• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

আজকের খুলনা

উপকূলীয় এলাকার নদীগুলো পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে:সিটি মেয়র

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১ অক্টোবর ২০২৩  

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত নেওয়া সরকারের গৃহীত সকল প্রকল্প ও কৌশল প্রণয়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের অভিজ্ঞতা এবং মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। কেন না তারাই এলাকার ভালো-মন্দ বোঝেন। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার সাধারণ মানুষের লোকায়ত জ্ঞান এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকার রাখতে পারে। 
তিনি সুন্দরবনকে রক্ষার কথা উলে­খ করে বলেন, সুন্দরবন রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাঘব বোয়ালরা পেছনে না থাকলে গাছ কেউ কাটতে পারে না। উপকূলীয় এলাকার নদীগুলো পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদী মাতৃক দেশ এ গর্ব আমরা ধরে রাখতে পারেনি। উপকূলীয় এলাকার ভেড়িবাঁধ প্রকল্প নেওয়া হয় ‘৬০-এর দশকে। তখন হয়তো কোনো বাঙালি কর্মকর্তা সেখানে ছিল না। তাছাড়া তখন নদীগুলোর নাব্যতা অনেক বেশি ছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সে প্রকল্প এখন মুখ থুবড়ে পড়ছে। এসব এলাকার স্লুইচ গেটগুলো ফসল ফলানোর চেয়ে মাছ চাষে বেশি ব্যবহার হওয়ায় আজ পরিবেশ-প্রতিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

সিটি মেয়র শনিবার বেলা ১১টায় নগরীর একটি হোটেল বেসরকারি সংস্থা এ্যাওসেড আয়োজিত পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।

এ্যাওসেডের নির্বাহী পরিচালকার শামীম আরেফিনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এড. আমিরুল ইসলাম মিলন, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মুশতাক আহমেদ রবি ও খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু। বক্তৃতা করেন পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইকবাল মন্টু, কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম, মোংলা পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, দাকোপ পৌরসভার প্যানেল মেয়র হাসিনা বেগম, দাকোপের লাউডোব ইউপি চেয়ারম্যান শেখ যুবরাজ, তালাল খলিল নগর ইউপি চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবুল, পাইকগাছার দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল, মোংলার চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন, শরণখোলার সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন রাজিব প্রমুখ।
বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য এড. আমিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বে পরিবেশের উপর সবচেয়ে কম ক্ষতি করে বাংলাদেশ। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি বাংলাদেশ। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খুলনা, বাগরেহাট ও সাতক্ষীরা জেলার মানুষ। যে কারণে এই এলাকায় খরা, জলোচ্ছ¡াস ও লবণাক্ততার মতো দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হচ্ছে কৃষকদের।
সংসদ সদস্য মীর মুশতাক আহমেদ রবি বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার সুন্দরবন রক্ষায় মন্ত্রণালয় স্থাপন করেছে। কিন্তু আমরা পারেনি। তিনি সুন্দরবন রক্ষা সুন্দরবন উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবি জানান। একই সঙ্গে বর্তমান স্লুইচ গেটগুলো পরিবর্তন করতে হবে।
সংসদ্য আক্তারুজ্জামান বাবু পরিবেশের বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করে বলেন, এক শ্রেণির দুষ্টু লোক নেপথ্যে থেকে সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগ করছে। তিনি বলেন, প্রশাসনের কিছু দুষ্টু লোক আছে, যারা টেকনিক্যাল বিভাগে রয়েছে। তারা সময় মতো পদক্ষেপ না নিয়ে ১ টাকার কাজ ২০ লাখ টাকায় নিয়ে যায়। যা নদী ভাঙন ও বেভিবাঁধ প্রকল্পে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকার পানি ও মাটির প্রবাহ, প্রকৃতি নিয়ে দেশে এখনও কোনো গবেষণা হয়নি। এটি এখনই দরকার।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, শুধু শহর নয় পরিবেশ রক্ষায় এখন গ্রামীণ জনপদেও বর্জ্য ব্যবস্থার সঠিক নীতিমালা ও বাস্তবায়ন করতে হবে। স্থানীয় অসচেতন মানুষ জৈব, রাসায়নিক, প্লাস্টিক ও ই বর্জ্য যেখানে সেখানে ফেলছে। যা পরিবেশের জন্য হুমকি এবং ভূমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে।
সভার শুরুতে এ্যাওসেডের নির্বাহী পরিচালক শামীম আরেফিন এ বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে যে সব নীতিমালা, কৌশল আছে তার বিশদ বিবরণ পাওয়ার পয়েটেন্ট উপস্থাপন করেন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা