• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

প্রধানমন্ত্রীর উপহার জমিসহ ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত রীনা পারভীন

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২১  

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘর-সহ জমির দলিল হস্তান্তর করেন খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং অতিথিরা।

'স্বামী-সন্তান নিয়ে কখনো রাস্তায়, কখনো পরের বাড়ির বারান্দায়, কখনো খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে কষ্ট করে ভূমি ও ঘরহারা মানুষ হিসেবে আজ আপনার দেওয়া ঘর পেয়ে আমি অনেক খুশি। আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘ জীবন দান করুন, এ কামনা করি। যেন এমনিভাবে আরও অসহায় মানুষের মাথা গোজার ঠাঁই করে দিতে পারেন।'

ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত ও কান্নাজড়িত কণ্ঠে এক সন্তানের জননী রীনা পারভীন (৩০) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এভাবেই তার অনুভূতি প্রকাশ করেন। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত অন্যরাও রীনার মতো আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

মুক্তিযোদ্ধা অশোক দাস (৬৬) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তার যুদ্ধকালীন স্মৃতি এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এতদিন স্বীকৃতি ও সুযোগ-সুবিধা না পেলেও এতদিন পর মাথা গোজার ঠাঁই পেয়ে ভীষণ খুশি বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান।

তাদের মতো জমি ও ঘর পেয়ে ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর গ্রামের হালিম শেখ (৫৫) ও চাকুন্দিয়া গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ ইনসার আলী হাওলাদার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন। 

শনিবার সকালে ঘর পেয়ে ডুমুরিয়া উপজেলার কাঠালতলা আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তাদের কৃতজ্ঞতা জানান।

মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে সারা দেশে ৬৬ হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের হাতে জমিসহ ঘর তুলে দেন। এরমধ্যে খুলনা বিভাগে ৩ হাজার ২২৫ পরিবার এবং খুলনা জেলার ৯২২ পরিবার পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর এই উপহার।

এই হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের কাঠালপাড়া গ্রামে ১৪০ জন উপকারভোগীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে মতবিনিময় করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণচন্দ্র চন্দ, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন, কেএমপি কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, খুলনা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, খুলনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, এডিসি (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, ডুমুরিয়ার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

ডুমুরিয়া প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল ওয়াদুদ।

খুলনার উপকারভোগী ৯২২টি পরিবারের প্রত্যেককে দুই শতক সরকারি খাস জমি বন্দোবস্তসহ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা একক ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে তেরখাদা উপজেলায় ৪০টি, দিঘলিয়া উপজেলায় ৭০টি, ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৪০টি, ফুলতলা উপজেলায় ৪০টি, রূপসা উপজেলায় ৭২টি, পাইকগাছা উপজেলায় ২২০টি, বটিয়াঘাটা উপজেলায় ১৫০টি, কয়রা উপজেলায় ৫০টি, দাকোপ উপজেলায় ১৪০টি পরিবার জমি ও ঘর পেয়েছেন। ১ লাখ ৭১ হাজার টাকায় ১৯ ফুট ৬ ইঞ্চি লম্বা ও ২৫ ফুট ৪ ইঞ্চি চওড়া নির্মিত ঘরে ২টি শয়ন কক্ষ ১টি রান্নাঘর, ১টি ল্যাট্রিন, ১টি ইউটিলিটিসহ পানি ও বিদ্যুতের সুবিধা রয়েছে।

এই ৯২২ পরিবারের প্রধানদের মধ্যে ৫৭০ জন দিনমজুর, ৩২ জন শ্রমিক, ৩ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ২০১ জন কৃষক, ৫৮ জন গৃহিণী, ৪ জন প্রতিবন্ধী, ২৮ জন ভ্যানচালক, ১২ জন ভিক্ষুক ও অন্যান্য ১৪ জন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা