• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

সুন্দরবনে পোনা শিকার মৌসুমে অবৈধ লেনদেন হবে কোটি কোটি টাকা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০১৯  

সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় অবৈধভাবে পারশে মাছের পোনা আহরণের জন্য প্রবেশ করতে শুরু করেছে জেলেরা। নিষিদ্ধ এলাকায় প্রতিটি ট্রলার ঢোকার অলিখিত অনুমতির জন্য আগাম টাকা নিয়ে বিশেষ সাংকেতিক চিহ্ন দেওয়া টোকেন দিয়েছে ‘বন কল্যান সমিতি’র এক নেতা। এছাড়া প্রতিবার পোনা নিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করলে ট্রলার প্রতি দিতে হবে আরও দশ হাজার টাকা। 

এভাবে পারশের পোণা আহরণ মৌসুমে সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার দপ্তর থেকে শুরু করে স্থানীয় ফরেষ্ট স্টেশন, টহলফাড়ি, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের কাছে জেলেদের মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন হবে। প্রতি বছর এ অবৈধ কাজের জন্য ‘বন কল্যান সমিতি’র এক নেতা ও সুন্দরবনের ‘বড় ভাই’ খ্যাত কয়রা উপজেলার বাসিন্দা সুন্দরবন সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির (সিএমসি) পদধারী এক নেতার হাত দিয়েই মূলত এ টাকার ভাগ-বাটোয়ারা হয়।

জেলেদের সূত্রে জানা যায়, অবৈধ পোনা আহরণকারি জেলেদের নেতা খুলনার কয়রা উপজেলার আজিজুল ওরফে ছাতি আজিজুল ইতোমধ্যে একাধিক দ্রুতগামী ট্রলার নিয়ে নিষিদ্ধ বন অঞ্চলে প্রবেশ করে পোনা আহরণ শুরু করেছে। তার ইঙ্গিত পেলেই সুন্দরবনে নেমে পড়বে আরও তিন হাজারের মত অবৈধ পোনা শিকারি। 

সূত্রমতে, সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় জনপদ কয়রা, শ্যামনগর, আশাশুনি, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলার কয়েক হাজার পারশে পোনা আহরণকারী জেলে কয়েক বছর ধরে নতুন এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। অল্প পরিশ্রম এবং কম পুঁজিতে অধিক টাকা উপার্জন হওয়ায় উপকূলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শ্রমজীবী অবৈধ ওই কাজকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। জেলেদের ২০-২৫ জনের প্রতিটি বহরে (দলে) রয়েছে দুটি দ্রুতগামী ট্রলার, তিন-চার সেট ক্ষুদ্র ফাঁসের জাল (নেট জাল) এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জামাদি। পোনা আহরণকারীদের সঙ্গে সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে সাদামাছ পরিবহনের জন্য বন অভ্যন্তরে ট্রলার প্রবেশের অনুমতি নিয়ে আসছে তারা। ওই অনুমতিপত্র নিয়ে স্থানীয় ফরেস্ট স্টেশন থেকে সাদা মাছ ও কাকড়া ধরার পাশ-পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশ করে। টানা চার মাস অবৈধভাবে চলবে গহীন সুন্দরবনে পারশে মাছের পোনা আহরণ।

জানতে চাইলে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন বলেন, সাদামাছ ধরার বৈধ পাস পারমিট নিয়ে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে পোনা নিধন করা হচ্ছে কিনা তা আমার জানা নেই। যদি এ ধরনের কোনো অপতৎপরতা লক্ষ করা যায় তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া অবৈধ কাজের সঙ্গে বনবিভাগের কারো কোনো সম্পৃক্ততা থাকলে তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা