• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

‘বিশ্ব ভালবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালবাসুন’

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

সুন্দরবন আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটি এখন বিশ্বঐতিহ্য। জগদ্বিখ্যাত এ প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকারী হওয়াতে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে আগলে রেখেছে সুন্দরবন। অনেকটা মায়ের কোলে একটি শিশু যেমন পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকে তেমনি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এক বিরাট এলাকা সুন্দরবনকে অবলম্বন করে নিরাপদ রয়েছে। ২০০১ সালে খুলনায় অনুষ্ঠিত হয় ১ম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন। সাফল্য পাওয়া সে সম্মেলন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন সেই সময়ের মহামান্য বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ। ২০০১ সালের সুন্দরবন সম্মেলনের পরের বছর থেকেই খুলনাসহ সুন্দরবন সহিত জেলাগুলােতে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে সুন্দরবন দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। 

বর্তমানে বন বিভাগ ও সুন্দরবন একাডেমীর যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এ উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে-বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উন সংগঠন, খুলনা প্রেসক্লাব, সুন্দরবন সংলগ্ন সাংবাদিক সমাজ এবং প্রকৃতিপ্রেমী আপামর মানুষ। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্বেও এবারও নানান আনুষ্ঠানিকতায় সুন্দরবন দিবস পালন করা হবে। ইতিমধ্যে খুলনার উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরীতে ‘সুন্দরবনকে যেমন দেখতে চাই' শীর্ষক শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযােগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী কাল সকাল ১০টায় সুন্দরবন দিবসের মূল অনুষ্ঠানও উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরীতে অনুষ্ঠিত হবে।

র‌্যালী বের হবে সকাল ৯টায় শহীদ হাদিস পার্ক থেকে। জাতির বিবেক বন্ধুরা, আপনারা জানেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থাও সুন্দরবনের উপর কম-বেশী সম্পৃক্ত এবং পরিবেশগত দিক দিয়ে পুরােপুরি নির্ভরশীল। এ অঞ্চলের মানুষের জীবন প্রবাহের সাথে সুন্দরবন আবর্তিত আবহমান কাল থেকেই।

এ অর্থে সুন্দরবনের ভাল-মন্দ, দুঃখ-বেদনা এ অঞ্চলের মানুষকে নাড়া দেয় প্রচন্ডভাবে। আমাদের সকলের সাথে সুন্দরবনের রয়েছে আত্মিক সম্পর্ক, নিবিড় ঘনিষ্ঠতা। এই সুনিবিড় ঘনিষ্ঠতা এবং আত্মার আত্মীয়তার টানেই সুন্দরবনকে আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন মনে করি। আমরা যারা সুন্দরবন সন্নিহিত এলাকার মানুষ, তাদের বেঁচে থাকার স্বার্থেই সুন্দরবনকে বাচিয়ে রাখতে হবে।  

এ প্রমাণ শুধুই এবারের নয় এটা শতাব্দি থেকে শতাব্দি পর্যন্ত একই ধারায় চলে আসছে। আমরা সুন্দরবনের অনেক ক্ষতি করলেও সুন্দরবন সব সময় শুধুই দিয়ে গেছে বিনিময়ে সে পায়নি কিছুই। আমরা বলতে চাই যারা বুঝে বা না বুঝে সুন্দরবনের ক্ষতিসাধন করে আসছে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এখনই সে সময় সুন্দরবনের ক্ষতিসাধনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তােলার। শুধুমাত্র বন বিভাগের সামান্য লােকবল ও সীমিত সুযােগ-সুবিধা দিয়ে এ ধ্বংসপ্রয়াস রুখে দেয়া সম্ভব হয় না। তাই সুন্দরবন সন্নিহিত এলাকার মানুষেরও সুন্দরবন সংরক্ষণে সমর্থন ও অংশগ্রহণ প্রয়ােজন। সুন্দরবন দিবস পালনের উদ্দেশ্যও তাই। সুপ্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, সুন্দরবনের অনিন্দসুন্দর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সরকার ধারাবাহিকভাবে নানা উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। নানা প্রকল্পের আওতায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে এবং হচ্ছে।

এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য প্রকল্পগুলাে হলাে- • Environmental and livelihood security ( SEALS)। • Sustainable development and biodiversity conservation in coastal protection forest, SDBC- Sundarbans • Climate resilient ecosystem and livelihood CREL • Bengal tiger conservation activity • Smart patrolling in Sundarbans reserved forest

এছাড়াও সুন্দরবনে এখন ভ্রমন নীতিমালা প্রণীত হয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমতাভিত্তিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আইপ্যাক প্রকল্পের মাধ্যমে সহব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরও বেশকিছু উন্নয়ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হচ্ছে। বন্ধুগণ, আমাদের নিজেদের বেঁচে থাকার স্বার্থেই সুন্দরবনকে বাচিয়ে রাখতে হবে। সুন্দরবন বেঁচে থাকলে সুন্দরবনও বাঁচিয়ে রাখবে আমাদের, মায়ের মতই পরম আদরে । সুন্দরবন দিবস ব্যাপকভাবে পালন করা হলে মানুষকে সচেতন করে তােলা সম্ভব হবে। তাই আমরা বিশ্বাস করি আপনাদের এবং আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে সুন্দরবন দিবসের উদ্দেশ্য সফল হবে। ধন্যবাদ সবাইকে। 

 

আনােয়ারুল কাদির নির্বাহী পরিচালক সুন্দরবন একাডেমি মােঃ বশিরুল- আল- মামুন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সুন্দরবন পশ্চিম বন ভািগ, খুলনা ।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা