• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

এ বাংলার মানুষ শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর রক্তকেই বিশ্বাস করে

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯  

ডা. মো. মুরাদ হাসান। তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। ১৯৭৪ সালে ১০ অক্টোবর, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে ঐতিহ্যবাহী এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা অ্যাডভোকেট মতিয়র রহমান তালুকদার। বাবা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা ও বরেণ্য রাজনীতিবিদ এবং প্রখ্যাত আইনজীবী। মতিয়র রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বাবার হাত ধরেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয় ডা. মুরাদ হাসান। 

১৯৯৪ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০০০ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি। ২০০৩ সালে আওয়ামী যুবলীগের কার্যকরী সদস্য নির্বাচিত হন ডা. মুরাদ হাসান। তিনি ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ সংসদীয় আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২য় বারের মতো সংসদ সদস্য হন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। একই বছর ১৯ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
 

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন ঘিরে আপনার ভাবনা কি?
ডা. মুরাদ হাসান:
 বাংলাদেশের ইতিহাস মানে আওয়ামী লীগের ইতিহাস। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংগ্রাম এবং গৌরবের অগ্রযাত্রায় আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সকল মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়ছে। দেশের সর্বত্র আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে আলোচনা হচ্ছে। সম্মেলন বলতে আমরা বুঝি নতুন নেতা নির্বাচিত হবে, নতুন-নতুন নেতৃত্ব আসবে। নবীন-প্রবীণ, অভিজ্ঞ এবং যাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে আওয়ামী লীগকে সমৃদ্ধ করা উচিত তাদের সবাইকে নিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি গঠিত হবে। যার প্রধান থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। 

আমাদের এই প্রজাতন্ত্রের আশা-আকাঙ্ক্ষার চিন্তা-চেতনার শেষ ঠিকানা, আমাদের বাঙালি জাতি সত্তার স্বপ্ন সারথি জননেত্রী শেখ হাসিনা। যার নেতৃত্বে জাতীয় কমিটি গঠিত হবে। শুধু তাই নয় বাংলার মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবে। আজকে বাংলাদেশ কি চায়? বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশাটা কি? এটা বঙ্গবন্ধুর কন্যাই সবচেয়ে ভালো জানেন, বোঝেন, উপলব্ধি করেন। আমরা যারা আওয়ামী লীগের কর্মী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ-চেতনাকে বিশ্বাস করি, ধারণ করি, আমরা যারা জন্ম-জন্মান্তরে বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগের সাথে আদর্শের কর্মী, আমরা বিশ্বাস করি- আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন একটি মিলন-মেলা। সারা বাংলাদেশের আদর্শিক নেতাকর্মী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল্যবোধ ধারণ করে তারা বিশ্বাস করে ২০-২১ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির মিলন-মেলা। আমি বলব সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে হচ্ছে মিলন-মেলা। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন, সাধারণ সম্পাদক উপস্থাপন করবেন। ভিন্ন অনুভূতি, প্রাণের স্পন্দন মনে হয়।

শুদ্ধি অভিযানের মধ্যেই আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে, বিষয়টা কীভাবে দেখছেন?
ডা. মুরাদ হাসান: 
 প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিবে আওয়ামী লীগ। সুতরাং দায়িত্ব অনেক বেশি। আমি মনে করি— মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। শুদ্ধি অভিযান, আত্মশুদ্ধি, অচিন্তনীয়, অকল্পনীয়। এই বাংলার মানুষ কোনদিন ভাবতেও পারেনি যে বঙ্গবন্ধু কন্যা এভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন। অসম সাহসিকতা নিয়ে নিজের দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেতাকর্মীদেরকে দুর্নীতিমুক্ত করার অভিযান চালাচ্ছেন। যেভাবে অন্যায়-অনিয়ম অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। ক্যাসিনো থেকে শুরু করে নানান অবৈধ এবং অসামাজিক বিষয়গুলোর সঙ্গে নিজ দলের নেতাকর্মীদের ছাড় দিচ্ছেন না।

তিনি (শেখ হাসিনা) পরিষ্কার বলে দিয়েছেন ‘আমি কোন দলের নেতাকর্মী ও ব্যক্তির পরিচয় কিছুই দেখবো না। যিনি অপরাধ করবেন, তিনি শুধু অপরাধী হিসেবেই বিবেচিত হবেন। আইন আছে, আইন অনুযায়ী বিচার হবে।’ কঠোর ভাবে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এটা কিন্তু একটা ম্যাসেজ। এই ম্যাসেজ যে বুঝবে, ধারণ করতে পারবে, আত্মউপলব্ধিতে নিতে পারবে তাদেরই দলের নেতৃত্ব আসা উচিত। যে বুঝতে পারে না, কি চান বঙ্গবন্ধু কন্যা, উনার চোখ দিয়ে উনি কিভাবে বাংলাদেশকে দেখেন, এটা যার বইবার ক্ষমতা নাই, তাদের তো রাজনীতিতে না থাকলেই ভাল; অন্তত নেতৃত্বে না। আমরা এভাবেই ভাবি। এটাই বাংলাদেশের মানুষ চায়। একজন নেতা; একজন শুদ্ধ মানুষ হবে। নৈতিকতা-বোধবিহীন নেতৃত্ব কখনো সফলতা বয়ে আনতে পারে না। যিনি বিবেক বর্জিত সে কেন নেতা হবেন, অন্য কিছু করবে। নেতা তো দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রকে পরিচালনা করবে। রাজনৈতিক সংগঠন তো দেশ জাতির নেতৃত্ব দেয়। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে অসাধু এবং তাদের মানসিকতার মধ্যে দৈন্যতা থাকবে। দুর্নীতি করার প্রবণতা থাকবে, নেতা হওয়ার পর যদি আচরণ-চরিত্র পরিবর্তন হয়ে যায়, তাহলে তাদের নেতা না হলেই ভালো।

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ আর সোনার বাংলা’ এই স্লোগান সাংঘর্ষিক মনে হয় কি-না?
ডা. মুরাদ হাসান:
 প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন। যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখিয়ে গেছেন। তা হলো- বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা। এক কথায় উনি বুঝিয়েছে দিয়েছেন। সোনার বাংলা এই দুটি শব্দের মধ্যে হাজার কোটি অনুভূতি। সোনার বাংলার ব্যাখ্যা, এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এর পরিধি অনেক গভীরে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, আধুনিক, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। ক্ষুধা দারিদ্র সন্ত্রাস দুর্নীতি রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, মাদকমুক্ত বাংলাদেশ। যাহা বলি না কেন সব কথার মূল কথা সোনার বাংলা, এর মধ্যেই সব আছে। আমাদের নেত্রী তো বলেন, ‘আমি নতুন করে কিছু করছি না। আমার পিতা উনি যা করে গেছেন, আমি শুধু সেটাকে কন্টিনিউ করছি, তার স্বপ্নগুলো পূরণ করছি, আমার একটাই দায়িত্ব, আমার এই জীবন দিয়ে পিতার স্বপ্নগুলো পূরণ করে দিয়ে যাবো।’ বঙ্গবন্ধু ৫৫ বছর জীবনে সব স্বপ্ন দেখেছেন, আর কোন স্বপ্ন দেখার মত স্বপ্নবাজ নেই, এটা আমি বিশ্বাস করি— বঙ্গবন্ধু কন্যা হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন ধারণ করেন, বহন করেন। তাঁর (শেখ হাসিনা) চেয়ে পরিশুদ্ধ নেতা, তার চেয়ে সাহসী, প্রজ্ঞাবান, মেধাবী, দূরদর্শী নেতা বঙ্গবন্ধুর পরে এই বাংলাদেশ কোনদিন আসেনি, আর কেউ আসবেও না। এটা আমি বিশ্বাস করি। অলৌকিক ধরনের ক্ষমতা, অলৌকিক পরিশ্রম করা, ধৈর্য্য-সহ্য, উনি যেন দীর্ঘায়ু হোন, শতায়ু হোন। বাংলাদেশকে তার স্বপ্নের তীরে ভীড়িয়ে যেতে পারেন।’

‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কোনও বিকল্প নেই, কেউ চিন্তাও করে না। ৪৮ বছরে দেখেছে মানুষ;  জাতীয় নেতা তো অনেক আছে।  আমি কারো নাম বলব না। তারা তো মানুষের আস্থা, বিশ্বাস, অর্জন করতে পারেনি। এই ৪৮ বছরে পারেনি, আর কবে পারবে? শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর রক্তকেই এ বাংলার মানুষ বিশ্বাস করে। তাদেরকেই সুপ্রিম নেতৃত্বে আসতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির কি কি কাজ করছে?
ডা. মুরাদ হাসান:
  আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যারা সম্মেলনের সকল প্রচার কার্যক্রম করছে। সম্মেলন ঘিরে ইতিমধ্যে ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়েছে। সমস্ত দাওয়াতপত্র, পোস্টারে কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। সম্মেলনে আগত সকল ডেলিগেটস-কাউন্সিলরদের একটি করে পাটের ব্যাগ দেয়া হবে। ব্যাগে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র, আওয়ামী লীগের ইতিহাস, বাংলাদেশের ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবন সম্বলিত বই থাকবে। সরকারের উন্নয়ন অর্জনের পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধীদের জ্বালাও-পোড়াওসহ একটি সিটি থাকবে। ব্যাগে একটি করে পানির বোতল থাকবে। ডায়বেটিকস আছে যাদের তাদের জন্য লজেন্সও থাকবে।

সময় দিয়ে কথা বলার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ডা. মুরাদ হাসান: আপনাকেও ধন্যবাদ।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা