• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

আজকের খুলনা

নিত্যপণ্যের বাজার কঠোর মনিটরিংয়ের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৪  

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে কঠোরভাবে বাজার তদারকি করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এ নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

পরে বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানান মন্ত্রিপরিষদসচিব মাহবুব হোসেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে কঠোরভাবে বলেছেন, বাজার মনিটরিং যেন জোরালোভাবে হয়। বাজারে সাপ্লাই যেন ঠিক থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোনো কোনো পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও দাম বাড়ছে। এ রকম অযৌক্তিক দাম বৃদ্ধি বন্ধ করতে বাজারে মনিটরিং কঠোর করতে হবে।

ডলারের দাম সাত টাকা বাড়ানো হয়েছে, তার একটা প্রভাব বাজারে এরই মধ্যে পড়েছে। সে ক্ষেত্রে ডলারের দাম বাড়িয়ে বাজার মনিটরিংয়ে নজর দেওয়ার বিষয়টি কতটা যুক্তিসংগত—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘এই প্রশ্নটি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে করুন। আমি আপনাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাটা জানিয়ে দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, সে বিষয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে একটু কাজ করতে দেন।

তারপর ওনাকে এই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করুন। তাহলে হয়তো কিছু জানতে পারবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু কালের কণ্ঠকে বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ। উৎসব এলেই কিছু ব্যবসায়ীর বাড়তি মুনাফা করার প্রবণতা থাকে। সামগ্রিকভাবে বাজারে যাতে অযৌক্তিকভাবে পণ্যমূল্য না বাড়ে, সে বিষয়ে নজরদারির জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।

নির্দেশনা অনুযায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ অন্য যেসব তদারককারী সংস্থা রয়েছে, তারা বাজারে মনিটরিং জোরদার করবে। তিনি বলেন, যেহেতু রমজান মাসে মনিটরিংয়ের সুফল পাওয়া গেছে। তাই প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, এটা থাকলে বাজারে অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি হবে না। মানুষ স্বস্তিতে থাকবে। সে জন্যই এই নির্দেশনা। আগামী ঈদ উপলক্ষে বাজারে যাতে মনিটরিং তৎপরতা দৃশ্যমান থাকে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যাতে অহেতুক পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে। সেই সঙ্গে সরবরাহ যাতে ঠিক থাকে, সেটা নিশ্চিত করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সর্বশেষ এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৯.৭৪ শতাংশ। আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি উঠেছে ১০.২২ শতাংশ হারে, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিকে গত ৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা-ডলার বিনিময় হার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনায় ডলারের আনুষ্ঠানিক দর এক লাফে সাত টাকা বেড়ে গেছে। ডলারের বাড়তি দামের কারণে আমদানি করা খাদ্য, বিশেষ করে ভোজ্য তেল, চিনি, ডাল, পোলট্রির খাবারের কাঁচামালসহ বিভিন্ন খাদ্যের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।  ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ২০ মের বাজারদরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুন, হলুদ, আদা, এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, চিনি ও ডিমের দাম বেড়েছে। ঈদুল আজহা সামনে রেখে প্রতিবছরই এসব পণ্যসহ অন্যান্য মসলা পণ্যের চাহিদা বাড়ে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাজারব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বাজারে মনিটরিং জোরদার করার নির্দেশনা দিলেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাজারব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করে। ঈদুল আজহা সামনে রেখে প্রতিবছরই এসব পণ্যসহ অন্যান্য মসলা পণ্যের চাহিদা বাড়ে। 

বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক চালু, স্বর্ণ পদকের সঙ্গে পুরস্কার কোটি টাকা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক চালু করেছে বাংলাদেশ। এ জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক নীতিমালা-২০২৪-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদসচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান, মানবাধিকার, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক দেওয়া হবে প্রতি দুই বছর পর পর। ২০২৫ সালের ১৭ মার্চ এই পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। এরপর ২৩ মে পুরস্কার প্রদান করা হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের যেকোনো দেশের নাগরিক এই পদকের জন্য বিবেচিত হবেন। কোনো দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সমাজসেবক, রাজনীতিক এই পদকের জন্য মনোনীত হবেন। নোবেলবিজয়ী, বাংলাদেশে অবস্থিত দূতাবাসের প্রধানরা সংশ্লিষ্ট দেশের জন্য নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।’

মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘এক লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ আর্থিক পুরস্কারের সঙ্গে ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম স্বর্ণ পদক থাকবে পুরস্কার হিসেবে। একটি নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক জুরিবোর্ড গঠন করা হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে। সেই সঙ্গে একটি নীতিমালা করা হবে। পরবর্তী সময়ে একটি আইন প্রণয়ন করা হবে।’ এ ছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে আরো তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সিইসির বেতন ১ লাখ ৫ হাজার, ইসিরা পাবেন ৯৫ হাজার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) বেতন নির্ধারণ করা হচ্ছে নতুন আইনে। ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার), আইন, ২০২৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, সিইসির বেতন হবে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা। আর অন্য কমিশনারদের বেতন হবে ৯৫ হাজার টাকা। এই বেতনের পাশাপাশি ৫০ শতাংশ বিশেষ ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাও পাবেন তাঁরা।

মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, এ বিষয়ে বর্তমানে যে আইন আছে, সেটি ১৯৮৩ সালের। কিন্তু সামরিক শাসনের সময়ে আইনগুলো পরিবর্তনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। তারই আলোকে এটি (প্রস্তাবিত আইন) করা হয়েছে। এতে সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সুযোগ-সুবিধা ও বেতন-ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে। মূলত আগের আইনকেই অনুসরণ করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদসচিব জানান, আগে ছিল সিইসি আপিল বিভাগের বিচারপতির সমান বেতন-ভাতাদি পাবেন। আর নির্বাচন কমিশনাররা হাইকোর্টের বিচারপতির সমান বেতন-ভাতাদি পাবেন। প্রস্তাবিত আইনে সেটি না লিখে করা হয়েছে সিইসি প্রতি মাসে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা বেতন পাবেন। আর নির্বাচন কমিশনার পাবেন ৯৫ হাজার টাকা। আর তাঁরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ বিশেষ ভাতা পাবেন। এ ছাড়া উৎসব ভাতা, বাংলা নববর্ষের ভাতা, আবাসন, যানবাহনের সুবিধাসহ আরো কিছু সুবিধা পাবেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের মর্যাদার বিষয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে মো. মাহবুব হোসেন বলেন, সেটি মূল আইনে আছে।

বিধিমালা করে অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

একটি বিধিমালা করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজি বাইক নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, অটোরিকশা নিয়ে একটি ঘটনা ঘটেছে। সেটি বিভিন্নভাবে পত্রিকায় এসেছে। অটোরিকশাচালকরা নিজেদের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। সেটা প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে। তিনি সুস্পষ্টভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন অটোরিকশাচালকদের জীবন-জীবিকার বিষয়টি উপেক্ষা করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। তাদের জীবিকার বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে।

মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যে একটি বিধিমালার মাধ্যমে এটিকে রেগুলেট (নিয়ন্ত্রণ) করতে হবে। সেই রেগুলেশনে তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁদের নির্দিষ্ট এলাকা ভাগ করে দিতে হবে, নির্ধারিত এলাকার বাইরে তাঁরা গাড়ি চালাতে পারবেন না—এর মধ্যেই তাঁদের চালাতে হবে। মহাসড়কে কিংবা বিজি হাব কিংবা সড়কে তাঁরা অটোরিকশা চালাতে পারবেন না, যেতে পারবেন না। কোন কোন সড়কে চালাতে পারবেন, কী গতিতে চালাতে পারবেন, সেটাও প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা