• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর, করপোরেট কর কমছে

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২০ মে ২০২১  

করোনাভাইরাস মহামারিরমধ্যে অর্থনীতিকে চাঙা করতে ‘ব্যবসা সহায়ক’ বাজেট করতে চায় সরকার। এ জন্য আগামী বাজেটে করপোরেট কর হার আরও কমানো হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এটা তাদের জন্য সুখবর। কারণ, প্রতিবেশীসহ অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করপোরেট কর হার বেশি। এ কারণে ব্যবসায় খরচ বেশি হচ্ছে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, করপোরেট কর কমানো হলে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের উৎপাদন খরচ কমবে এবং তারা পুনরায় বিনিয়োগ করতে উৎসাহী হবেন।

এ বিষয়ে সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের সাবেক ঊর্ধ্বতন পরিচালক ও বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত নিউজবাংলাকে বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করপোরেট কর হার তুলনামূলক বশি। এই কর কমলে বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে।

ঢাকা চেম্বারে সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘অনেকদিন ধরে বলা হচ্ছে করপোরেট করহার কমানোর জন্য। আমরা একটি বিনিয়োগবান্ধব কর নীতি চাই। করপোরেট কর কমানো হলে বিনিয়োগ এবং প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়বে।

করপোরেট কর মানে, প্রতিষ্ঠান বছর শেষে মুনাফার ওপর যে কর দেয় সেটা। বাংলাদেশে বর্তমানে পাঁচটি স্তরে করপোরেট কর আদায় করা হয়। সবোর্চ্চ কর হার ৪৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ২৫ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রণালয় ও এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী বাজেটে দুটি স্তরে করপোরেট কর হার কমছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে নন-লিস্টটেড কোম্পানি যা শেয়ার বাজারের অন্তর্ভুক্ত নয়। অপরটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি।

নন-লিস্টটেড কোম্পানির করপোরেট কর হার বর্তমানে সাড়ে ৩২ শতাংশ। আসন্ন বাজেটে এই হার কমিয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হচ্ছে।

অপরদিকে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার বর্তমানে সাড়ে ২৫ শতাংশ। নতুন বাজেটে তা কমিয়ে করা হচ্ছে সাড়ে ২২ শতাংশ।

অর্থাৎ উভয়ক্ষেত্রে করপোরেট কর হার আড়াই শতাংশ কমানো হচ্ছে নতুন বাজেটে।

এনবিআরের নীতি নির্ধারক পযায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে করোনাকালীন বিপযস্ত অর্থনীতিকে চাঙা করা। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে আগামীতে বিনিয়োগ-বান্ধব বাজেটে করা হচ্ছে।

১৯৮৪ সালের আয়কর আইনে করদাতা দুই ধরনের। ব্যক্তি শ্রেণি করদাতা এবং কোম্পানি করদাতা। সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশে ব্যক্তি শ্রেণির চেয়ে কোম্পানি করদাতা কম হলেও এ খাত থেকেই কর বেশি আদায় হয়।

মোট করদাতার মাত্র ২ শতাংশ কোম্পানি করদাতা। এদের থেকে মোট আয়কর আদায় হয় ৬৫ শতাংশ। বাকি ৩৫ শতাংশ ব্যক্তি শ্রেণি, উৎসে করসহ অন্যান্য খাত থেকে আদায় করা হয়।

রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির হিসাবে, দেশে দেড় লাখের বেশি কোম্পানি থাকলেও নিয়মিত কর দিচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র ৩৫ হাজার।

এখন পর্যন্ত একক খাত হিসেবে ব্যাংক থেকে সবচেয়ে বেশি করপোরেট কর আদায় হয়।

দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তাসহ অর্থনীতিবিদরা দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন বাংলাদেশে করপোরেট কর হার অনেক বেশি। তাদের যুক্তি কর হার কমালে কোম্পানির মুনাফা বেশি থাকবে। ফলে মুনাফার কিছু অংশ পুনরায় বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।‍

বিনিয়োগ বাড়লে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এতে জিডিপির প্রবৃদ্ধির গতি বাড়বে।

বর্তমান সরকার তাদের যুক্তি গ্রহণ করেছে এবং প্রতি বছর বাজেটে করপোরেট কর হার ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনছে।

ভারতসহ পৃথিবীর অনেক দেশে করপোরেট কর হার কম এবং কর কাঠামো সহজ।

ভারতে করপোরেট কর হার দুটি। বড় কোম্পানির জন্য ৩০ শতাংশ এবং স্থানীয় কোম্পানির ক্ষেত্রে ২৬ শতাংশ। শ্রীলংকা ও পাকিস্তানে করপোরেট কর হার যথাক্রমে ২৮ ও ৩০ শতাংশ।

সিঙ্গাপুরে একটিমাত্র করপোরেট কর হার এবং তা মাত্র ১৩ শতাংশ।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা