• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

৪২টি সাইক্লোন সেল্টারের নির্মাণ কাজ শেষের দিকে

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

উপকূলীয় জেলা ভোলার ৭টি উপজেলায় ২২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪২টি সাইক্লোন সেল্টারের নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। ‘বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়ণ প্রকল্প’র মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর অধীনে এসব স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ কাজের ৬৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে প্রতিটি সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ শেষ করা হবে। বিশ্ব ব্যাংক’র অর্থায়নে আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলোর নিচতলা ফাঁকা রেখে তৃতীয় তলা পর্যন্ত করা হচ্ছে। দুর্যোগকালীন সময়ে প্রতিটি কেন্দ্রে ২ হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে করে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় লাখো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক বাসস’কে বলেন, ভোলা উপকূলীয় জেলা হওয়াতে এখানে সাইক্লোন সেল্টার অতি গুরুত্ব বহণ করে। দুূর্যোগের সময় এসব আশ্রয় কেন্দ্রই হয়ে উঠে সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল। প্রতিটি কেন্দ্র বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার হিসেবে ব্যবহার করা হবে। অর্থাৎ সারা বছর এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহার হবে। আর দুর্যোগের সময় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। কাজের শতভাগ গুণগত মান বজায় রাখার জন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ সম্পন্ন হলে দুর্যোগের আতংক অনেটাই কমে আসবে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

এলজিইডি সূত্র জানায়, এসব সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ কাজ ২০১৭ সালের মার্চ মাসে শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৯টি, দৌলতখানে ৩টি, বোরহানউদ্দিনে ২টি, লালমোহনে ৭টি, তজুমুদ্দিনে ৫টি, চরফ্যাসনে ১০টি, দ্বীপ মনপুরা উপজেলায় ৬টিসহ মোট ৪২টি রয়েছে। অত্যাধুনিক ডিজাইনের এসব সাইক্লন সেল্টারে সরাসরি অসুস্থ রোগীকে র‌্যামের মাধ্যমে দোতালায় উঠানো, গরু-ছাগল রাখা, বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ সব ধরণের আধুনিক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, এসব সাইক্লোন সেল্টারে জলোচ্ছাসের সময় পানি সহজে সরে যাওয়ার জন্য নিচতলা ফাঁকা রাখা হয়েছে। এছাড়া দুূর্যোগের সময় এখানে মানুষ, গবাদি প্রাণী, গুরুত্বপূর্ণ জিনিস-পত্রসহ অবস্থান করতে পারবেন। সরকারের নতুন এসব আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনে দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ তৈরিতে সহায়তা করবে।

জেলা ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি’র উপ-পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন মিয়া বাসস’কে জানান, জেলায় বর্তমানে ছোট বড় মিলিয়ে চার শর বেশি সাইক্লোন সেল্টার রয়েছে। দুূর্যোগ মুহূর্তে এসব কেন্দ্রে চার লাখেরও বেশি মানুষ অবস্থান করতে পারে। এসব সেল্টারের অবস্থাও বেশ ভালো। তাই নতুন ৪২টি সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ এ অঞ্চলে দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় অনেক কাজ দেবে। তবে আমাদের চরাঞ্চলগুলোতে আরো সাইক্লেন সেল্টার নির্মাণ প্রয়োজন বলে তিনি জানান।

শাহাবুদ্দিন মিয়া আরো জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষ দিন দিন সচেতন হচ্ছে। দুূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষ আগাম সতর্কতা সংকেত পাচ্ছে। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমানও অনেক কম হচ্ছে বর্তমানে।

জেলা রেডক্রিসেন্ট’র সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম মনে করেন, জেলায় নতুন ৪২টি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ সরকারের একটি সঠিক সিদ্ধান্ত। কারণ এখানকার মানুষকে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোরে সাথে লড়াই করতে হয়। তাই নদী তীরবর্তী এলাকায় সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ আমাদের অন্যতম প্রধান দাবি ছিলো। আর সাইক্লেন সেল্টার হলো ঝড়ের সময় অন্যতম প্রধান নিরাপদ স্থান। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আরো বলেন, দুর্যোগের সময় সকল টিউবয়েল পানির নিচে তলিয়ে যায়। তাই সাইক্লোন সেল্টারগুলোতে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে বিশুদ্ধ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা