• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

কম খরচে লাভ বেশি, সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১  

খুলনার ফুলতলা উপজেলার আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের শিরোমনি বিল ডাকাতিয়া, মশিয়ালি ও গিলাতলায় চলতি মৌসুমে সরিষা চাষের নির্ধারিত লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠে সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ চলছে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত ফসলের মাঠ। হলুদের সমারোহে সজ্জিত সরিষার ফুলে দোল খাচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে ফুলতলা উপজেলায় আটরা গিলাতলা ইউনিয়নে সরিষা চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ এর চেয়ে অনেক বেশি চাষ হয়েছে। দুটি ফসলের মাঝে কৃষকরা সরিষা চাষের ফলনকে বোনাস হিসেবে দেখছেন। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়। একসময় কৃষকরা আমন ধান কাটার পর জমি পতিত ফেলে রাখতো। সময়ের সাথে সাথে তা পুরোটাই পাল্টে গেছে। আমন ধান কাটার পর জমিতে সরিষা লাগাতে হয়। যা মাত্র ৭০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ফসল কৃষক ঘরে তুলতে পারেন।

ফুলতলা উপজেলার আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরিষা চাষ খুবই লাভজনক একটা আবাদ। অতি অল্প সময়ে, অল্প পুজিতে কৃষকরা লাভবান হন তাই অধিকাংশ কৃষক এখন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এক বিঘা (৩৩শতাংশ) জমিতে সরিষা আবাদ করতে খরচ হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। যদি সঠিক ভাবে পরিচর্যা করা যায় তাহলে প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫ থেকে ৬ মণ সরিষা।

গিলাতলা দক্ষিণপাড়া এলাকার চাষি হালিম জানান, দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন তিনি। প্রতি বিঘা জমিতে দেড় হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সরিষার ফুলে খেত ভরে গেছে। ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি পাঁচ থেকে ছয় মণ সরিষা পাওয়া যাবে।

ইউনিয়নের বিল ডাকাতিয়া এলাকার কৃষক আফসার মিয়া বলেন, ‘আমন ধান কাটার পর দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আশা করছি বেশ ভাল ফলন হবে। এই সরিষা বিক্রি করে বোরো আবাদের তেল ও সার কেনার টাকা জোগাড় হয়ে যাবে।’

পাড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আলি হোসেন বলেন, ‘ধান আবাদে কোনও লাভ নেই, উৎপাদন খরচই উঠে না। সরিষা আবাদে খরচ কম লাভ বেশি। এক থেকে দুই বার সেচ দিলে চলে। বাজার দর ভালো হলে একমণ সরিষা ১৭০০-১৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। এ কারণে আমি আর ধান আবাদে যাচ্ছি না। একমণ ধান ৬০০ টাকা আর একমণ সরিষা ১৭০০ টাকা। ধান কেন আবাদ করতে যাবো?’

উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, সরিষা মূলত একটি মসলা জাতীয় ফসল। স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষককে অধিক ফলন পেতে নানা ভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যাতে কৃষকের কোন সমস্যার না হয়। আশা করছি প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটলে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা