• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

বিশ্বে পথিকৃত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের: সোনালী চাল

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০১৯  

 

 

 

বর্তমান শতাব্দীর বিস্ময় আবিষ্কার হিসেবে খ্যাত বিটা ক্যারোটিন বা প্রো-ভিটামিনে সমৃদ্ধ গোল্ডেন রাইস (সোনালী চাল) চাষের পথিকৃত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই চালের পরীক্ষামূলক চাষ করেছে বাংলাদেশসহ তিনটি দেশ। কিন্তু প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক চাষ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ।

১৯৮২ সালে নিউ ইয়র্কের রকফেলার ফাউন্ডেশন প্রথম এই বিশেষ চাল সম্পর্কে বিশ্বকে জানায়।  এরপর ১৯৯০ সালে পিটার এম ব্রামলে নামে একজন ব্রিটিশ বায়োকেমিস্ট এই ধানের জিন আবিষ্কার করেন।  ২০০০ সালে সায়েন্স ম্যাগাজিন এই ধানের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ও বিস্তারিত প্রকাশ করে।  

সুইজারল্যান্ডের ‘সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ইগো পোট্রাইকুস’ এবং জার্মানির ফ্রাবার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পেটার বেইয়ার নেতৃত্বে একদল গবেষক সর্বপ্রথম বিস্তারিতভাবে এই সোনালী ধানের সাথে বিশ্ববাসীকে বিস্তারিত পরিচয় করিয়ে দেন।  বিজ্ঞান সাময়িকীর সেই নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, বিটা-ক্যারোটিন তৈরির পরিক্রমা জিন প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ধানের এন্ডোস্পার্মে প্রবেশ করানো হয়।  আর এই বিটা ক্যারোটিন থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন এ।

সাধারণ ধানের সাথে সোনালী ধানের তুলনামূলক চিত্র

 

জানা গেছে, ব্ল্যাক-হোয়াইট ধানসহ আরো কয়েকটি জাতের ধান নিয়েও সরকার কাজ করছে।  আশা করা হচ্ছে আগামী দু-এক বছরের মধ্যে নতুন আরো কয়েকটি ধান অবমুক্ত করতে পারবে সরকার।  তবে সোনালী ধানের অবমুক্তি এবং বাণিজ্যিক চাষের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিশ্বে পথিকৃৎ হতে যাচ্ছে।  কারণ বিশ্বে বিস্ময় সৃষ্টি করলেও এখনো কোনো দেশ এই ধান চাষের ক্ষেত্রে সাহস দেখাতে পারেনি।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অতিরিক্ত সচিব) কমলারঞ্জন দাশ বলেন, এই ধানের স্বাস্থ্যগত ও পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের পর পাইলট প্রকল্প আকারে এটি চাষ করা হবে।  আমাদের দেশের জন্য এটি কতটা উপযোগী এবং কতটা লাভজনক মূল্যায়ন করা হবে। এরপর এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষের ঘোষণা আসতে পারে সরকারের পক্ষ থেকে।

২০২১ সালের স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী পালন করবে বাংলাদেশ।  সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে বিতরণ করা হতে পারে এই বিশেষ ভিটামিন সমৃদ্ধ সোনালী ধান।

পরীক্ষামূলক চাষে প্রাপ্ত সোনালী ধানের চিত্র

 

এ বিষয়ে কমলারঞ্জন দাশ বলেন, আমরা আশা করছি আগামী বছরের মধ্যেই সোনালী ধান নিয়ে সরকারের নানা পরীক্ষা-নিরিক্ষা সম্পন্ন হয়ে যাবে।  সেক্ষেত্রে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে এই বিশেষ ধান বিতরণের ঘোষণা আসতে পারে।

২০০১ সালে সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান সুইস এগ্রিকালচার বায়োটেক সিনজেন্টার বিজ্ঞানী ও গোল্ডেন রাইস হিউমানটেরিয়ান বোর্ডের সচিব আড্রিয়ান ডুবক ২৩টি চুক্তি এবং ১৬টি লাইসেন্স করেন গোল্ডেন রাইসের বিষয়ে।  এরপর তিনি ঘোষণা দেন, এই সোনালী চালের বীজ উন্নয়নশীল দেশের কৃষকদের কাছে বিনামূল্যে সরবরাহ করবেন।

২০০৪ সালের ১৪ জানুয়ারি সোনালি ধানের প্রথম ট্রায়াল চাষ করে লুইসিয়ানা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি কেন্দ্র।  এরপর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই ধান ও চাল সম্পর্কে  আগ্রহ দেখায়।  কিন্তু বাণিজ্যিক চাষে কেউ এগিয়ে আসেনি।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা