• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

আরাভ খানের স্বর্ণের ঈগলে সোনা নেই ,পুরোই লোহা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৩  

পু’লিশ পরিদ’র্শক মা’মুন হ” মা’লার পলা’তক আ’সামি আ’রাভ খান ওরফে রবিউল ইস’লামের দুবাইয়ের স্বর্ণের দোকানে থা’কা ইগ’লে একটুও সোনা নেই।

লোহা দিয়ে তৈরি করে তাতে সো’নার রং করা হয়েছে। আর ইগ’লটি যে দোকানে রেখে ছবি তোলা হয়, সেটিও আরাভ জুয়ে’লার্স নয়, তাঁর ব’ন্ধু রাসে’লের দোকান।

সেখানে রে’খে ছবি তোলার পর টেলি’ভিশনে কর্ম’রত তাঁর পরি’চিত এক প্র’বাসী সাংবাদি’কের মাধ্যমে পরিকল্পি’তভাবে ‘৬০ কেজি সোনা দিয়ে তৈ’রি ইগ’লে খর’চ প্রায় ৪২ কোটি টাকা’—এমন ত’থ্য ছড়িয়ে দেন আ’রাভ। মূ’লত আলো’চনা’য় থাকতে এ কাজটি করেন তিনি।

দুবাইয়ে আজ’কের পত্রিকার অনুস’ন্ধা’নে এমন তথ্য উঠে এসেছে। জানা যায়, ১৫ মা’র্চ রাসে’লের দোকানে রেখে ছবি তো’লার পর চার’জনে ধ’রাধ’রি করে ইগ’লটি নিউ গো’ল্ড সুক এলা’কার ৫ নম্বর ভবনে আ’রা’ভের দো’কানের সামনে রা’খেন।

ওই চা’রজন হলেন শরী’ফ শাহ, সাকিব, রাফসান ও শাহেদ। আরা’ভের খালি দোকান খু’লে রাখা হয়, মানুষ যা’তে ছবি তু’লে সামা’জিক যো’গা’যোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারে। দো’কানটি’তে কোনো সো’না নেই।

দেশ-বিদে’শে বাংলা’দেশি’দের মধ্যে আলো’চনার জ’ন্ম দে’ওয়া আ’রাভ জুয়ে’লার্সে ঢুকে ১৯ মার্চ স’কালে ইগ’ল’টি ধরে দেখার সুযোগ হয়। এর সামনের অং’শে কিছুটা ফি’নি’শিং থাকলেও বা’কি অংশ দেখে ফাঁ’কির বিষ’য়টি সহ’জেই

বো’ঝা যায়। বেলা পৌনে চা’রটার দিকে আ’রাভ এসে দোকা”নের সামনে সিঁ’ড়ি’তে বসে মোবা’ই’লে কথা বলার সময় এই প্র’তি’বেদক পা’শে বসেন।

নানা ক’থার ফাঁ’কে ইগ’ল’টি পু’রোটা সো’নার তৈরি কি না, জান’তে চাই’লে মু’চকি হেসে তিনি বলেন, ‘আপ’নার কি কোনো স’হ আছে? নকল হলে কি এটি নিয়ে আন্ত’র্জা’তিক পর্যা’য়ে আ’লোচ’না হতো?’

এ সময় রি’পন না’মের এক’জন এসে ফ’রিদপু’রের এক’জন প্রভা’বশা’লী সংসদ সদস্য ক’থা বলবেন বলে আ’রাভ’কে ফোন ধরি’য়ে দেন। তিনি ফোন কানে নিয়ে হেঁ’টে হেঁটে কথা বলতে থাকেন। আরাভের সঙ্গে আর কথা হয়নি।

স’ন্দেহ দূর না হওয়ায় আরাভ জুয়েলার্সের ত’ত্ত্বাবধা’য়ক ইউসুফ ও শাহেদ আহমেদের সঙ্গে পরিচয় গো’পন করে কথা হয়। তবে তাঁরা ইগল সম্পর্কে বেশি তথ্য দিতে পারেননি। পরদিন ২০ মার্চ বেলা ১১টা থেকে সেখানে গিয়ে কয়েকবার ই’গলটি ধরে খুঁটি’নাটি দেখার সুযোগ হয়।

দুপুরে দোকানে আরাভের ব্যবসায়িক অং’শীদার রাফসান জামির সঙ্গে ইগ’লের বিষয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, আরা’ভের দুই বন্ধু রাসেল ও শরীফ শাহ ইগল

তৈ’রির বিষয়ে বলতে পারবেন। শুরু হয় ওই দুজনের জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত অ’পেক্ষা। কিন্তু পরি’স্থি’তির কারণে তাঁরা আরাভ জুয়েলার্সে আসেননি।

দেখা মেলে রাসেলের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার ফেনীর ইব্রাহি’মের। রাসেলের ফোন নম্বর চাইলে তিনি দেননি। তাড়া থাকার অজুহাতে চলে যাওয়ার সময় তিনি মনির নামের এক’জনের সঙ্গে কথা বলেন।

মনিরের দ্বারস্থ হয়ে পাওয়া যায় রাসেলের মোবাইল নম্বর। ফোন করে স্বর্ণ ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে দেখা করার কথা বললে প্রথমে রাজি হননি। বলেন, আরাভ ইস্যুতে খুব চাপে আছেন। যা বলার ফোনে বলতে বলেন। পরে ব্যবসার আকার বড় জেনে দেখা করতে রাজি হন।

প্রথমে হায়াত রি’জেন্সি এলাকায় যেতে বললেও পরে রাত সাড়ে আ’টটার দিকে গোল্ড সুক এলাকার জয়ালুকাস জুয়ে’লার্সের মোড়ে রাসেলের দেখা মেলে। সঙ্গে আ’রও দুজন। পরিচয় পর্বে জানা গেল, লাল টি-শার্ট পরা ব্যক্তি শরীফ শাহ। কথা শুরু হয় সোনার ব্যবসা নিয়ে।

আরাভ প্রসঙ্গ উঠতেই শরীফ শাহ প্রকাশ করেন ইগল তৈরির কাহিনি। বলেন, তিনি মূলত শাকসবজি ও ফলমূলের ব্যবসা করেন। আরাভ খানের সঙ্গে বছর চারেক আগে তাঁর পরিচয়।

বছরখানেক ধরে আরাভ সোনার ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। একপর্যায়ে ওই দোকান ভাড়া নেন। দোকানটি আলোচনায় আনতে আরাভের মাথা থেকেই ইগল দিয়ে লোগো আর পাখি তৈরির বুদ্ধি আসে। প্রথমে ৫০ কেজি ওজনের বানানোর কথা ছিল। সেখানে কেজি দেড়েক সোনা দেওয়ার কথা ছিল।

পরে কোনো সোনা দেওয়া হয়নি। এটি তৈরির পর দোকানে আনার সময় দেখেন ওজন ১০০ কেজি হয়ে গেছে। কিন্তু ওজন কমানোরও সময় ছিল না। কারণ, সাকিবের (ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান) শিডিউল চলে এসেছে।

শরীফ ও রাসেলের সঙ্গে যেখানে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল, এর একটু সামনেই রাসেলের মালিকানাধীন এনআরআই (নজরুল-রাসেল-ইব্রাহিম) জুয়েলার্স। হাঁটতে হাঁটতে সেখানে নিয়ে যান রাসেল।

জানালেন, তিনি ও তাঁর বন্ধু’রা মিলে দুবাইয়ে তিনটি ও শারজায় একটি সোনার দোকান দিয়েছেন। একপর্যায়ে রাসেলের দোকানের ১০০ গজের মধ্যে একটি রেস্টুরেন্টে বসে আলাপ শুরু হয়। শরীফ ও সঙ্গে থাকা অপর ব্যক্তি বিদায় নেন।

রাসেলের সঙ্গে আলোচনায় আবারও আসে ইগল প্রসঙ্গ। আরাভের ওপর কিছুটা বির’ক্তি প্রকাশ করে রাসেল তাঁর মোবাইলের পর্দা দেখিয়ে বলেন, ‘এই দেখেন আজ (২০ মার্চ) সকালে সে আমার কাছে অনেক অনুরোধ করে সোনার একটা বার নিয়েছে।

৬০ কেজি দূরের কথা, তার যদি এক কেজি সোনা থাকত, তাহলে আমাকে এভাবে হাতে-পায়ে ধরে একটা ধার নেয়? আপনারাও পারেন ভাই। এখানে (ইগলে) এক ই’ঞ্চি সোনাও নেই।’

রাসেল বলেন, ‘আমার দোকানে ইগলটি রেখে সে (আরাভ) কয়েকটা ছবি তোলার কথা জানায়। কারণ, ওর দোকানে কোনো সোনা নেই। দেশ (বাংলাদেশ) থেকে যারা এসে ব্যবসা করার আগ্রহ দেখায়, আমি তাদের সাধারণত সাহায্য-সহযোগিতা করি।

আর আরাভ তো আমার বন্ধু। কিন্তু পরিচয়ের পর থেকে তার সবকিছুতে শুধু মিথ্যা আর মিথ্যা।’ ঘড়ির কাঁটা রাত ১১টা ছুঁই ছুঁই দেখে উঠে পড়েন রাসেল

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা