• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

সেই ক্যাসিনো সম্পর্কে কিছুই জানতেন না মেনন

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস ক্লাবের অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হযেছে এর মালিক যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। ক্লাবটির গভর্নিং বডির চেয়াম্যান হলেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

ক্লাবটিতে ক্যাসিনোর আদলে জুয়ার আসর চালানোর অভিযোগে অভিযান চালিয়ে বুধবার হাতেনাতে ১৪২ জনকে আটক করে র‌্যাব। এ বিষয়ে ক্লাবটির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন এমপি বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ক্যাসিনো সম্পর্কে কিছুই জানতাম না, ক্যাসিনো চলছে কিনা তা দেখভাল করা গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

মেনন বলেন, এলাকার সংসদ সদস্য হিসেবে আমাকে ইয়ংমেনস ক্লাবের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। এলাকার কোথায় কী ঘটছে তার খবর রাখার দায়িত্ব সংসদ সদস্যের নয়, পুলিশের।

তিনি বলেন, আমি জানি ইয়াংম্যানসের ফুটবল টিম আছে। ক্রিকেট খেলে। আমাকে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সেখানে একদিন নিয়ে যায় এবং বলা হয়, আপনি ক্লাবের চেয়ারম্যান হবেন। আমি বলেছিলাম, ঠিক আছে। ব্যস ওইটুকুই। আমি এর পর আর কখনও সেখানে যাইনি।

ক্লাবের ভেতরে জুয়াখেলার বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার আগে থেকেই এ বিষয়ে জানে। এছাড়া পুলিশ তো এটা ভালো করেই জানে। তারা এতদিন ব্যবস্থা নেয়নি কেন?

বুধবার রাতে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় ইয়ংমেনস ক্লাবের নিষিদ্ধ জুয়ার ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়ে ১৪৫ নারী-পুরুষকে আটক করেছে র‌্যাব। এদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। ক্যাসিনোতে মদ আর জুয়ার বিপুল সরঞ্জামের পাশাপাশি প্রায় ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ক্লাবটির সভাপতি যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। অনেক দিন ধরে এখানে জুয়াসহ নানা অপকর্ম চলছিল। সাম্প্রতিককালে অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার পর বুধবার অভিযান পরিচালিত হয়। ইয়াংমেনস ক্লাবের পর ওই রাতেই ঢাকার আরও তিনটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাব।

বুধবার রাতেই গুলিস্তানে পীর ইয়েমেনি মার্কেটসংলগ্ন একটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাব। স্থানীয় কয়েকজন জানান, এ ক্যাসিনোর নেতৃত্বে আছেন ইসমাইল হোসেন সম্রাট।

খালেদ মাহমুদের সন্ধানে বুধবার দুপুরের পর থেকে তার গুলশান-২ এর ৫৯ নম্বর রোডের ৫নং বাসা ঘিরে রাখে র্যাব। প্রিমোরোজ গার্ডেন নামে ৬ তলাবিশিষ্ট এ ভবনের তিনতলায় পরিবার নিয়ে থাকেন যুবলীগ নেতা খালেদ।

বাড়ির ব্যবস্থাপক জানান, প্রথমে ডিবি পরিচয়ে একদল লোক বাসায় আসে। এর পর আসে র‌্যাব। রাতে এখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় বাসার লকার ও দেয়াল আলমিরা থেকে অবৈধ অস্ত্র, ইয়াবা, টাকা, ডলার উদ্ধার করা হয়।

ইয়াংম্যানস ক্লাবের অভিযানের সময় জুয়ার আধুনিক বোর্ড, ক্যাশ টাকার বিকল্প প্লাস্টিক কয়েন, কার্ড, জুয়া খেলার ইলেকট্রনিক মেশিনসহ বেশ কয়েকটি কাউন্টার দেখেন র্যাব সদস্যরা। বোর্ডগুলো পরিচালনার সঙ্গে জড়িত দুই নারীকে এখান থেকে গ্রেফতার করা হয়।

বিভিন্ন বারে যে ধরনের বিদেশি মদ পাওয়া যায়, এ ক্যাসিনো থেকেও একই ধরনের মদ উদ্ধার করা হয়েছে। জুয়ার বোর্ডের পাশেই মদের অনেক বোতল দেখা গেছে। যারা মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে নিয়মিত জুয়া খেলতে আসেন, তাদের শুরুতে মদ দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

পরে তাদের কাছে মদ বিক্রিও করা হয়। স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছু দিন ধরে এখানে এসব চলছে। সকাল থেকে শুরু হয়ে পর দিন ভোর পর্যন্ত চলে। মাঝে কয়েক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে সকাল ১০টা থেকে ফের বসে জুয়ার আসর। বুধবারও অন্যদিনের মতো সকাল থেকে চালু হয় জুয়ার বোর্ডগুলো।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ক্লাবটি একসময় ফুটবল খেলার জন্য বিখ্যাত ছিল। খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নানা ধরনের অপকর্ম শুরু হয়। বসে জুয়ার আসর। তরুণ-তরুণীদের আনাগোনা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। জুয়ায় সর্বস্বান্ত হয়ে অনেককে হাহাকার করতে দেখা গেছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা