• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

প্রধানমন্ত্রীকে বিএনপির চিঠি : জানেন না দলের অনেক শীর্ষ নেতাই

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৯  

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়েছেন ১৭ নভেম্বর। এই চিঠিতে ভারতের সঙ্গে চুক্তি জনসম্মুখে প্রকাশের পাশাপাশি সংসদ ও রাষ্ট্রপতির কাছে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। এই চিঠিটি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বিএনপিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিএনপি বলছে যে, হঠাৎ করে ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে এ চিঠি দেওয়া কেনো, তা বিএনপি নেতাদের বোধ্যগম্য নয়। এই চিঠির বিষয় নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কোনো আলোচনাই হয়নি। চিঠির বিষয় জানেন না অনেক শীর্ষ নেতাই।

হঠাৎ করে কোনো ভারতের সঙ্গে চুক্তি জনসম্মুখে প্রকাশ করার বিষয়ে চিঠি দেওয়া হলো তা নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিস্ময় প্রকাশ করেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংসদ সদস্য নন। কাজেই এই বিষয়টি যদি সংসদে উপস্থাপন করা হয়, তাহলে গত ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সংসদ অধিবেশন ছিল। তাহলে কেনো সেই সময় বিএনপির এমপিরা সংসদে বিষয়টি উপস্থাপন করলেন না। সংসদীয় বিষয় নিয়ে কোনো প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিতে হবে? এই চিঠি যদি দেওয়া হয় তাহলে সংসদ নেতাকে চিঠি দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নয়।

বিএনপির আরেকজন নেতা বলেছেন, আমাদের স্থায়ী কমিটিতে সুনিদিষ্ট সিদ্ধান্ত আছে সরকারের সঙ্গে নতুন করে কোনো বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা হবে না। একমাত্র খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয় নিয়েই সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা হতে পারে। সেখানে ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে কোনো আলাপ আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হলো সেটা একটা বিবেচ্য বিষয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য এটা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তীব্র ভর্ৎসনা করে তার সমালোচনা করেছেন।

সূত্রগুলো বলছে, ড. কামাল হোসেন এবং তারেক জিয়ার পরামর্শে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই চিঠি দিতে বাধ্য হয়েছেন। সূত্র বলছে, তারেক জিয়া দীর্ঘদিন থেকেই পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মদদে চলেন। লন্ডনে তাকে নিয়মিত মাসোহারা দেন আইএসআই। তাদের নির্দেশেই তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এই চিঠি দেওয়ার কথা বলেছেন। অন্যদিকে বিএনপির আরেকজন নেতা বলেছেন, এই সময় ভারত বিরোধী অবস্থান দলের জন্য আরো দুর্ভোগ বয়ে নিয়ে আসবে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, তারেক জিয়ার নির্দেশেই এই চিঠিটি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের চিঠির পরিণতি কি হবে তা বিবেচনা না করে এ ধরণের চিঠি দেওয়া হাস্যকর এবং অরাজনৈতিকসূলভ। কারণ বিএনপি যদি সত্যি সত্যি এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চায় তাহলে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হবে। এই সরকারের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে হবে। সেটা না করে এই ধরনের চিঠির মাধ্যমে সরকারকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপিতে এই চিঠি নিয়ে এখন নতুন টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।

বিশেষ করে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো স্থায়ী কমিটিকে আড়াল করে নেওয়া হচ্ছে যেটা বিএনপির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি। বিএনপির নেতারা মনে করছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে যেভাবে তারেক জিয়া চালাচ্ছে এর ফলে বিএনপির পরিণতি আরেকটি মুসলিম লীগের মত হবে। এরকম অরাজনৈতিক ভাবনা বিএনপির দেউলিয়া রাজনীতির এক বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করছেন বিএনপির একাধিক নেতা।
বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, এই বিষয়টি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কথা বলা হবে এবং তার কাছ থেকে এ বিষয়ে কৈফিয়ত চাওয়া হবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা