‘সরকার কারিগরিকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছে’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সরকার কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছে। আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে অবস্থান করছি। এর আগের তিনটি শিল্প বিপ্লবে আমরা কোনো সুযোগ নিতে পারেনি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চাই। 

তিনি বলেন,  চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে দেশ ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজার দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে পরিবর্তিত শ্রমবাজারে চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তি ও দক্ষতার সমন্বয় ঘটিয়ে আমাদের বিপুল জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।

‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস-২০২০’ উপলক্ষে আয়োজিত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত এক অনলাইন আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘skills for resilient youth.’

ডা. দীপু মনি বলেছেন, বর্তমানে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে পরিমাণ শিক্ষার্থী অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করছে, চাকরির বাজারে সেই পরিমাণ ডিগ্রির চাহিদা রয়েছে কি-না তা ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। যারা বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করছেন তাদের অনেকেই চাহিদা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছেন না। কোনো ধরনের টেকনিক্যাল শিক্ষা না জানায় তারা বেকার থেকে যাচ্ছেন। সরকার আর এই রকমের শিক্ষিত বেকার তৈরি করতে চায় না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দক্ষ মানব সম্পদের চেয়ে কোনো সম্পদই বড় নয়। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করতে যুব সমাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাসহ শিল্পের সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হবে। দেশ ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে শ্রমবাজারের পূর্বাভাস দেয়া, কারিকুলাম যুগোপযোগীকরণ, প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন, ইন্ডাস্ট্রি স্কিল কাউন্সিল গঠনসহ ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন করা হয়েছে। ফলে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭ শতাংশ, ২০০৯ সালে যা ছিল মাত্র এক শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে অনলাইন আলোচনায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিসহ সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা অংশ নেন। 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- এসডিজি মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মইনুল সালেহীন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব আকতার হোসেন, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের বাংলাদেশ প্রতিনিধি মনমোহন প্রকাশ, আইএলও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি টওমো পুটিয়ানান, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান হাসিবুল আলম।