• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

বুড়িগঙ্গার তীরের ২৭ প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৯  

রাজধানীর সদরঘাট থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরের উত্তর পাড়ে গড়ে ওঠা ২৭টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতি এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার (১৭ নভেম্বর) এ আদেশ দেন। এছাড়াও যেসব কারখানায় ইটিপি (ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) নাই তাদের কারণ দর্শানোর সুযোগ দিয়ে অনূর্ধ্ব ৩ মাসের মধ্যে সেসব কারখানা বন্ধ করার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ওয়াসার পক্ষ থেকে লিখিতভাবে হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার কোনো সুয়ারেজ লাইন নেই। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পৃথক এক প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, ওয়াসার অনেক সুয়ারেজ লাইন রয়েছে। এ অবস্থায় ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে শোকজ করেছেন হাইকোর্ট। তাকে ১৫ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বিআইডব্লিউটিএ-এর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সৈয়দ মফিজুর রহমান। ওয়াসার পক্ষে লিখিত জবাব দাখিল করেন ব্যারিস্টার এ এম মাছুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহিয়া দুলাল।

পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘ওয়াসার এমডি যে আদালতে হলফনামা দাখিল করেছেন সেখানে তিনি বলেছেন, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার কোনো পয়ঃপ্রণালী লাইন নাই। আর বিআইডব্লিটিএ-এর প্রতিবেদনে বলা হলো, তারা অনেকগুলো পয়ঃপ্রণালীর লাইন পেয়েছে। তার মধ্যে ওয়াসার লাইনও আছে বেশ কিছু। তাই ওয়াসার এমডিকে শোকজ করেছেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’ যে ২৭টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- মেডিকেয়ার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতাল ও রিভারসাইট হাসপাতাল লিমিটেড, চাঁদনি টেক্সটাইল মিলস, কদমতলী ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, টিপিআই টেক্সটাইল প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি, নূরানী টেক্সটাইল মিলস, এ মজিদ অ্যান্ড সন্স ডাইং, খাদিজা টেক্সটাইল প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিন্টিং, অগ্রণী ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সুবর্ণা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, মাসুদ টেক্সটাইল, সোনিয়া ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, জেদ্দা ডাইং, সেবা টেক্সটাইল প্রসেসিং লিমিটেড, মলিনা টেক্সটাইল লিমিটেড, শামস ডাইং, এম জে ডাইং, রাফসান ডাইং, আজিজ মেটাল, আলিফ মেটাল, এনএক্স করপোরেশন, অগ্রণী মল্ডিং, মতলব আয়রন, পারফেক্ট ওয়্যার, এসএস ইলেক্ট্রপ্লেটিং ওয়ার্কস, খান রেডিমিক্স ও মোহাম্মদীয়া পাইপ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরানীগঞ্জ, কামরাঙ্গিরচর, জিনজিরা, সদরঘাট, ওয়াইজঘাট, বাদামতলী, বাবুবাজার, মিটফোর্ড, শামপুর, কদমতলী, ফতুল্লা, ধালাইখাল, মিলব্যারাক, ফরিদাবাদ, লালবাগের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার সুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে দূষিত বর্জ্য বুড়িগঙ্গায় ফেলা হচ্ছে।

বুড়িগঙ্গার পানি দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ওই রিট করা হয়েছিলো। সে রিটের শুনানি শেষে তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১১ সালের ১ জুন রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের শুরুতে এ রায় নিয়ে এইচআরপিবি একটি সম্পূরক আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জনস্বার্থে করা এক রিট মামলায় পরিপ্রেক্ষিতে বুড়িগঙ্গার পানি দূষণ রোধে ২০১১ সালে আদালত অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিলেন। বুড়িগঙ্গার ভেতরে যে সমস্ত সুয়ারেজ লাইন আছে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইন আছে সেগুলো ছয় মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশের পাশাপাশি বুড়িগঙ্গার তীরে যাতে ময়লা আবর্জনা ফেলতে না পারে সে জন্যে সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করার জন্য বলা হয়েছিল রায়ে। তিনি আরও জানান, কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এই নির্দেশনাগুলো পুরোপুরি পালন না করায় এ সম্পূরক আবেদন করা হয়েছিলো।

সেই আবেদনের ধারাবাহিকতবায় রোববার ওই আদেশ দেন আদালত। আদালতে পরবর্তী আদেশের জন্য ২ ডিসেম্বর দিন রেখেছেন

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা