• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

মৃত্যু অনিবার্য সত্য : সুন্দর মৃত্যু পেতে যা করবেন

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০১৮  


মৃত্যু অনিবার্য সত্য। অমোঘ-অপরিবর্তনীয় এ বিধান থেকে কেউ রেহাই পায় না। মানুষের কর্ম ও আমল হিসেবে মৃত্যু বিভিন্ন রকমের হয়। কারো হয় সুন্দর ও সুখানন্দে। কারো হয় নিদারুণ খারাপ ও কুৎসিতভাবে। মৃত্যু কীভাবে সুন্দর হবে, এর জন্য কিছু করণীয় রয়েছে। 
কর্তব্য ও করণীয়গুলো সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো
ইবাদতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। কোনো পাপকর্মে জড়িয়ে পড়লে দ্রুত তাওবা করা। আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম পন্থায় মৃত্যুর জন্য দোয়া করা। প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে আমলের সঙ্গে লেগে থাকা। দ্বীনের ওপর দৃঢ় ও অবিচল থাকা। আল্লাহর সম্পর্কে ভালো ধারণা পোষণ করা। তাকওয়া ও খোদাভীতি অর্জন করা। বেশি বেশি তাওবা, ইস্তেগফার ইত্যাদি করা। বেশি বেশি মৃত্যুর চিন্তা করা এবং দীর্ঘ জীবনের আশা পরিত্যাগ করা। অপমৃত্যু থেকে আল্লাহর কাছে পরিত্রাণ চাওয়া।
জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলোই একজন মানুষের পার্থিব জীবনের মূলধন। যদি তা আখিরাতের কল্যাণের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয়, তবে তা সফলতায় ভরপুর হয়। আর যদি গুনাহ ও পাপাচারে তা বিনষ্ট করা হয়, আর এ অবস্থায় মৃত্যু হয়, তাহলে এটা সবচেয়ে ভয়ানক ও হতাশার কথা। 
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘ঈমানদার ব্যক্তি গুনাহকে এমন মনে করেন, যেন তিনি কোনো পাহাড়ের নিচে বসে আছেন। আর যেকোনো মুহূর্তে পাহাড়টি তার ওপর ধসে পড়তে পারে।’ (বুখারি, হাদিস নং: ১১/৮৯)
অনেক মানুষ লাগামহীন পাপাচারে লিপ্ত থাকে। সময় ফুরিয়ে এলে হয়তো তার অপমৃত্যু ঘটে। তাই সব সময় সতর্ক থাকা উচিত। যেন পাপ ও অপকর্মের কারণে পার্থিব ও পরলৌকিক জীবন বরবাদ না হয়ে যায়। তাই সব সময় পাপাচার ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাই সর্বাধিক শ্রেয়।
যখন মৃত্যু নিকটবর্তী হয় এবং কারো তা অনুভূত হয়, তাহলে তখন অধিক পরিমাণে আল্লাহর রহমতের আশা করা ও তার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রবল আগ্রহ থাকা উচিত। কারণ, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী হয়, আল্লাহও তার সাক্ষাতে আগ্রহী হন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকে যেন কেবল এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যে, সে আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করেন। ’ (মুসলিম, হাদিস নং: ২৮৭৭)
বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করলে দুনিয়ার মোহ-মায়া কেটে যায়। আখিরাতের চিন্তা বৃদ্ধি পায়। ফলে তা বান্দার মনে অধিক হারে নেক আমলের প্রেরণা সৃষ্টি করে। ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় অবৈধ ভোগ-বিলাস থেকে দূরে রাখে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘সব ভোগ-উপভোগ বিনাশকারী মৃত্যুকে তোমরা বেশি বেশি স্মরণ করো। (তিরমিজি, হাদিস নং: ২৪০৯)
কবর মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয়, তার পরিণামের কথা। মৃত্যুর পর আপনজনরাই তো কবর খনন করেন। মৃতকে অন্ধকার ঘরে শায়িত করেন। মাটির নিচে রেখে ফিরে আসেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা কবর জিয়ারত করো। কারণ তা মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (মুসলিম, হাদিস নং: ৯৭৬)
নেককার বা সৎলোকদের সংস্পর্শ হৃদয়ে ঈমানি-চেতনা জাগ্রত করে এবং সৎকাজের স্পৃহা ও প্রেরণা বৃদ্ধি করে। কারণ নেককার ব্যক্তিদের ইবাদত-মগ্নতা, পুণ্যের কাজে উদ্যম ও প্রতিযোগিতা যখন অন্য মানুষ প্রত্যক্ষ করে, তখন তাদের মধ্যেও পুণ্যের পথে চলার সাহস ও প্রেরণা জেগে ওঠে। অনুরূপভাবে মানুষ যখন তাদের আল্লাহমুখিতা ও দুনিয়াবিমুখতা দেখে, তখন তাদের মনেও এই বৈশিষ্ট্য অর্জনের আগ্রহ জন্ম নেয়।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা