• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

,২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভা,যশোরে সাজ সাজ রব, উৎসবের আমেজ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২২  

শহর জুড়ে ব্যস্ততা। কেউ দেয়াল রঙ করতে ব্যস্ত, কেউবা প্লাস্টার করতে। আবার কেউ কেউ সড়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর রঙ করতে ব্যস্ত। তৈরি করা হচ্ছে তোরণ, অভ্যর্থনা গেট। সব তোড়জোড় চলছে আগামী ২৪ নভেম্বরের দিনটিকে ঘিরে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরে আসছেন। তিনি যশোর শামসুল হুদা স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নেবেন। 

প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি ও কর্মযজ্ঞ চলছে দলীয় ফোরাম এবং প্রশাসনে। স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে নৌকার আদলে মঞ্চ  তৈরির কাজ। যশোর জুড়ে চলছে সাজ-সজ্জার কাজ। সাজানো হয়েছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর। সব মিলিয়ে যশোরে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। 

শুক্রবার যশোর শহরের মুজিব সড়ক, সিভিল কোর্টের মোড়, শহিদ সড়ক, দড়াটানা মোড়, পুলিশ লাইন্স, বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। 

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, যশোরে স্মরণকালের বৃহৎ জনসমাবেশ ঘটাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জনসভায় ৫ লাখ মানুষের সমাগমের টার্গেট রয়েছে। সমাবেশস্থলে জায়গা বাড়াতে স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের গ্যালারি ভেঙে ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ মাঠের সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। জনসভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ও আশপাশের জেলার নেতা-কর্মীরা অংশ নেবেন। ফলে নিরাপত্তা জোরদার, ট্রাফিক ব্যবস্থা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে।

জেলা আওয়ামী লীগ ও ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জনসভা সফল করতে আ’লীগের ৮টি উপ-কমিটির নেতৃবৃন্দ নানামুখী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আ’লীগ নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ইতোমধ্যে বিশাল এই গণজমায়েতের জন্য বাস, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস মিলিয়ে ৫ হাজার যানবাহন আসা ও পার্কিংয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে ট্রাফিক বিভাগ। চার হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ১০টি স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এমপি-মন্ত্রীদের জন্য ৪টি স্পট, অন্য ভিআইপিদের জন্য ১টি স্পট ও আ’লীগ নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের বাস, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস পার্কিংয়ের জন্য আরও ৫টি পার্কিং এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে সীমানা বাড়ানো হবে। জনসভার দিন শহরে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শহরের অংশ হেঁটেই সবাইকে চলাচল করতে হবে। আর হেঁটে চলাচলের জন্যও একটি রোডম্যাপ করা হচ্ছে।

এদিকে যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় প্রথমবারের মতো আসছে দেশের ঐতিহ্যবাহী কলরেডি কোম্পানির মাইক। জনসভার ভাষণ প্রচারে গোটা শহর জুড়ে থাকবে এই কোম্পানির প্রায় ৩০০ মাইক। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে কোম্পানির মাইকে ভাষণ দিয়ে জাতিকে জাগ্রত করেছিলেন, সেই কলরেডির মাইকে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। নিখুঁত সাউন্ড সিস্টেম পেতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে আ’লীগ নেতারা জানিয়েছেন।

যশোর পুরাতন কসবা এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক মোঃ বাবলু বলেন, যশোর শহরের সবখানে সাজানো হচ্ছে। রাস্তা-ঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। পুরাতন দেয়ালগুলো প্লাস্টার ও রঙ করা হচ্ছে। সুন্দর লাগছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসবেন বলে সাজানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যেন প্রতিবছর একবার যশোরে আসেন। তাহলে সব সময় এমন থাকবে যশোর শহর।

যশোর দড়াটানা মোড়ে কথা হয় মকবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, শহরের সব জায়গায় সাজ সাজ রব। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে এই সাজসজ্জা করা হচ্ছে। খুবই ভালো লাগছে।

যশোর জেলা ইজিবাইক শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম কচি বলেন, দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী যশোরে আসছেন। আমাদের আনন্দের শেষ নেই। যশোরকে সাজানো হয়েছে। খুব সুন্দর লাগছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে রবিবার (২০ নভেম্বর) ইজিবাইক শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকে ইজিবাইক সহকারে আনন্দ শোভাযাত্রা করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

যশোর পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গনী খান পলাশ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে যশোর নান্দানিক রূপে সাজানো হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি ভবনগুলো রঙ করা হচ্ছে। বিশেষ করে পৌরসভার প্রত্যেকটি রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে।

যশোর মহিলা আ’লীগের সভাপতি লাইজু জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সংগঠনের ন্যায় মহিলা আওয়ামী লীগও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মহিলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় প্রায় ৫০ হাজার নারী যোগদান করবে বলে আমরা আশাবাদী। এছাড়া প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে নারীরা দল বেঁধে আসবেন।

যশোর পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। শনিবার (১৯ নভেম্বর) থেকে জেলা শহরসহ প্রত্যেকটি উপজেলা ও ইউনিয়নে মাইকে প্রচার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু যে স্থানে জনসভা করেছিলেন, ঠিক সেই স্থানে বঙ্গবন্ধু কন্যা জনসভা করবেন। এর মাঝে কোনো রাজনৈতিক দল সেখানে জনসভা করেনি। ২৪ নভেম্বর বৃহত্তর যশোর জেলা থেকে আগত নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হবে এ জনসভাস্থল। এদিন প্রায় ৫ থেকে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

যশোর জেলা আ’লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, জনসভার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। স্টেডিয়ামে নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) থেকে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। জনসভায় ৫ লাখ মানুষের সমাগমের টার্গেট করা হয়েছিল। কিন্তু এখন দেখছি ১০ লাখের মতো মানুষ জনসভায় অংশ নেবে। সার্বিক নিরাপত্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, জনসভা উপলক্ষে যেসব তোরণ নির্মাণ করা হবে, তাতে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি থাকবে। যারা গেট বানাবেন, ব্যানার দেবেন তাদের শুধু নাম থাকবে।

যশোর ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান বলেন, ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভার দিন ট্রাফিক পুলিশ অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি তৎপর থাকবে। শহরে যাতে কোনো যানজটের সৃষ্টি না হয় এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হবে। এছাড়াও বাইরের জেলা বা উপজেলা থেকে যেসকল বড় যানবাহন আসবে সেগুলোকে শহরের বাহিরে রাখতে বলা হবে। বড় যানবাহন শহরে প্রবেশ করলে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা