• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

প্রয়োজনে মোবাইল ফোনে আইনজীবীর বক্তব্য শোনা হবে : হাইকোর্ট

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২০  

করোনাভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তার স্বার্থে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কাল মঙ্গলবার আইনজীবীদের উপস্থিতি ছাড়াই মামলা সংক্রান্ত আবেদন ও নথি দেখে আদেশ দেবেন। পরীক্ষামূলকভাবে এ কাজ করা হবে জানিয়েছেন আদালত।

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিনউদ্দিন, সমিতির নবনির্বাচিত সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

আদালত বলেছেন, মামলা পরিচালনার জন্য মামলা সংক্রান্ত আবেদন, নথি ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর মোবাইল নম্বর রেখে দেওয়া হবে। আমার নথি দেখবো। প্রয়োজন হলে মোবাইলের মাধ্যমে মামলা সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আদালত কক্ষে জনসমাগম এড়াতে নেওয়া এমন সিদ্ধান্ত। তবে কোনো বিচারপ্রার্থীই যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হন সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। আদালত এ কথাগুলো একাধিকবার উল্লেখ করেন।

সোমবার সাড়ে ১১টার দিকে দুই বিচারপতি এজলাসে বসার পরপরই উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে এ কথা জানান। এ সময় উপস্থিত অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আদালতে বলেন, প্রত্যেকটি মামলায় শুনানির সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও যখন যে মামলার শুনানি তখন সেই আইনজীবী উপস্থিত হবে। এতে ওই সময় অন্য কোনো আইনজীবী থাকার দরকার হবে না। কখন মামলায় শুনানি হবে সেই আশায় আর আইনজীবীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আদালত কক্ষে বসে থাকার প্রয়োজন হবে না। এতে আদালতে ভিড় এড়ানো যাবে। আদালত বলেন, কাল মঙ্গলবার দেখি।

কিছুক্ষণ পর সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন হ্যান্ডগ্লাভ্স, মাস্ক পরে আদালত কক্ষে উপস্থিত হন। এ সময় আদালত তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আপনি তো নিজেকে সুরক্ষিত করে এসেছেন। কিন্তু আমাদের কি হবে? এই দেখুন আদালতে কত আইনজীবী, বিচার প্রার্থী। আদালত কক্ষে ঢোকার সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে না। কোনো ব্যবস্থা নেই। এ কারণে মামলা সংক্রান্ত আবেদন, নথি ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর মোবাইল নম্বর রেখে দেওয়া হবে। আমার নথি দেখবো। প্রয়োজন হলে মোবাইলের মাধ্যমে মামলা সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। এটা পরীক্ষামূলক। জবাবে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, হতে পারে। 

এরও কিছুক্ষণ পর সারা দেশে আদালতে অবকাশকালীন ছুটি এগিয়ে আনা ও বন্দর বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর শুনানির জন্য উপস্থিত হন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তাকে দেখে আদালত একই কথা বলেন।

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এই রুমে এত লোক? যেখানে সকলেই ঘরে বসে থাকছে। নিজে নিজে হোম কোয়ারেন্টিনে যাচ্ছে। সেখানে কেন আইনজীবীরা এভাবে উপস্থিত থাকবেন। কাকর শরীরে ভাইরাস আছে তাতো দেখার সুযোগ নেই। নিজেদের সচেতন হতে হবে। সব কিছুই সরকার করে দেবে সেজন্য বসে থাকা যাবে না, এটা ভাবাও যাবে না। তাই আদালত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা সঠিক হয়েছে।  

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করতে সোমবার দুপুরে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাত করেন সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। সাক্ষাত শেষে বেরিয়ে এএম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, সুপ্রিম কোর্টে বন্ধের বিষয়ে আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের সকল বিচারপতির সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান বিচারপতি।

এর আগে গত ২২ মার্চ প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম পৃথকভাবে সাক্ষাতের পর নিম্ন আদালতে জামিন ও জরুরি বিষয় ছাড়া মামলঅর বিচার কাজ মূলতবি রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এরও আগে গত ১৯ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি প্রিজন ভ্যান বা অন্য কোনোভাবে কারাবন্দি আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির না করতে দেশের সকল অধস্তন আদালতের প্রতি নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আসামিদের কারাগারে রেখেই জামিন শুনানি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা