• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই ২২ লাখ টাকা ভাগ বাটোয়ারা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

খুলনার কয়রা উপজেলায় একটি প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই বরাদ্দের ১১৫ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বিক্রির প্রায় ২২ লাখ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন মকবুল গাজী নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলার বাগালি ইউনিয়নের মালিখালি গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্পের মাটি ভরাটের জন্য ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় ২৩০ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান হলেন, ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য হোসনে আরা খাতুন। গত ২ ফেব্রæয়ারি ১১৫ মেট্রিক টন গম উত্তোলনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে চাহিদাপত্রে (ডিও লেটার) স্বাক্ষর করিয়ে নেন তিনি। পরে ডিও লেটার অনুযায়ি স্থানীয় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার পাঠানো সুপারিশে ২১ ফেব্রæয়ারি খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য গুদাম থেকে ১১৫ মেট্রিক টন গম ট্রলারযোগে ঘুগরাকাটি খাদ্য গুদামের ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু গম গুদামে না নিয়ে একই দিন সরাসরি ট্রলার থেকেই কালোবাজারিদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। পরে কালোবাজারিরা ওই গম ট্রাকে করে অন্যত্র নিয়ে যায়। সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ি বিক্রিকৃত ১১৫ মেট্রিক টন গমের মূল্য প্রায় ২২ লাখ টাকা বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতির সাথে স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যোগ সাজসে ওই টাকা আত্মসাত করার ষড়যন্ত্র করেছেন। তাছাড়া প্রকল্পটি যেখানে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে সেখানে এখন পর্যন্ত চিংড়ি চাষ করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হোসনে আরা খাতুন বলেন, প্রকল্পটি মূলত চেয়ারম্যানের। আমাকে নামমাত্র সভাপতি করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে অন্য সদস্য কারা আমি তা-ও জানিনা। কাজ শুরু না করে গম উত্তোলন করাটা ঠিক হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন প্রসংগে জানতে চাইলে বাগালি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আঃ সাত্তার পাড় বলেন, প্রকল্পটি যেখানে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা সেখানে পানি থাকায় কাজ শুরু করতে পারেনি তারা (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি)। এ কারণে গম বিক্রির টাকা নিজেদের কাছে রেখেছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে দ্রæত কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। 

উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) নূর নবী বলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস থেকে স্বাক্ষরিত ডিও লেটার পেয়েই বরাদ্দ ছাড় করা হয়েছে। তবে সরাসরি ট্রলার থেকে কালোবাজারিদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। 

জানতে চাইলে কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জাফর রানা বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। কাজ শুরুর আগে বরাদ্দ উত্তোলন করে কালোবাজারে বিক্রি প্রসংগে তিনি বলেন, লেবার পেমেন্ট করতে মোট বরাদ্দের এক চতুর্থাংশ অগ্রিম ছাড়ের নিয়ম রয়েছে। 

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ নূর-ই-আলম সিদ্দিকি বলেন, ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কে আমার তেমন কিছু জানা নেই। 
 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা