• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

সিটি নির্বাচন: বিএনপির কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপের রহস্য উন্মোচন!

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২০  

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ চোখে পড়ার মতো। বিএনপি মনোনীত দুই মেয়রপ্রার্থীর দফায় দফায় গোপন বৈঠক ভোটারদের মাঝে একটি কৌতূহল তৈরি করছিলো। যদিও স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে কূটনৈতিকদের এমন আগ্রহ নজিরবিহীন এবং অযাচিত বলে মত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল। এমন প্রেক্ষাপটে জানা গেল, হঠাৎ করেই স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে কূটনৈতিকদের এমন আগ্রহের কারণ।

এরইমধ্যে কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক নিয়ে নানান প্রশ্ন ঘুরছিলো রাজনৈতিক মহলে। কেউ বলছিলেন, হয়তো বিএনপির কিছু নেতাকর্মী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রভাবশালী দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন? আবার কেউ বলছিলেন, ড. কামাল হোসেন এই কূটনীতিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য উৎসাহিত করেছেন।

অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্তত ৫টি প্রভাবশালী দেশে যে সমস্ত বাঙালি কর্মকর্তারা কাজ করেন, তাদের বড় একটি অংশ আগে জামায়াত-শিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এক পর্যায়ে তারা রাজনীতি থেকে সরে দূতাবাসগুলোতে চাকরি নিয়েছেন। নিয়মানুযায়ী, প্রতিটি দূতাবাসেই ডিপ্লোম্যাটদের বাইরে ওই দেশের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারিকে নেওয়া হয়। সেই ধারাবাহিকতায় দূতাবাসগুলোতে বাঙালিরা কাজ করে যাচ্ছেন। এ সমস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গনের যোগাযোগ রয়েছে। তাই রাজনৈতিক বিষয়গুলোকে বিশ্লেষণ করতে পারেন, রাজনৈতিক গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে জানেন। এ কারণে দেশের বাহিরের লোকদেরও দূতাবাসগুলোতে চাকরি দেওয়া হয়।

এছাড়া মার্কিন দূতাবাসে ‘সিনিয়র পলিটিক্যাল অ্যানালিস্ট’ বলে একটি পদ রয়েছে, যেখানে বাঙালিদের নিয়োগ দেওয়া হয়, যারা রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডিপ্লোম্যাটদেরদের পরামর্শ দেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে সার্বক্ষণিক বিষয়গুলো নজরে আনেন।

অনুসন্ধান বলছে, মার্কিন দূতাবাসে সিনিয়র পলিটিক্যাল অ্যানালিস্ট পদে একজন বাঙালি কর্মকর্তা চাকরি করেন। যিনি একসময় ইসলামী ছাত্রশিবির করতেন এবং একাত্তরের ঘাতক মওলানা মান্নানের মালিকানাধীন পত্রিকাতে কাজ করতেন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপি এবং জামায়াতের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে তার। বর্তমানে তিনি মার্কিন ডিপ্লোম্যাটদের জামাত এবং বিএনপির পক্ষে সহানুভূতিশীল করতে, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন দিক নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করছেন।

শুধু মার্কিন দূতাবাসে নয় আরও একজন অ্যানালিস্ট রয়েছেন যিনি ব্রিটিশ হাইকমিশনে রয়েছেন। স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তিনি বিএনপির হয়ে ব্রিটিশ দূতাবাসেও সরকারবিরোধী প্ররোচনা চালাচ্ছেন। তাদের জন্য দূতাবাসে হাইকমিশনারেরা ভুলবার্তা পাচ্ছেন। সরকার সম্পর্কে বিভিন্ন নেতিবাচক বার্তা ও জনগণের মনোভাব সম্পর্কে বিএনপি-জামায়াতের প্রেসক্রিপশনে তাদের তথ্য উপাত্ত দেওয়া হচ্ছে।

কানাডা দূতাবাসেও একজন বাঙালি কর্মকর্তা কাজ করেন। সেখানে তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে রয়েছেন। তিনিও একসময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনিও দূতাবাসে সরকারের বিষয়ে ভুল বার্তা দিতেন। সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ক্ষেত্রে ডিপ্লোম্যাটদের প্ররোচিত করতেন তিনি। এসব তথ্য-উপাত্তগুলোর ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচনে বিএনপির বি-টিম হিসেবে কাজ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হন কূটনৈতিকরা!

এমন বাস্তবতায় কূটনৈতিক মহল মনে করেন, যে দূতাবাসগুলোতে দেশিয় কর্মকর্তা দেওয়া হয়েছে তাদের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। যারা নিয়োগ পাচ্ছেন তাদের রাজনৈতিক পরিচয় অনুসন্ধান করা জরুরি বলে মনে করেন কূটনৈতিক মহল।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা