• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ কর কমিশনারের ছেলে শিঞ্জন কারাগারে

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০১৯  

নগরীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএল(অনার্স) পড়ুয়া এক ছাত্রীকে (২০) বিয়ের প্রলোভন দেয়ে ধর্ষণের অযোগে সহপাঠী শিঞ্জন রায়কে (২৫) কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। এর আগে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ধর্ষণের মামলায় একই সাথে তাকে এ ধর্ষণের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানী আগামী ১৮ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার খুলনার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাহীদুল ইসলাম এ আদেশ দিয়েছেন। এদিকে শিঞ্জন রায়ের বৌ-ভাত অনুষ্ঠান গতকাল শুক্রবার দুপুরে খুলনার একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু ওই বৌ-ভাত অনুষ্ঠান চলাকালীন সময় বর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার হাজত খানায় ছিলেন। পরে বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। শিঞ্জন রায় খুলনার কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়ের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানান গেছে, নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী (২০)’র সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক বছর ধরে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে শিঞ্জন রায় (২৫)। ওই ছাত্রী যে ভাড়া বাসায় থাকতো সেখানেসহ বিভিন্ন বন্ধু বান্ধবের বাসায় নিয়েও শিঞ্জন তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করতো। এরপর ওই ছাত্রী চলতি বছরের ফেব্র“য়ারিতে গর্ভবতী হয়ে পড়েন। শিঞ্জন তাকে বিয়ে করবেন বলে নানাভাবে আশ্বস্তও করেছিলেন।
এদিকে কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায় তার ছেলে শিঞ্জনকে গত ১৪ আগস্ট অন্যত্র বিয়ে দেন। গতকাল শুক্রবার পূর্ব নির্ধারিত বৌ-ভাত অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারিত ছিলো। এ খবর ওই ছাত্রীর কানে জানতে পেরে সে শিঞ্জনের খোঁজে গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মুজগুন্নী আবাসিকের ১৬ নম্বর রোডে যান। সেখানে গিয়ে শিঞ্জন রায়ের দেখা পায়। এ সময় তার বিয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে সে তাকে সেখান থেকে ইজিবাইকে জোর করে তুলে দিতে গেলে স্থানীয়দের নজরে আসে। এরপর বিষয়টি থানা পুলিশের কাছে খবর গেলে তারা দু’জনকেই সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় নিয়ে আসে।  থানায় আনার পর বেরিয়ে আসতে থাকে শিঞ্জন রায়ের এই কু-কর্ম। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় কর কমিশনারসহ প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত হয়ে ব্যাপক তদবির শুরু করে। এক পর্যায়ে কেএমপির উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এহসান শাহ, এডিসি এম এম শাকিলুজ্জামান, সোনাডাঙ্গা জোনের এসি মোঃ আবুল খায়ের, ওসি মোঃ মততাজুল হক উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ওই ছাত্রীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে হস্তান্তর করেন। এরপর রাত ৩টার দিকে তার শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই ছাত্রী ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) তে ভর্তি করা হয়। 
ভিকটিমকে নিরাপদে চিকিৎসাধীন রাখার স্থান ওসিসিতে সরেজমিন গতকাল শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, ওই ছাত্রী ও তার মায়ের সাথে পুলিশ কর্মকর্তারা কথা বলছেন। ওসিসির ভেতরেই তখন অবস্থান করছেন কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়। এছাড়া তার কিছু অনুসারিরা ওই ছাত্রী ও তার মাকে নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি ওসিসিতে কর্তব্যরতদের নজরে আসলে তাদেরকে সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়। 
এদিকে দিনব্যাপী নানা জল্পনা কল্পনার পর গতকাল শুক্রবার দুপুরে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় ওই ছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে শিঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন (নং-২০)।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা