির বালু মাননীয় নেত্রীকে বললেন, ‘ আপা, আপনার সাথে একটা ছবি তুলে রাখতে চাই। জীবনে আবার দেখা হবে কিনা জানিনা, কখন মেরে ফেলে‘। বেশিদিন দেরি হয়নি। একই সালের ২৭ জুন মানিক সাহার মতো একইভাবে বোমা হামলায় হুমায়ুন কবির বালু ভাইকেও জীবন দিতে হয়েছিল। দিনটি ছিল সাংবাদিক বালু ভাই এর পরিবারের জন্য আনন্দের। সাধারণ আর ১০টি দিনের চেয়ে ভিন্নতর। বালু ভাইয়ের দ্বিতীয় সন্তান হুসনা মেহরুবা টুম্পা উচ মাধ্যমিক পাস করেছেন। মাতৃহীন সন্তানরা বালুর খুবই প্রিয়। তাই উচ্ছ্বাসটা তার একটু বেশি। নিজ সন্তানের এই সাফল্যগাঁথার অংশীদার তিনি তার (বালু ভাই) মাকে করাতে চান। তাই মাকে মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য ইকবালনগরে যান। তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে বালু ভাইকে মাকে মিষ্টি খাইয়ে ফেরেন। তখন দুপুর ১২টার কিছু বেশি হবে। তারা গেট দিয়ে বাড়ির ভেতর যাচ্ছেন। গেটের মুখেই বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণ। বোমাটি সরাসরি বালুর কোমরে আঘাত হানে। বোমার আঘাতে ছয় ফুটেরও বেশি দীর্ঘ বালুর কোমরে ক্ষত তৈরি হয়। মাত্র ৫ মাস ১২ দিনের মাথায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন অসংখ্য পদকপ্রাপ্ত প্রতিথযশা সাংবাদিক হুমায়ূন কবির বালু।
২০০১ সালের পর বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাসীরা ২৬,০০০ আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীকে হত্যা করেছে। তখন কোথায় ছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার দূত? পাবনায় আওয়ামীলীগ নেতা ডাঃ আয়নালকে হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, তার নিজ ঘরের ভিটিতে পুকুর তৈরী করে মাছ চাষ করেছে। আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের মাছের খামারে বিষ ঢেলে দিয়ে মাছ মেরে ফেলেছে, ক্ষেতের ফসল কেটে নিয়ে গেছে, মুরগির খামারে আগুন লাগিয়ে জীবন্ত মুরগিগুলো পুড়িয়ে মেরেছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, ভাংচুর করেছে, তখন কোথায় ছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার?
আমরা যারা গ্রামে বসবাস করি, আমরা অনেকেই দেখেছি, খেজুর রস বা আখের রস থেকে গুড় তৈরী করার জন্য বড় চুলা ব্যবহার করা হয়। যখন ঐ চুলায় আগুন জ্বালানো হয়, তখন আশেপাশে দাড়ানো যায় না। ২০০১ সালের পর বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাসীরা পিতামাতা নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে শিশু সন্তানকে জীবন্ত অবস্থায় ঐ জ্বলন্ত চুলায় ফেলে আগুনে পুড়ে হত্যা করেছে। কোথায় ছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার? নৌকায় ভোট দেওয়ায় গফরগাঁওয়ে যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান এর দু'হাতের দশ আংগুল কেটে দিয়েছিল বিএনপির সন্ত্রাসীরা। এ রকম অসংখ্য শিরোনাম দিয়েই এ লেখা ভরিয়ে দেওয়া যায়।
সে সময় একজন সুশীলকে মানবাধিকার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘বিএনপিকে আরও সময় দিতে হবে। ’ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে ২০০২ সালের অপারেশন ক্লিনহার্টে মারা গেছেন ৫৮ জন। ২০ হাজারের বেশি মানুষ নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মাদারীপুরের জনপ্রিয় আওয়ামীলীগ নেতাকে স্থানীয় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বলা হয়েছিল। তিনি রাজি হননি। পরবর্তিতে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চাপ দেওয়া হয়েছিল, তিনি রাজি হননি। অতঃপর অপারেশন ক্লিনহার্টের নির্যাতন। ঐ প্রার্থীর বাড়ীর উঠোনে চিৎ করে শুইয়ে বুকের উপর লাফিয়ে লাফিয়ে মুখ দিয়ে রক্ত বমি করিয়ে হত্যা করেছে। এমন নির্যাতনের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। সসময়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার দূত হিসেবে কেউ এগিয়ে আসেনি।
বরং ৮৬ দিনব্যাপী এ অভিযান চলার পর ‘দায়মুক্তি’র অধ্যাদেশ জারি করা হলো। এর মাধ্যমে ২০০২-এর ১৬ অক্টোবর থেকে ২০০৩ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর সব হত্যা ও নির্যাতনের বিচার রোধ করে দায়মুক্তি দেওয়া হলো। তখন মানবাধিকার নিয়ে কাউকে হাহাকার করতে দেখিনি। জাতিসংঘকে কোনো সুপারিশ দিতেও শুনিনি। যুক্তরাষ্ট্রও কারও ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কময় দিন। ওই দিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলা হলো। শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে, যুদ্ধের সময় ব্যবহার্য্য আর্জেস গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনা প্রানে বেঁচে থাকলেও তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছিলেন এবং ৪ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছিলেন। আমি নিজেও মারাত্মক আহত হয়েছিলাম। তখন কোথায় ছিলেন আমাদের মানবাধিকারের ধ্বজাধারীরা? মানবাধিকার কি তাহলে শুধু আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রয়োগের জন্য অস্ত্র? ‘মানবাধিকার’ বিষয়ে জাতিসংঘের চোখ কি ট্যারা ?
- ড. মো. আওলাদ হোসেন

- খুলনায় শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠিত
- প্রাণের মাস, ভাষার মাস শুরু আজ
- চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ: কয়রায় একজনকে জরিমানা
- সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে:প্রধানমন্ত্রী
- পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শর্ট সার্কিট থেকে ফের আগুন
- খুবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষে খালি আসনে ভর্তি ২ ফেব্রুয়ারি
- মোংলা ইপিজেডে ভিআইপি কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট
- মহেশপুর সীমান্ত থেকে নারী ও শিশুসহ ১৩ জন আটক
- ধর্মীয় উসকানিমূলক বই ঠেকাতে মেলায় ‘সাইবার মনিটরিং’
- বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন আইএমএফের
- দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্যারিয়ার সেমিনারদরকার
- উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ : সিটি মেয়র
- খুলনা-রাজশাহী স্টেডিয়ামে নজর দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের বানাবে বিসিবি
- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ৭ দেশের রাষ্ট্রদূত
- পাইকগাছায় ধানক্ষেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
- খুলনায় গুলিবিদ্ধ রাকিবকে ঢাকায় স্থানান্তর
- খুলনার ফুলতলায় গুলিতে মিলন হত্যার নেপথ্যে ঘাট ইজারা?
- পথ হারিয়ে পদযাত্রা শুরু করেছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
- বাংলাদেশের কৃষিপণ্য নিয়ে সরাসরি মধ্যপ্রাচ্য যাবে জাহাজ
- রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে রাখাটাই একটা চ্যালেঞ্জ : র্যাব মহাপরিচালক
- মসজিদে বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৩২, পাকিস্তানি তালেবানের দায় স্বীকার
- দেশ বিরোধী সংবাদ প্রচার বন্ধে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে:তথ্যমন্ত্রী
- খুলনা নগরীর বাগমারায় যুবক গুলিবিদ্ধ
- সালাম মুর্শেদীর বাড়ি: দুটি ভিডিও সরাতে ব্যারিস্টার সুমনকে নির্দেশ
- খুলনায় আঞ্চলিক শীতকালীন গোলাপ অঞ্চলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন
- বীর নিবাস:শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সামাজিক মর্যাদার প্রতীক
- খালেদার নাইকো মামলার চার্জশুনানি পেছাল
- ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় চালু হচ্ছে আর্জেন্টিনা দূতাবাস
- শূন্য পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ
- পাঠ্যবইয়ে ভুল সংশোধন ও গাফিলতি তদন্তে কমিটি
- খুলনায় যুবলীগের সম্মেলনে শেখ সোহেলকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখারদাবী
- খুলনায় ড্রেনের ভেতর থেকে ওষুধ কোম্পানী কর্মচারীর লাশ উদ্ধার
- ডিএনএ পরীক্ষায় মিললো পরিচয়:উদ্ধারকৃত কঙ্কাল খুলনার রাজীবের
- আমাকে সারা জিবনের জন্য পঙ্গু বানিয়ে দেওয়া হয়েছে : তসলিমা নাসরিন
- গডফাদারদের হুমকির মুখে রাজ!
- ভেঙে ফেলা হচ্ছে খুলনার এরশাদ শিকদারের ‘স্বর্ণকমল’
- খুলনায় কুল পাড়তে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
- খুলনার বাজারে ২৩ কেজি ওজনের ভোল মাছ, দাম উঠেছে ৮ লাখ
- খুলনা ফুলতলায় যুবককে গুলি করে হত্যা
- খুলনা নগরীর বাগমারায় যুবক গুলিবিদ্ধ
- খুলনার রাস্তায় ঘুরতে থাকা মেয়েটি ফিরলো পরিবারের কাছে
- খুলনা মহানগর যুবলীগের সভাপতি পলাশ, সম্পাদক সুজন
- খুলনায় ১০ হাজার দুর্লভ সামগ্রীর প্রদর্শনী
- খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটর সাইকেল চালকের মৃত্যু
- রক্তাক্ত পরীমণি, বিচ্ছেদ ঘটনার নতুন মোড়!
- জুম্মার নামাজের জন্য ২০৬ কি.মি. পথ পাড়ি দেন ৮২ বছরের আবুল!
- শাবানার সিনেমায় শাকিবের নায়িকা কাজল!
- খুলনায় জাল নোট তৈরির কারখানা আবিস্কার, গ্রেপ্তার ২,জাল নোট উদ্ধার
- খুবিতে ৪ দিনব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী শুরু বৃহস্পতিবার
- ফুলতলায় শর্টসার্কিট থেকে আগুন
