• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

ফিরে দেখা সরকারের সফলতা : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১ জানুয়ারি ২০২০  

বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। রুপকল্প ২০২১ এবং একশ’ বছরের ডেল্টা প্লানকে সামনে রেখে দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। উন্নয়নের মহান রুপকার, গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তাধারা ও যুগোপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে দেশ থেকে দূর হয়েছে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-বেকারত্ব। শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাসহ দেশের প্রতিটি সেক্টরে হয়েছে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক পরিবেশনা।

পাকিস্তান সরকারের আমলে ১৯৬১ সালে বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ১৯৬২-১৯৬৮ পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার পদ্মা নদী তীরবর্তী রূপপুর-কে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয়। কিন্তু ১৯৬৯-১৯৭০ সালে ২০০ মেগা-ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাতিল করে দেয়। ১৯৭২-১৯৭৫ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২০০ মেগা-ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৯৭-২০০০ সময়ে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া কর্তৃক ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়। ২০০৯ সালের ১৩ মে বংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের স্টেট এটমিক এনার্জি কর্পোরেশন (রোসাটোম)-এর মধ্যে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন রাশিয়া সফরকালে (১৫ জানুয়ারি ২০১৩) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম পর্যায় কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় ২ অক্টোবর ২০১৩। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল পর্যায়ের কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার এবং রাশান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে ২৬ জুলাই ২০১৬ সালে স্টেট ক্রেডিট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩০ নভেম্বর ২০১৭ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নং ইউনিটের প্রথম কংক্রিট ঢালাই উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পথে পা দিয়েছে এবং দেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ ক্লাবে পদার্পণ করেছে। ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রধানমন্ত্রী ইউরি ইভানোভিচ দ্বিতীয় ইউনিটের কংক্রিট ঢালাই কাাজের উদ্বোধন করেন। ২০২৩ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে।

বাংলাদেশের জন্য পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আমাদের দেশে বিদ্যুতের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। দেশের এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকল্প নেই। উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে নতুন পথের সন্ধানে যেতেই হবে আমাদের। আর এ ক্ষেত্রে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোনোই বিকল্প নেই। এশিয়ার বেশির ভাগ জনবহুল দেশ যেমন চীন, ভারত, কোরিয়াসহ আরও অনেক দেশ এর প্রয়োজনীয়তা আগেই টের পেয়েছে এবং পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে ও করছে। আমরাও আর পিছিয়ে নেই। বিদ্যুৎ একটি দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা