• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

দাকোপে নোনাপানি তুলে খামারের মাধ্যমে চিংড়ি চাষ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

দাকোপ উপজেলায় নোনাপানি তুলে খামার পদ্ধতির মাধ্যমে চিংড়ি চাষের বেশ সাড়া পেয়েছে। এই পদ্ধতিতে মৎস্য খামারে ব্যবহৃত কেমিক্যাল মিশ্রিত নোনাপানি ফসলি জমিতে ফেলায় ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নোনাপানি তুলে খামার পদ্ধতির মাধ্যমে চিংড়ি চাষ করছেন মাসুম শ্রীম্প হ্যাচারি লিমিটেড নামের একটি বাগদা চাষের খামার। এই হ্যাচারির স্বাত্বাধিকারী শেখ আবুল হোসেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। নোনাপানির ওই হ্যাচারির বর্জ্য ও কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি পাশের খালে ফেলাতেই পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানুয়ারি মাসে ওই হ্যাচারির বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু অভিযোগ হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার আইনীয় ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানা গেছে।

অভিযোগটি দায়ের করেন শ্রীপুর এ্যাগ্রো লিমিটেডের স্বাত্বাধিকারী মূন্সী রাশেদ কামাল। তিনি জানান, খোনা গ্রামে লবণপানি মুক্ত করে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করতে সাদা মাছের পাশাপাশি ফলদবৃক্ষের খামার করেন। কিন্তু খামারের বেড়িবাঁধের পাশ দিয়ে গভীরভাবে পুকুর ও খাল খনন করেছিলেন আবুল হোসেন। অভিযোগের পরে যদিও পুকুর খনন বন্ধ করে পূর্বের মতো জায়গাটি প্রস্তুত রাখে। তবে লবণপানির ওই বাগদা চাষের হ্যাচারির কারণে এলাকার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। নদীর নোনাপানি তুলে চিংড়ি চাষের বিষ্ঠাপানি তাঁর খামারের পাশদিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রায় অর্ধকোটি টাকার ফলদবৃক্ষসহ খামারের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এতে কালচারের প্রায় কোটি টাকার মূল্যবান সম্পদ হুমকির মুখে পড়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

খোনা গ্রামের বাসিন্দা দীনবন্ধু ম-ল (৭০) জানায়, মাসুম শ্রীম্প হ্যাচারির কারণে এলাকায় বসবাস করার মতো পরিবেশ নেই। তিনি আরও জানান একেবারই ওয়াপদার রাস্তা হতে খোনা গ্রামের মোল্লা বাড়ি পর্যন্ত হ্যাচারি নির্মাণ করেন চেয়ারম্যান। ধান চাষ ও গরু পালন করা এখন কষ্টসাধ্য। হ্যাচারির বর্জ্যরে কারণে জমির ফসল বিনষ্টসহ গরু-ছাগল ওই পানি খেয়ে মারা যাচ্ছে।

খোনা গ্রামের মিনতী রায় বলেন, নোনা পানির ওই হ্যাচারির কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি ও বর্জ্য স্থানীয় খালে ফেলার কারণে এলাকার মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বর্জ্যরে কারণে খালের পানি ব্যবহারে অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় গ্রামবাসিরা অভিযোগ করে বলেন, হ্যাচারির মালিক প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় প্রশাসনের উদ্ধর্তন কৃর্তপক্ষের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁরা আরও বলেন, চেয়ারম্যানের বাগদার হ্যাচারির জন্য তাদের চারপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। শুধু এটা নয় লবণপানির হ্যাচারির বিষ্ঠাপানি খেয়ে মারা যাচ্ছে হাঁস-মুরগি। নোনাপানির প্রভাবে বিস্তীর্ণ এলাকার গাছগাছালি নষ্ট হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ মুঠোফোন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে খালে বর্জ্য ও কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি ফেলা বন্ধ করে থাকি। তবে আবার যদি ফেলে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সাইফুর রহমান খান ভোরের ডাককে বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাসুম শ্রীম্প হ্যাচারির মালিককে নোটিশ করা হলে তিনি সময় চেয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, আইনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সকল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সঠিক ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা