• বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

৭ ডিসেম্বর শত্রু মুক্ত হয় সাতক্ষীরা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০১৯  

পাকিস্থানী পতাকায় অগ্নি সংযোগ এবং অস্ত্রলুট ও ব্যাংক অপারেশন করে সংগৃহীত অর্থ নিয়ে ৭১ এর মার্চে সাতক্ষীরার দামাল সন্তানরা মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিল তারই সফল সমাপ্তি ঘটে ৭ই ডিসেম্বর। 

১৯৭১ এর এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমূখী আক্রমনের মুখে দখলদার পাকবাহিনী সাতক্ষীরা ছাড়তে বাধ্য হয়। ঐ দিন বীরের বেশে এই মাটির সন্তানরা বাংলাদেশের অর্জিত লাল সবুজের পতাকা কাধে নিযে স্বগৌরবে সাতক্ষীরায় বাংলার পতাকা উত্তলোন করে চুমু খেয়েছিল মাটিতে। আজ সেই ৭ই ডিসেম্বর সাতক্ষীরা হানাদার মুক্ত দিবস। 

বিজয়ের গৌরবে ৭১ এর এই দিনে যুদ্ধাহত মানুষ আনন্দে উচ্ছেলিত হয়ে পড়েছিল। দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে  সেদিনের সাহসী সন্তনরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। 

মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোন সেক্টর গড়ে ওঠেনি তখনও। পরবর্তীতে গড়ে ওঠা ৯ম আর ৮ম সেক্টরেরর সাতক্ষীরার ভোমরা ছিল প্রথম ক্যাম্প। এখানেই সূচনা লগ্ন থেকে একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গড়ে উঠেছিল তৎকালীন ই.পি আর দের সহযোগিতায়। আর ওখানেই ২৯ এপ্রিল পাক বাহিনীর সাথে তরুণ নবীন মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টা উভয় পক্ষের গুলি বিনিময়ে পাক বাহিনী হারিয়েছিল তাদের কয়েকজন সেনাকে। আর দুই দফার যুদ্ধে শহীদ হয়েছিল তিন বীর যোদ্ধা। 

সাতক্ষীরার মুক্তিযোদ্ধাদের দেশাত্মবোধ আর বীরোচিত যুদ্ধের ফলশ্রুতি হিসাবে ৭১ এর নভেম্বরে শ্যামনগর কালিগঞ্জ শত্রু মুক্ত হয়। অন্যদিকে ৭ই ডিসেম্বর মুহিদ খান দুলুর নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী যোদ্ধাদল ধুলিহর ইউনিয়নের বেজেরডাঙ্গায় তখনও গেরিলা অপারেশনের পরিকল্পনা করছে। এরই মধ্যে খবর এলো পাক বাহিনী সাতক্ষীরা ছাড়তে শুরু করেছে। ক্ষিপ্রবেগে এই দলটি চলে আসে সাতক্ষীরা শহরে। ক্যাম্প করলেন পিএন হাই স্কুলে। এফ এফ (ফিডম ফাইটার) ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাষ্টার ও হুদার নেতৃত্বে আর একটি দল ঢুলে পড়ে সাতক্ষীরা শহরে। তারা থানা, ডাক বাংলো, পিটিআইতে ঘাটি গড়ে। 

এদিকে বীর যোদ্ধা আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে আরও একটি দল এবং মুজিব বাহিনীর বীর যোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু, আবু নাছিম ময়না, মুস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে অবস্থান নেন সাতক্ষীরা শহরে। এই ত্রিমুখী আক্রমনের পালা আসতে না আসতেই খবর এলো পাকবাহিনী ও দোসররা ভয়ে পিছু হটছে। বিজয় গৌরবে কাধে পিঠে অস্ত্রের বোঝা আর ট্রিগারে আঙ্গুল রেখে যোদ্ধারা সদর্পে পুনঃদখল করলেন তাদের প্রিয় মাতৃভূমি। 

এদিকে ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা ঐতিহাসিক শত্রুমুক্ত দিবসটি উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ড এর পক্ষ থেকে সমাবেশ, শহরে আনন্দ র‌্যালিসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়ে থাকে

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা