• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাই পারফরমেন্সের তালিকায় খুমেক হাসপাতাল

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২১  

খাতা কলমে পাঁচশ’ শয্যার হাসপাতাল। চিকিৎসক রয়েছে সৃষ্ট পদের অর্ধেক। আর প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকছেন ১৪শ’ এর বেশি। বহির্বিভাগেও প্রতিদিন অন্তত ১২শ’ রোগী সেবা নিচ্ছেন। সীট পেরিয়ে বারান্দা, প্যাসেস, চলাচলের রাস্তা এমনকি পরিচালক-এর কার্যালয়ের সামনের ফ্লোরে সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। একদিকে চিকিৎসক নার্স সংকট, অন্যদিকে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ রোগী নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল প্রশাসন। এরপরও সেবার মানে দেশের অন্যতম সেরা এই হাসপাতালটি তাদের প্রাপ্তিতে যোগ হয়েছে নতুন একটি পালক। স¤প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাই পারফরমেন্স গ্রিন ফ্যাসিলিটিজ হাসপাতালের তালিকায় যোগ করেছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। দিনরাত পরিশ্রম করে কাজের স্বীকৃতি পেয়ে খুশি থাকলেও সেবা নিয়ে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের প্রশাসনিক দফতর থেকে পাওয়া তথ্যমতে, খুমেক হাসপাতালে পরিচালক, উপ-পরিচালকসহ সৃজিত পদ সংখ্যা ২৮৫। পূরণ হয়েছে ১৩৫টি পদ। ফাঁকা রয়েছে ১৫৮টি পদ। এর মধ্যে রেজিস্ট্রার ৪২টি পদের মধ্যে ১৭টি, মেডিকেল অফিসার ৮৮টি পদের মধ্যে ৫১টি, সহকারী রেজিস্ট্রার ৯১টি পদের ৪৮টি, এনেস্থেসিওলিস্ট ১৬টি পদের মধ্যে ১৪টি উলে­খযোগ্য পদ শূন্য। এ বিশাল শূন্য পদ নিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন কর্তৃপক্ষ। 
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মচারী সংকট অনেকাংশে সমাধান হলেও এখনো চিকিৎসক সংকট প্রকট। তবে ধারণ ক্ষমতার প্রায় তিনগুণ রোগী ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। চিকিৎসা পাওয়ার আশায় হাসপাতালের বারান্দা, চিকিৎসকের চেম্বার, লিফটের সামনে থেকে শুরু করে বাথরুমের দরজা পর্যন্ত সর্বত্র রোগী। মহানগরসহ খুলনা জেলার নয়টি উপজেলার পাশাপাশি বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, যশোরের রোগীরাও এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। যে কারনে রোগীর চাপ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। 
হাসপাতালের বর্হিবিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায় প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২শ’ রোগী বহির্বিভাগে প্রতিদিন সেবা নিতে আসে। খুলনাসহ আশে-পাশের জেলা থেকে আসা রোগীরা সেবা নিয়ে চলে যায়।
সূত্রমতে, হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগেও চিকিৎসক সংকট চরমে। কলেজে সহকারী অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন শিক্ষক (চুক্তিভিত্তিক) থাকলেও হাসপাতালে তার কোনো পদচারণা নেই। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ের ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ময়নাতদন্ত। আর প্রতিবেদন তৈরিতে দেখা দিয়েছে ধীরগতি। ফরেনসিক বিভাগের মতো সার্জারি, অর্থপেডিক ও বার্ন ইউনিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোতেও চরম চিকিৎসক সংকট।
হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ রবিউল হাসান এ প্রতিবেদককে বলেন, চিকিৎসক পদায়নের বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। আমরা প্রতি মাসেই চাহিদা দিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করি। ওপর মহলও সেটা দেখেন। আমরা চেষ্টা করছি রোগীরা যাতে নির্বিঘœ সেবা পায় সেটা নিশ্চিত করতে। সারা দেশের হাসপাতালগুলোর মধ্যে আমরা এখন পর্যন্ত নিজেদের সেরা অবস্থানটা ধরে রাখতে পেরেছি। তবে চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি না পেলে সেটা ধরে রাখা আর কত দিন সম্ভব হবে সেটা ভেবে অস্থির কর্তৃপক্ষ। 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা