• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

খালিশপুরে শহিদুল হত্যা মামলার সকল আসামি খালাস

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২২  

উপযুক্ত স্বাক্ষীর অভাবে নগরীর খালিশপুর এলাকার আলোচিত শহিদুল হত্যা মামলায় সকল আসামিদের খালাস দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৪ জুলাই) খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নুরু ওরফে ভাঙ্গারী নুরু, কালা সুমন, হেনা বেগম ওরফে কোটো, মো: জাহাঙ্গীর, মো: শহিদুল ইসলাম ওরফে সুন্দর শহিদুল, মো: জয়নাল, মো: ইয়াছিন, সবুজ ও ছোট বাবু ওরফে রেজওয়ান বাবু।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিহত শহিদুল খালিশপুর থানার একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। ২০১২ সালের ২০ মার্চ আদালতে হজিরা দিতে আসেন। এরপর তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। দুপুর ২ টার দিকে খালিশপুর খালিশপুর চিত্রালী সিনেমার কাছে পৌছান। এ সময়ে হেনা বেগম ওরফে কোটো তার রিক্সার গতিরোধ করে।

অন্যান্য আসামিদের দেখে নিহত শহিদুলের সহযোগী রিক্সা থেকে পালিয়ে যায়। আসামি শহিদুল ওরফে সুন্দর শহিদুল জয়নাল ইয়াছিন, সবুজ ও ছোট বাবু ভিকটিমের জামার কলার ধরে রিক্সা থেকে নামিয়ে রাস্তার ওপর ফেলে দেয় ও চারিদিক ঘিরে ফেলে।

অন্যদিক থেকে আসা অপরাপর সন্ত্রাসী নুরু ওরফে ভাঙ্গারী নুরু, শাহ আলম, কালা সুমন ও জাহাঙ্গীর রাম দা দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে। ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এ ব্যাপারে নিহতের বড় ভাই মো: নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১১ জন আসামির নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন (নং ১৯)।

মামলায় তিনি আরও উল্লেখ করেন ভাই হত্যাকান্ডের এক বছর আগেও একই সন্ত্রাসীরা খালিশপুর পৌর মার্কেটের সামনে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় একই আসামিদের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

যে কারণে শহিদুলকে হত্যা করা হয়

অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, খালিশপুর এলাকার মো: জয়নালের ছেলে সালেহ আহমেদ খুন হয়। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন কাশিপুর হামিদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া সোনামিয়ার ছেলে শহিদুল। তাছাড়া ভিকটিম ও হত্যাকান্ডের আসমিরা ছিলেন পরস্পরের আত্মীয় ও ঘনিষ্টজন। সালেহ আহমেদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে আসামিরা এ হত্যাকান্ডটি ঘটায়। ঘটনার দিন শহিদুল ও তার সহযোগী মনিরুল ইসলাম একত্রে একটি রিক্সাযোগে চিত্রালী সিনেমার সামনে মহিদের রুটির দোকানের পশ্চিম পাশে যাওয়া মাত্র সন্ত্রাসীরা তাকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভবে জখম করে। সেখানে তার মৃত্যু হয়। তবে খালিশপুর এলাকায় চাউর (প্রকাশ) আছে সালেহ আহমেদ হত্যা মামলার আসামী ছিল শহীদুল।

প্রকাশ্য দিবালোকে হাজার হাজার মানুষের সামনে তাকে দৃর্বৃত্তরা কোপাতে থাকলেও সেদিন কেউ এগিয়ে আসেনি। সহযোগী মনিরুল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঘটনার বিবরণ দিলেও বিচার চলাকালীন আদালতে সবকিছু অস্বীকার করেছে। ঘটনার সময় সে শহীদুলের সাথে উপস্থিত ছিল না বলে আদালতকে জানিয়েছে। মামলার বাদী নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি উপস্থিত মানুষের কাছ থেকে শুনে আদালতে স্বাক্ষী দিয়েছেন।

ভিকটিমের ছেলে আদালতকে জানায়, শুনেছি ৮ বছর আগে তার বাবার মৃত্যু হয়। নুরুদের সাথে বাবার বিরোধ ছিল এ কারণে তাকে হত্যা করা হয়। নিহতের অপর ভাই আদালতে একই স্বাক্ষ্য দেয়।

রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে ২৫ জন স্বাক্ষীকে উপস্থিত করেন। কিন্তু পরস্পর বিরোধী স্বাক্ষ্য হওয়ায় এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেন আদালত।

২০১৩ সালের ৩১ অক্টেবর নগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক কেএম শওকত হোসেন উল্লেখিত আসামিদের অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা